আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম কাস্টমস

দেশের সর্ববৃহৎ শুল্ক স্টেশনে রাজস্ব আদায় ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

দেশের সর্ববৃহৎ শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টমসে সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৭ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা, তবে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৬২ হাজার ৬৫৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে নয় দশমিক ৪২ শতাংশ। তবে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা অর্জন হয়নি।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, কাস্টমসে নানা ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে নজরদারি বাড়ানোর ফলে ডলার সংকটসহ নানা সমস্যা থাকা স্বত্ত্বেও গত অর্থবছরের তুলনায় নয় দশমিক ৪২ শতাংশ রাজস্ব আদায় বেড়েছে। একইসঙ্গে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য নিয়ে আসার অপরাধে দ্বিগুণের বেশি জরিমানা আদায় রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফায়জুর রহমান বলেন, ডলার সংকটসহ নানা সমস্যার পরেও নানাবিধ উদ্যোগ নেয়ায় রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড হয়েছে। এটি গত অর্থবছরের তুলনায় সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় বেড়েছে নয় দশমিক ৪২ শতাংশ।
জানা গেছে, শুধুমাত্র আমদানিকৃত ১২ ধরনের পণ্য থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে হাইস্পিড ডিজেল, ফার্নেস অয়েল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, আপেল, সিমেন্ট ক্লিংকার, পাম অয়েল, ভাঙা পাথর ও পেট্রোলিয়াম তেল উল্লেখযোগ্য। এসব পণ্য থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর আমদানি-রপ্তানি ও খালি কন্টেইনার মিলে ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউএস কন্টেইনার পরিবহন করেছে, যা আগের অর্থবছরে পরিবহন করেছিল ৩০ লাখ ৭ হাজার। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে কন্টেইনার পরিবহনে বন্দরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
একইভাবে বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কার্গো পরিবহন করেছে ১২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৭৪৮ টন। যা আগের বছরে ছিল ১১ কোটি ৮৩ লাখ টন ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই বন্দরের বাল্ক কার্গো পরিবহনে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৪ হাজার ২৫৩টি জাহাজ আসলেও বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাহাজ এসেছে ৩ হাজার ৯৭১টি। গতবছরের তুলনায় বিদায়ী অর্থবছরে ছয় দশমিক ৬৩ শতাংশ জাহাজ কম এসেছে।
বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, গত অর্থবছরের তুলনায় সমাপ্ত অর্থবছরে কন্টেইনার ও বাল্ক কার্গো পরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি বন্দরের কন্টেইনার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করার মধ্যে দিয়ে সম্ভব হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বন্দরের আরও সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করে চলছে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট এবং মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা সহ নানা সমস্যার কারণে সারাবিশ্বের অর্থনীতির মতো দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এসব সংকটের পরেও বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো ও কন্টেইনার পরিবহনের যেই প্রবৃদ্ধি হয়েছে তাতে বোঝা যায় দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ