আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

কয়রায় আশ্রয়ণ প্রক‌ল্পের ঘর নির্মাণে নানা অনিয়ম

আতাউর রহমান তুহিন , কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

খুলনার কয়রা উপজেলায় আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ৪৯টি ঘর নির্মাণে ব‌্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়মনী‌তির তোয়াক্কা না ক‌রে বে‌শি দ‌রে জ‌মি ক্রয়, অ‌বৈধভা‌বে বালু উত্তোলন ও নিচু ক‌রে ভরাট, বেস ঢালাই না দেয়া, ম‌রিচা যুক্ত রড ও নিম্নমা‌নের সামগ্রী ব‌্যবহারসহ বি‌ভিন্ন অ‌নিয়মের অ‌ভি‌যোগ র‌য়ে‌ছে।
এদিকে, অনিয়মের অভিযোগে ওই প্রকল্পের কাজ ক‌য়েকবার বন্ধ হওয়ায় নির্ধা‌রিত সম‌য়ে উপকার‌ভোগী‌দের কা‌ছে হস্তান্ত‌র ক‌রা সম্ভব হয়‌নি। একপর্যা‌য়ে ২৯ টি ঘর ভে‌ঙে নতুন করে তৈ‌রির নি‌র্দেশনা দেন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। পুনরায় ঘর নির্মাণ শুরু হ‌লেও যথাযথ নি‌র্দেশনা পালন ক‌রা হ‌চ্ছে না ব‌লে অ‌ভি‌যোগ উঠে‌ছে।

স‌রজ‌মি‌নে ও খোঁজ নি‌য়ে জানা যায়, পূ‌র্বের ম‌রিচা ধরা রড, মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট, লোনা পানি মিশ্রিত বালি ও নিম্নমানের ইট ব্যবহার ক‌রে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। অনিয়মে তৈরীকৃত ২৯টি ঘর ভেঙ্গে নতুন তৈরীর কথা থাকলে তা যথাযথ পালন করা হ‌চ্ছে না। আগের নির্মাণকৃত ঘ‌রের ভিত ভে‌ঙে নতুন করে বেস ঢালাই দিয়ে তৈরির কথা থাক‌লেও তা করা হ‌চ্ছে না। ক‌য়েক‌টি ঘ‌র নামমাত্র ভে‌ঙে পুরাতন ভিত এর উপ‌রেই ইটের গাঁথু‌নি দেয়া হ‌য়ে‌ছে। এছাড়া এখনও ১৩টি ঘর ভাঙা হয়নি। ইট, বালু ও খোয়ার মান খারাপ হওয়ায় ঘরের স্থায়িত্ব নি‌য়ে প্রশ্ন দেখা দি‌য়ে‌ছে। ঘরের ভিত তিন ফুট উচু করার কথা থাকলেও মাত্র দেড় ফুট বালুর উপরে ঘর তৈরি করা হচ্ছে। বন‌্যার পা‌নির লে‌বে‌লের নী‌চে ঘরের মেঝে নির্মাণ করায় সামান‌্য বৃ‌ষ্টি‌তে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।

আরও জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির অন্য সদস্যদের অবহিত না করে সভাপতি নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। একই সাথে প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রীও তিনি নিজের ইচ্ছামত ক্রয় করছেন। কামরুল ইসলাম নামে যে ঠিকাদারকে দিয়ে ঘর নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে এর আগে বীর নিবাস প্রকল্পের কাজে অনিয়মের অভিযোগ করেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ক‌পোতাক্ষ নদ থে‌কে অ‌বৈধভা‌বে বালু উত্তোলন ক‌রে প্রক‌ল্পের স্থান ভরাট করা হয়। অ‌বৈধ বালু ব‌্যবহা‌রে বরা‌দ্দের অ‌র্ধেক লোপাট হ‌য়ে‌ছে। নোনা পা‌নি ঢুকায় ফসলসহ কৃ‌ষি জ‌মির ক্ষ‌তি হ‌য়। স্থানীয়‌দের বাঁধার মু‌খে বালু ভরাট দীর্ঘ‌দিন বন্ধ থা‌কে। একপর্যা‌য়ে ফের ক‌পোতা‌ক্ষের বালু দি‌য়েই ভরাট করা হয়। অন্যদিকে ঘরগুলো নীচু জায়গায় স্থাপন করায় সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

আরো জানা গেছে, ২০২৩ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোমিনুর রহমান আশ্রয় প্রকল্পের জমিটি রেজিস্ট্রেশন করেন। জ‌মি রে‌জি‌স্ট্রেশ‌নের সময় প্রকৃত মূ‌ল্যের অ‌নেক বে‌শি দে‌খি‌য়ে দ‌লিল করার অ‌ভি‌যোগ ওঠে। এছাড়া ক‌পোতাক্ষ‌ ন‌দ থে‌কে অ‌বৈধভা‌বে বালু উত্তোলন ক‌রে ভরাট কর‌তে চাইলে স্থানীয়‌দের বাঁধার মু‌খে প‌ড়েন। এ বিষ‌য়ে ওই সময় প‌ত্রিকায় প্রতি‌বেদন প্রকাশ পায়। একপর্যা‌য়ে তি‌নি বদলী হওয়ার পরে উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা‌ হি‌সে‌বে মোঃ কামাল হো‌সেন যোগদান ক‌রে ফের ঘর নির্মাণ কাজ শুরু ক‌রেন। তখন ত‌লে ঢালাই না দি‌য়ে এবং নিম্নমা‌নের ইট দি‌য়ে ঘর তৈ‌রি করার ব‌্যাপক অ‌ভি‌যোগ ও‌ঠে। জাতীয় নির্বাচ‌নের প‌রে তি‌নি বদলী হওয়ায় কয়রা উপ‌জেলার সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) মোঃ তা‌রিক উজ-জামান ভারপ্রাপ্ত উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দা‌য়িত্ব পান। পদা‌ধিকার ব‌লে তি‌নি প্রক‌ল্পের সভাপ‌তির দা‌য়িত্বপ্রাপ্ত হ‌য়ে ফের কাজ শুরু ক‌রেন। উর্ধতন কর্তৃপ‌ক্ষের ঘর ভে‌ঙে তৈ‌রি করার নির্দেশন যথাযথ পালন না করেই পূ‌র্বের ম‌রিচা ধরা রড দি‌য়ে কাজ করেন তি‌নি। এরপ‌রে সম্প্রতি নতুন উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হি‌সে‌বে রুলী বিশ্বাস যোগদান করেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় প্রকল্পের সদস্য সচিব পিআইও মামুনার রশিদ, সদস্য- উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ দারুল হুদা, কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস, এম, বাহারুল ইসলামদের সাথে। তারা তিন জনই এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মত প্রকাশ করেন। আরও অ‌ভি‌যোগ র‌য়ে‌ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৪৯টি ঘর নির্মা‌ণে প্রকল্প বাস্তবায়ন ক‌মি‌টির সদস্য সচিব ও সদস্যদের অজান্তে নিজের খেয়াল খুশি মত বিল ভাউচার তৈরী করছেন সভাপ‌তি।

এ ব্যাপারে কয়রা উপজেলা সুজনের সভাপতি মোস্তফা শফিকুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের দেয়া ৪৯টি ঘর নির্মানের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে ঘর গুলো হওয়ার কথা। কিন্তু ঘর নির্মা‌ণের বিষ‌য়ে সাধারণ সদস‌্যরা কিছুই না জা‌নার বিষয়‌টি অত‌্যন্ত দুঃখজনক। তি‌নি আরও ব‌লেন, পূ‌র্বের ম‌রিচা ধরা রড, মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্ট, লোনা পানি মিশ্রিত বালি ও নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে নামমাত্র কয়েকটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পূর্বে ব্যাপক অনিয়মে তৈরীকৃত ২৯টি ঘর ভেঙ্গে নতুন করে তৈরী করার কথা থাকলে তা এখনও বহাল আছে। এছাড়া মাটি ছাড়া ৩ ফুট বালু দিয়ে ঘরের ভিত উচু করার কথা থাকলেও মাত্র দেড় ফুট বালির উপরে ঘর তৈরি করা হয়েছে যা হুমকির মু‌খে।

জানতে চাইলে নির্মাণ কাজের ঠিকাদার কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি ঘর নির্মাণ কাজের জন্য মালামাল বাদে আমাকে ৩৯ হাজার টাকায় চুক্তি করে দেওয়া হয়েছে। ঘরের নির্মাণ সামগ্রী প্রকল্পের সভাপতি ইউএনও স‌্যার কিনে দিচ্ছেন এবং নিজেই কাজের তদারকি করছেন। তাছাড়া ঘর নির্মাণে প্রকল্পের নক্সা ও প্রাক্কলন অনুসরণ করা হচ্ছে। ফলে কাজের মান খারাপ হওয়ায় কিছু নেই।

এ বিষ‌য়ে সদ‌্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি এবিএম তারিক উজ-জামান বলেন, আমি প্রকল্পের দায়িত্ব গ্রহণের আগে কিছু অনিয়ম হয়েছিল। ‌ঘর নির্মা‌ণে ত‌লে(ভি‌ট) ঢালাই না দেওয়ায় ২৯‌টি ঘরের ভিট ও ওয়াল ভে‌ঙে নতুন ক‌রে তৈ‌রির নি‌র্দেশনা দেয়া হয়। ১৬ টি ঘর ভে‌ঙে ফের তৈ‌রি করা হ‌য়ে‌ছে। বাকী ১৩‌টি ঘরও ভে‌ঙে নক্সা অনুযা‌য়ি তৈ‌রি করা হ‌বে।

নবগত কয়রা উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাস ব‌লেন, আমি নতুন যোগদান ক‌রে‌ছি। এ বিষ‌য়ে আমার জানা নেই। বিষয়‌টি খ‌তি‌য়ে দে‌খ‌বো।

প্রসঙ্গত, আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ প্রদানের জন্য উপজেলা সদরের দক্ষিণ মদিনাবাদ গ্রামে সাড়ে ৪ একর জমি কিনে সেখানে ৪৯টি সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য ৩ লাখ ৫ হাজার টাকা বরাদ্দে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও একটি বাথরুম থাকবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ