আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

নীলফামারী:

উজানের ভারী বর্ষনে বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে দুই গ্রাম প্লাবিত’ পানি বন্দি ২শ পরিবার

আনোয়ার হোসেন ডিমলা নিলফামারী:

ডিমলা:

নীলফামারীর ডিমলায় বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে দুই গ্রাম প্লাবিত। দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে সহস্রাধিক বিঘা আবাদি জমি।

স্থানীরা জানান, উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজ সুন্দর খাতা গ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীর মূল বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এসময় বাঁধের অন্তত ২০০ মিটার অংশ বিধ্বস্ত হয়ে পানি প্রবেশ করে উত্তর সুন্দরখাতা, নিজ সুন্দরখাতা, মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা গ্রামের ১০টি এলাকায় । এতে করে এসব গ্রামে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। পানিতে তলিয়ে গেছে ৩০০ একর আবাদী জমি। এসব জমির আমন বীজতলা, মরিচ ও পাটসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে।

নিজ সুন্দরখাতা গ্রামের গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, গ্রামের বুড়ি তিস্তা নদীর মূল বাঁধটি নির্মিত হয় ষাটের দশকে। এরপর থেকে আর সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিল।

এরইমধ্যে উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে বৃহস্পতিবার ভোরে বাঁধের ২০০ মিটার অংশ ভেঙে গিয়ে উত্তর সুন্দর খাতার খালপাড়া, নিজ সুন্দরখাতার মাঝিয়ালীর ডাঙ্গা গ্রামসহ ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়। এতে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও পানিতে তলিয়ে গেছে ৩০০ একর আবাদী জমি। এসব জমির আমন বীজতলা, মরিচ ও পাটসহ অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে।

উত্তর সুন্দর খাতা খালপাড়া এলাকার শিক্ষক সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, অনেক পুরোনো ওই বাঁধটি শুধু সংস্কার করলেই হবে না। গ্রামতে একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে উত্তর সুন্দর খাতা খালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,নিজসুন্দর খাতার মাঝিয়ালির ডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি, ফসল ক্ষেত, আবাদী জমি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের সুদৃষ্টি চাই আমরা গ্রামবাসী।

একই গ্রামের ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু বাঁধ ভেঙেই নয়, নদীতে ঢলের পানি আসায় বিভিন্ন স্থানে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে গ্রামে। দ্রুত মেরামত করা না হলে পানি জমে থাকা জমিতে আবাদ করা সম্ভব হবে না। আবাদ করতে না পারলে অনেক কৃষক পরিবার সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে’।

ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী জানান, বুড়ি তিস্তার নদীর বাঁধ ভেঙে উত্তর সুন্দর খাতা, নিজ সুন্দর খাতা গ্রামের প্রায় এক হাজার বিঘা আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে মাঠে থাকা আমন ধানের বীজতলা, পাট ও মরিচসহ অন্যান্য ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কাজ চলছে।

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌমলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিনা সে বিষয়ে কাগজপত্র যাচাই করা হচ্ছে। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ভাঙা অংশসহ বাঁধ উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। এতে করে ৩০০ একর আবাদী জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিষটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ভাঙা অংশে পানির স্রোতে বেশি থাকায় মেরামত করা যাচ্ছে না এই মুর্হুতে। পানির স্রোত কমলেই বালির বস্তা ফেলে ভাঙা অংশ মেরামত কাজ শুরু হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অধস্তন আদালতও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন।

অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগ। ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম ই ফ্যামিলি কোর্ট উদ্বোধন করতে এলে আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লাএর সাথে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন,

চট্টগ্রাম বিভাগ ও চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ সাক্ষাৎকালে তাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান।তারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় এর ন্যায় পদ -পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল নির্ধারণের ও দাবি জানান।নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ বিচার বিভাগ আইনের ধারক ও বাহক।
Pp

কিন্তু অধস্তন আদালতের কর্মকর্তাও কর্মচারীগন বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই বৈষম্য দূরীকরণের জোর দাবি জানান।আইন সচিব অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা জজ মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন, মহানগর দায়রা জজমোঃ হাসানুুল ইসলামও চট্টগ্রামের সকল স্তরের বিচারক মন্ডলী।উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এনামুল হক আকন্দ ।বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পারভেজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাং শামসুল হক, , চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি বিপ্লব কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ