আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

রাজশাহী:

“আমিহীন সেদিনের পৃথিবী” লেখক: আসিফ আহমেদ (শিক্ষার্থী) রাবি

আসিফ আহমেদ (শিক্ষার্থী) রাবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়:

আমিহীন সেদিনের পৃথিবী

এই নশ্বর ধরায় কোনো কিছুই অবিনশ্বর নয়। যেটা একবার উদিত হয়েছে সেটার গত হওয়া যেন অবশ্যম্ভাবী। তবুও এই মর্ত্যলোকে আমাদের জল্পনা-কল্পনা একটুর জন্যও থেমে নেই। জাগতিক এই মিথ্যা কুহকের কাছে ধরাশায়ী হয়ে আমরা উদ্ভাবন করে বসি প্রথিত হওয়ার ঠুনকো উপায়৷ পরিবার, সমাজ ও জনতার কাছে নিজের সর্বাগ্রগণ্য তুলে ধরতে মরিয়া হয়ে পড়ি। স্বীয় স্বকীয়তা ও ব্যক্তিত্বের বিসর্জন দিতে দিতে ভুলে বসি আমিহীন পৃথিবীর বহমানতাকে।দাম্ভিকতা ও দুনিয়াবি ধোঁকার করাঘাতে দুমড়েমুচড়ে নিজেই নিজের মূলোৎপাটন ডেকে আনি, ভেবে বসি আমার অনুপস্থিতি কাঁদাবে এই পার্থিব মহলকে। কিন্তু তা কি করে হয়? পৃথিবী যে তার নিজ বিধি মোতাবেক অগ্রসরমাণ। দেখো অয়োময় এই কৃষ্ণগহ্বরে দুনিয়ার উজ্জ্বল কিংবদন্তি (ব্যাক্তিত্ব) নক্ষত্রগুলো হারিয়েও পৃথিবী দেদারসে চলে আসছে হাজার বছর ধরে।সেখানে আমার মতো কিঞ্চিৎ এই তুচ্ছ অনুদার সৃষ্টির স্থায়িত্ব ও মনে রাখার যুক্তি উদয়ন করা একান্তই অবাঞ্ছনীয়। আমিহীন সেই পৃথিবী সেদিন কেমন হবে তা কি কখনো অনুভব করি আমরা। হয়তো এভাবে…

এই বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ সেদিন থেকে যাবে, থেকে যাবে ধোঁয়া ওঠা এই চায়ের কাপের উষ্ণতা, এই বিরান প্রান্তরের পিনপতনতা সেদিন থেকে যাবে, থেকে যাবে এই মধ্যরাতের নিস্তব্ধতা, তাতে প্রত্যহ পালা করে এভাবে আঁধার পেরিয়ে সুবহে সাদিক আসবে, থেকে যাবে এই ঝলসানো চাঁদ যার আলোয় আলোকিত হবে দিগ্বিদিক, নিত্যদিনের মতো এই ঝরা পাতা সেদিনও শুকিয়ে কাঠ হবে, সেদিনও শহরজুড়ে বৃষ্টি আসবে পাখিরা খুঁজবে আশ্রয়, থেকে যাবে সেই জলপতনের রিমিঝিমি কলতান, থেকে যাবে এই দূর্বাঘাসকে আঁকড়ে থাকা পরিচিত মাটির মৃদু গন্ধ, থেকে যাবে দিগন্তে ভেসে আসা নিশীথ রাতের ডাহুকের ডাক, থেকে যাবে এই গোঙানি দেওয়া যন্ত্রমানব রেলগাড়ী, তাতে পালা করে পূর্ব থেকে পশ্চিমে পাড়ি দিবে আমার মতই কোনো এক দুরন্ত কিশোর, রয়ে যাবে এই হাসনাহেনা আর রজনীগন্ধার ঘ্রাণের রাজ্য, থেকে যাবে আমাবস্যার এই ঘুটঘুটে আঁধার, থেকে যাবে শরতের ঝকঝকে রাতের আকাশের তারাগুলো, থেকে যাবে বাবুই আর চড়ুইয়ের বাসা, তাতে পালা করে বসবাস করবে তাদেরই কোনো এক প্রজন্ম, থেকে যাবে সন্তানের নিমিত্তে মায়ের ভালোবাসা, থেকে যাবে শর্বরীতে লেপ্টে থাকা জোনাকির দলেরা, থেকে যাবে আমার পরিচিতি প্রান্তর, এদিনের মতো সেদিনও অজপাড়াগাঁয়ের মিনার থেকে ভেসে আসবে বৃদ্ধ মুয়াজ্জিনের তিরতির করে কাঁপা আজানের বার্তা, তাতে সাড়া দিয়ে স্রষ্টার স্তুতিতে উপনীত হবে কোনো এক আমজনতা, থেকে যাবে আমার ঝুলি ভর্তি স্মৃতিগুলো, থেকে যাবে এই দরদ মিশ্রিত সুর, থেকে যাবে আমার কোনো এক উত্তরসূরী …..

শুধু সেদিন থাকবে না কে ?
কেবল আমি নামক হতভাগা। মৃত্যু নির্মম, সে যে অদম্য, আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার আবির্ভাব অবধারিত। আমি মৃত্যুর পথেই সর্বদা চলমান, এই হেঁটে চলা অদৃশ্যমান,অজ্ঞাত। কোনো একদিন লাগাম ছেঁড়া ঘোড়ার ন্যায় গোঙানি দিয়ে হাজির হবে সে, আষ্টেপৃষ্টে ঘিরে ধরবে আমায় চতুর্দিক থেকে, মিশিয়ে দিবে আমার অস্তিত্ব এক অদৃশ্য জগতে, সে জগৎ কেবল মৃতদের কাছে দৃশ্যমান। আমি হারিয়ে যাবো কোনো এক ক্ষণে, হারিয়ে যাবো ওই চাঁদটার মতো না, হারিয়ে যাবো ঠিক আজীবনের জন্য।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আজ বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন ।। 💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️


আজ (৫ ডিসেম্বর ২০২৫) একাত্তরের পদাবলী, তোমার জন্য অনিন্দিতা, বৃক্ষমঙ্গলের কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন। কবির জন্মভূমি দ্বীপজেলা ভোলায় আজ যথাযথ আয়োজনে দিনটি উদযাপন করবে – জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলা এবং জলসিঁড়ি সাহিত্য আসর ।


ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি গ্রামের হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে আজ বিকেল ৪ টায় “কবি নাসির আহমেদের জীবন ও সাহিত্য” শীর্ষক এক মূল্যবান আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ ও কবিতার গান অনুষ্ঠিত হবে ।

অনন্য এই আয়োজনটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- ভোলা জেলা কালচারাল অফিসার জনাব হাসানুর রশিদ মাসুদ । কবি নাসির আহমেদ এর জীবন ও সাহিত্য শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাধারণ সম্পাদক ও জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের নির্বাহী সভাপতি সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান । স্বাগত বক্তব্য রাখবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সহ-সভাপতি কবি মিলি বসাক ।


সভাপতিত্ব করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সভাপতি ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র সহ-সভাপতি শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক কবি মহিউদ্দিন মহিন । কবি নাসির আহমেদ কে নিয়ে কথা বলবেন ও কবিতা পাঠ করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি আল মনির, কবি গবেষক নীহার মোশারফ, জলসিড়ির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি, জলসিঁড়ির কোষাধ্যক্ষ কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ, নির্বাহী সদস্য কবি চৌধুরী সাব্বির আলম , কবি কামরুন্নাহার , কবি মাহে আলম আখন প্রমুখ ।

❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ