
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর সারা দেশে প্রায় অর্ধকোটি ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে। একসময়ের ভূমিহীন ও গৃহহীন এসব পরিবারকে এখন আর অন্যের ঘরে বা ভাসমান অবস্থায় থাকতে হয় না। মাথা গোঁজার নিশ্চিত আপন স্থায়ী ঠিকানা পেয়ে তারা খুশি। সরকারের দেওয়া এই সুবিধা পেয়ে তাদের চোখে-মুখে এখন স্বস্তির হাসি। সামাজিক মর্যাদা পেয়ে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা।
এদিকে সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের গড়ে তোলা হচ্ছে দক্ষ জনশক্তিতে। দেওয়া হচ্ছে ঋণ সহায়তা। অনেকেই এখন স্বনির্ভর। বাড়ির আঙিনায় করছেন শাকসবজির চাষ। কেউ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালন পালন করছেন।
একসময়ের নিঃস্ব, রিক্ত ও অসহায় অর্ধকোটি মানুষের স্থায়ী ঠিকানা নিশ্চিত করেছে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’। দেশের পিছিয়ে পড়া ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসন তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলধারায় আনার লক্ষ্য নিয়ে গৃহীত এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার দৃষ্টি থেকে বাদ পড়েনি ভিক্ষুক, খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানের চালকসহ সাধারণ শ্রমজীবী, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত নারী, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী, কর্মহীন ও অসুস্থ এবং নদী ভাঙনে সব হারানো আর জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষগুলোও। সমাজের অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজড়া), বেদে, দলিত, হরিজন, কৃষক, জেলে, তাঁতি, কামার-কুমার-সবাই রয়েছেন প্রকল্পের সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীর তালিকায়। বিশ্বের সর্ববৃহত এই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ হিসেবে পরিচিত, যার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের গ-ি ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে দুই শতক জমিসহ ঘর দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ঘরে দুটি শয়নকক্ষ, একটি করে বারান্দা, রান্নাঘর ও বাথরুমসহ নানা সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। উপকারভোগীর সংখ্যা ও পুনর্বাসনের পদ্ধতি বিবেচনায় এটি বিশ্বের বৃহত্তম সরকারি পুনর্বাসন কর্মসূচি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৪টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫২০ (এক পরিবারের সদস্য আনুমানিক পাঁচ জন হিসাবে)। গড়ে প্রতি পরিবারে ছয় জন সদস্য হলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২ লাখ ৭ হাজার ৪২৪।