আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে জেনে নিন

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক

ডেঙ্গুর জ্বর নিয়ে অনেক মানুষের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। কারণ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা মৃত্যুর সংখ্যা একেবারে কম নয়।কোন শরীরে কোন লক্ষণ দেখলে আপনি বুঝবেন যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এবং সেক্ষেত্রে আপনার করণীয় কী হতে পারে?

ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো কী?

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র‍্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।

জ্বর হলেই কি চিন্তিত হবেন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলছেন, এখন যেহেতু ডেঙ্গুর সময়, সেজন্য জ্বর হল অবহেলা করা উচিত নয়।
জ্বরে আক্রান্ত হলেই সাথে-সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ।তিনি বলছেন, ”ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন, তারা জ্বরকে অবহেলা করেছেন। জ্বরের সাথে যদি সর্দি- কাশি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কিংবা অন্য কোন বিষয় জড়িত থাকে তাহলে সেটি ডেঙ্গু না হয়ে অন্যকিছু হতে পারে। তবে জ্বর হলেই সচেতন থাকতে হবে।”
বিশ্রামে থাকতে হবে
সরকারের কমিউনিক্যাবল ডিজিজ কন্ট্রোল বা সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের অন্যতম পরিচালক ড. সানিয়া তাহমিনা বলেন, ”জ্বর হলে বিশ্রামে থাকতে হবে। তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন, জ্বর নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা উচিত নয়। একজন ব্যক্তি সাধারণত প্রতিদিন যেসব পরিশ্রমের কাজ করে, সেগুলো না করাই ভালো। পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন।
কী খাবেন?
প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন – ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
যেসব ঔষধ খাওয়া উচিত নয়
অধ্যাপক তাহমিনা বলেন, ”ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে। স্বাভাবিক ওজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারটি প্যারাসিটামল খেতে পারবে।”
চিকিৎসকরা বলছেন, প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে চিন্তিত?
ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্ল্যাটিলেট বা রক্তকণিকা এখন আর মূল ফ্যাক্টর নয় বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক তাহমিনা।তিনি বলেন, ”প্ল্যাটিলেট কাউন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কোন প্রয়োজন নেই। বিষয়টি চিকিৎসকের উপর ছেড়ে দেয়াই ভালো।”সাধারণত একজন মানুষের রক্তে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট থাকে দেড়-লাখ থেকে সাড়ে চার-লাখ পর্যন্ত।
ডেঙ্গু হলেই কি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়?
ডেঙ্গু জ্বরের তিনটি ভাগ রয়েছে।
এ ভাগগুলো হচ্ছে – ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’।
প্রথম ক্যাটাগরির রোগীরা নরমাল থাকে। তাদের শুধু জ্বর থাকে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগী ‘এ’ ক্যাটাগরির।
তাদের হাসপাতালে ভর্তি হবার কোন প্রয়োজন নেই। ‘বি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু রোগীদের সবই স্বাভাবিক থাকে, কিন্তু শরীরে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। যেমন তার পেটে ব্যথা হতে পারে, বমি হতে পারে প্রচুর কিংবা সে কিছুই খেতে পারছে না।অনেক সময় দেখা যায়, দুইদিন জ্বরের পরে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে হাসপাতাল ভর্তি হওয়াই ভালো।’সি’ ক্যাটাগরির ডেঙ্গু জ্বর সবচেয়ে খারাপ। কিছু-কিছু ক্ষেত্রে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ’র প্রয়োজন হতে পারে।
আরো পড়তে পারেন:
ডেঙ্গুর জ্বরের সময়কাল
সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ এ সময়টিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে।কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের সময়কাল আরো এগিয়ে এসেছে। এখন জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের সময় শুরু হয়ে যাচ্ছে।
এডিস মশা কখন কামড়ায়
ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা অন্ধকারে কামড়ায় না। সাধারণত সকালের দিকে এবং সন্ধ্যার কিছু আগে এডিস মশা তৎপর হয়ে উঠে। এডিস মশা কখনো অন্ধকারে কামড়ায় না।
পানি জমিয়ে না রাখা
অধ্যাপক আবদুল্লাহ বলছেন, ‘এডিস মশা ‘ভদ্র মশা’ হিসেবে পরিচিত। এসব মশা সুন্দর-সুন্দর ঘরবাড়িতে বাস করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।এডিস মশা সাধারণত ডিম পাড়ে স্বচ্ছ পানিতে। কোথাও যাতে পানি তিন থেকে পাঁচদিনের বেশি জমা না থাকে।
এ পানি যে কোন জায়গায় জমতে পারে। বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দার ফুলের টবে, নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন পয়েন্টে, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা টায়ার কিংবা অন্যান্য পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে বিশ্বের ৭৫০ চিকিৎসক নিয়ে বৈজ্ঞানিক সম্মেলন।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন। ছয় দেশের সাড়ে সাতশ’ চিকিৎসক নিয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান আয়োজকেরা।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ভারত ও নেপাল থেকে ৭৫০ জনের বেশি চিকিৎসক, গবেষক, শিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ও আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম জালাল উদ্দিন, সেক্রেটারি ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী এবং হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম।

এসময় আয়োজকেরা জানান, শুক্রবার সকাল ৮টায় সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে সকাল সাড়ে ১১টায়। প্রধান অতিথি থাকবেন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ।

দিনব্যাপী এ আয়োজনে ১৭টি সেশনে উপস্থাপন করা হবে ৮৯টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ। যার মধ্যে আছে ৪০টি মেডিসিন, ২৫টি সার্জারি, ১২টি গাইনি এবং ডেন্টাল, বেসিক মেডিসিন ও মেডিকেল শিক্ষা সংক্রান্ত আরও ১২টি গবেষণা। এছাড়া সম্মেলনে আগের দিন দুইটি ও পরের দিন আরও দুইটি হাতে কলমে বৈজ্ঞানিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।

বৈজ্ঞানিক সেমিনারকে কেন্দ্র করে দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অংশগ্রহণে হাসপাতালে ৬ জন থাইরয়েড রোগীর অপারেশনবিহীন অস্ত্রোপচার করা হবে। ‘থার্মাল এবলেশন’ নামের এই সার্বাধুনিক পদ্ধতিতে থাইরয়েড নডিউল বা গলগণ্ড রোগ কাটা–ছেঁড়া, দাগ ছাড়া চিকিৎসা করা যায়।

ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ জানায়, বাংলাদেশে এ ধরনের প্রথম ওয়ার্কশপ এটি। এতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় চিকিৎসকেরা যৌথভাবে হাতে–কলমে থার্মাল এবলেশন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবেন—যা তরুণ চিকিৎসকদের জন্য যুগান্তকারী অভিজ্ঞতা হবে।
হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ আলম বলেন, গবেষণার মাধ্যমেই চিকিৎসার অগ্রগতি সম্ভব। ৮৯টি গবেষণা উপস্থাপন ও থার্মাল এবলেশনের মতো নতুন প্রযুক্তির হাতে–কলমে প্রদর্শন এ সম্মেলনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার বড়ুয়া বলেন, পাঁচ দেশের গবেষকরা তাঁদের গবেষণা ও প্রযুক্তি শেয়ার করবেন। থার্মাল এবলেশন আমাদের দেশে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম জালাল উদ্দিন বলেন, দেশে প্রতিবছর প্রায় তিন হাজার চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশিত হলেও বাস্তবে সেগুলোর প্রয়োগ কম। এ ধরনের সম্মেলন গবেষণা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে। সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. অলক নন্দী জানান, বিভিন্ন সেশনে গবেষকেরা হাতে–কলমে চিকিৎসার সর্বশেষ উদ্ভাবন উপস্থাপন করবেন।‘

নবীন চিকিৎসকদের জন্য এটি বিশাল প্রাপ্তি’ বলেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির ট্রেজারার অধ্যাপক ডা. আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস, প্রচার সেক্রেটারি ও ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ডা. মো. কামরুল হাসান, অফিস সেক্রেটারি ডা. হাদী মো. হাবিব উল্লাহ, শিক্ষক সমিতির সংস্কৃতি ও বিনোদন সম্পাদক ডা. ফাহিম হাসান রেজা প্রমুখ।

চট্টগ্রামে শ্রমিকদল নেতার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার

  •  চট্টগ্রামে শ্রমিকদল নেতার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের মধ্যম সরফভাটা গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে খুন করে সড়কে ফেলে রেখে যায় বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।নিহত আবদুল মান্নান (৪০) সরফভাটা ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তার বাড়ি ওই ইউনিয়নে হলেও কিনি পরিবার নিয়ে রাঙামাটির চন্দ্রঘোনা এলাকায় বসবাস করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
  • দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। অন্ধকারে নির্জন সড়কে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত অবস্থায় মান্নান পড়ে ছিলেন। পাশে একটি মোটর সাইকেল পড়ে ছিল। তার শরীরে চারটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি বাম চোখের কাছে, বাম হাতে একটি এবং পেটের ডানপাশে দুটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।
  • ওসি বলেন, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলছেন, তিনি (মান্নান) চন্দ্রঘোনা থেকে নিজ বাড়িতে তেমন আসেন না। গত বৃহস্পতিবার রাতে তার একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবার কথা ছিল। সেখানে না গিয়ে কেন তিনি সরফভাটায় এলেন, সেটা পরিবারের সদস্যরাও জানেন না।

প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, আবদুল মান্নান বিদেশে ছিলেন। সরকার পতনের পর দেশে ফিরে আসেন। মোটর সাইকেলটি তার নিজের। তবে তার মোবাইলটি পাওয়া যায়নি। তদন্তের পর জানা যাবে, কারা কেন তাকে খুন করেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ