
প্রায় ২৯ একর জমি নিয়ে ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, একাডেমিক ভবন ৪টি ছাত্রাবাস, কমন রুম, ক্যান্টিন সহ শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদার সকল উপাদান নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশাল কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার প্রায় তিন যুগ পরে হঠাৎ কোনো উপযুক্ত কারণ না দর্শিয়েই ২০০৯ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৪ টি ছাত্রাবাসে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় বৈদ্যুতিক সংযোগ।
এভাবেই দীর্ঘ ১৫ টি বছর এই ছাত্রাবাস গুলো তালা বন্ধ। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্করণের অভাবে এখন পরিতক্ত বর্জে পরিণত হয়েছে সরকারি কোটি টাকার স্থাপনাগুলো।
কালের বিবর্তনে বন্ধ হয়ে গিয়েছে কমনরুম। হারিয়ে গিয়েছে ক্যান্টিন। কিন্তু সাবেক এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জানা যায় সরকারিভাবে এই চারটি ছাত্রাবাস কে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ২০১৭ সালে। তবে কেন পরিত্যক্ত ঘোষনার দীর্ঘ আট বছর আগেই ইনস্টিটিউট প্রশাসন তালা বন্ধ করেছিল এই ছাত্রাবাসগুলো তাজানা যায়নি।
সাবেক এই শিক্ষার্থী আরো জানায় যে ২০২৩ সালে চারটি ছাত্রাবাস সংস্কারের বরাদ্দ পেয়েছিল খুলনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। কিন্তু বর্তমান
অধ্যক্ষ প্রকৌশলী অনিমেষ পাল ও শিক্ষক সমিতি এই ছাত্রাবাস বরাদ্দের বিপরীতে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আপত্তি জানায় এবং আবেদন করে একাডেমিক ভবনের জন্য।
এ বিষয়ে খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের
অধ্যক্ষ অনিমেষ পালের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি কিছুটা দ্বায় এড়িয়ে বলেন, তারা একাডেমিক ভবনের জন্য আবেদন করেননি। তারা এটি উপহার স্বরূপ পেয়েছেন। ছাত্রাবাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, ছাত্রাবাস হলে ইনস্টিটিউটে লেখাপড়ার মান খারাপ হয়ে যাবে। এজন্য ছাত্রাবাস না হওয়াই ভালো।
নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণের বিষয়ে তাদের ভূমিকার কথা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান যে এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট প্রশাসনের কিছু করার নেই।
কিন্তু গত ২ জুলাই খুলনার একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় সাক্ষাৎকারের সময় তিনি বলেন- ইনস্টিটিউট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে দ্রুত এই পরিত্যক্ত ছাত্রাবাস গুলো অপসারণ করে এখানে ১০ তালা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন করার জন্য এবং সেটি অনুমোদন পেয়েছে। কমন রুমের বিষয় অধ্যক্ষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আজ বৃষ্টির কারণে কমন রুম বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য সময় সেখানে শত শত শিক্ষার্থী থাকে ও তারা বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে তাদের অবসর সময় কাটায়।
কিন্তু বাস্তবে সেখানে গিয়ে দেখা মিলে ভিন্ন চিত্র। দরজার তলায় পড়েছে মরীচিকা।
কমনরুমের একটি ভাঙ্গা জালনা থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কমন রুম পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। দেখে বোঝাই যাচ্ছে অনেক বছর যাবতই সেখানে হয় না মানুষের বিচরণ।
এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তারা তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে দাবি করেছেন – সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ভবন নির্মাণ না করে করা হোক ছাত্রাবাস।