আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

কক্সবাজার:

সেবাপ্রার্থীকে মারধর, ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বিশেষ প্রতিনিধি:

চকরিয়া:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সালিশি বৈঠকের নোটিশ দিয়ে পরিষদ কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর ও হামলার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার ( ২৮ জুন) বিকেলে এই অভিযোগে বরইতলী একতা বাজারে বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

অভিযুক্তরা হলেন- বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান, দুই ইউপি সদস্য আলমগীর, নাসিম হেজাজী, অফিস সহকারী মহসিন রিমন ও গ্রাম-পুলিশ রিদুয়ান।

এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করেছে স্থানীয় পহর চাঁদা এলাকার মৃত মোজাফফর আহমদের ছেলে এনামুল হক।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে আজ শুক্রবার ( ২৮ জুন) বিকেলে বরইতলী একতা বাজারে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। একই দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় বাজারে মারধরের শিকার হওয়া পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনও হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নাজিম উদ্দীন দুলাল, সাহাব উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আইয়ুব খান মিন্টু, সালেহ আহমদ প্রমুখ।

হামলার শিকার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ইনস্ট্রাক্টর (রেডিওলজি) মাহমুদুল হক বলেন, গত রবিবার (২৩ জুন) জায়গা-জমি সংক্রান্ত অভিযোগের সাক্ষী দিতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে দুপুর ২টার দিকে গ্রাম আদালতের বিচারকার্য শুরু হয়। শুরুতে মনোযোগ সহকারে বাদী পক্ষের অভিযোগটি শুনেন ইউপি চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান। পরে বিবাদী পক্ষের বক্তব্য প্রদানের সময় তাদের বক্তব্য না শুনে খোদ চেয়ারম্যান নিজেই হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। চেয়ারম্যানের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ দেখে বিবাদী পক্ষের লোকজন একপর্যায়ে চেয়ারম্যানের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানের নির্দেশে পরিষদের এজলাস কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলমগীরসহ গ্রাম-পুলিশরা। মেম্বার আলমগীর ও গ্রাম পুলিশরা শক্ত কাঠের লাঠি (বাটাম) দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে আমাদেরকে। এ সময় আমার অপর ভাই এনামুল হকের মুখে লাঠির আঘাতে দাঁতের উপরের চোয়ালে গুরুতর জখম হয়ে একটি দাঁত মাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং একই সময় আকবর হোছেন ও আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে পিঠে, কোমরে ও হাতে গুরুতর জখম করে। আঘাতে হাতের হাড় ভেঙে যায়। ওই সময় শোর-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রাম পুলিশের কবল থেকে উদ্ধার করে আমাদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।

বাদি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট শহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদে সেবা প্রার্থীদের আটক রেখে মারধরের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগ দায়ের করলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) কক্সবাজারকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এদিকে বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রেখে সেবাপ্রার্থী মাহমুদুল হকের উপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান বলেন, বিচারকার্যে বিঘ্ন ঘটানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দরজা বন্ধ করে মারধরের বিষয়টি সঠিক নয়।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, বরইতলী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে শুনেছি, এ বিষয়ে আদালত যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমরা কার্যকর করব।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ