আজঃ শুক্রবার ১৩ জুন, ২০২৫

সড়কে ৫ বছরে ৫,৬১৯ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম

দেশে গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ হাজার ৬১৯ শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছে। এ হিসাবে প্রতিদিন সড়কে নিহত হয়েছে ৩ জন শিক্ষার্থী। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজেদের কার্যালয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটি। নচট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ২০১১ সালের ১১ জুলাই একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। ওই ট্রাকে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট শেষে বাড়ি ফিরছিল ৪২ শিক্ষার্থী। সে দুর্ঘটনায় তাদের সঙ্গে নিহত হয় আরো ৩ জন। দিনটিকে স্মরণ করে গতকাল ‘‌সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহত: পরিসংখ্যান ও পর্যালোচনা’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এতে একটি দুর্ঘটনা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠটির চেয়ারম্যান ড. এআই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ৫-১৭ বছর বয়সী স্কুল ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে ২ হাজার ৬৪১ জন। ১৮-২৫ বছর বয়সী কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে ২ হাজার ৯৭৮ জন।’
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাড়ে ৫ বছরে ১ হাজার ৫৩৪ শিক্ষার্থী পথচারী হিসেবে যানবাহনের ধাক্কা বা চাপায় নিহত হয়েছে। যানবাহনের যাত্রী হিসেবে নিহত হয়েছে ৭২১ শিক্ষার্থী। একই সময়ে মোটরসাইকেলচালক বা আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ২ হাজার ৭৮৩ জন। ১৩-২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা মূলত বাইকচালক ও আরোহী হিসেবে প্রাণ হারিয়েছে।
দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে আঞ্চলিক ও মহাসড়কে। গত সাড়ে ৫ বছরের দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, এ সময় গ্রামীণ সড়কে ১ হাজার ৩৩৯ জন, শহরের সড়কে ১ হাজার ৪৮৬, আঞ্চলিক সড়কে ১ হাজার ৬৫১ ও মহাসড়কে ১ হাজার ১৪৩ শিক্ষার্থী নিহত হয়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ থ্রি-হুইলার দুর্ঘটনায়, ২১ দশমিক ৩০ শতাংশ পণ্যবাহী মোটরযানের চাপায়, ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ বাসচাপায়, ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বাইসাইকেল ও প্যাডেল রিকশা এবং ৩৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ অন্যান্য দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা, সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর মানসিকতা এবং ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতাকে দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে দেখছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সড়কে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু কমাতে সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে বছরে একবার ক্যাম্পেইন আয়োজন করা, সরকারি উদ্যোগে শিক্ষকদের সড়ক নিরাপত্তামূলক প্রশিক্ষণ দেয়া, ক্লাস পরীক্ষায় সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশ্ন থাকা, গণমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি, অনিরাপদ যানবাহন বন্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশের সড়কে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরসাইকেল চালানো ঠেকাতে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা অন্যতম। সংবাদ সম্মেলনে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ সৈয়দ জাহাঙ্গীর, ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ফেরদৌস খান, ট্রেজারার ড. জাহিদুল ইসলাম, লিগ্যাল ইকোনমিস্ট মোহাম্মদ শাহজাহান সিদ্দিক উপস্থিত প্রমুখ ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রাজশাহী বিভাগে সবচেয়ে বেশী কোরবানি হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগে সবচাইতে বেশী কোরবানি হয়েছে ।ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে বিপুলসংখ্যক গবাদিপশু কোরবানি করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সরকারি হিসাব বলছে, এ বছর সারাদেশে কোরবানি দেওয়া হয়েছে ৯১ লাখেরও বেশি পশু।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৫ সালের ঈদুল আজহায় কোরবানি দেওয়া হয়েছে মোট ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু। এর মধ্যে গরু ও মহিষ মিলিয়ে কোরবানি হয়েছে ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি, ছাগল ও ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি, আর অন্যান্য পশু ছিল ৯৬০টি।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর জানায়, স্তরায়িত দৈব নমুনা পদ্ধতির (স্ট্র্যাটিফায়েড র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং) মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে এ হিসাব তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার একটি ছোট, একটি মাঝারি এবং একটি বড় গ্রাম থেকে কমপক্ষে এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করা ।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার সর্বাধিক পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। মোট কোরবানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১টি। এরপর রয়েছে ঢাকা বিভাগ, যেখানে কোরবানি হয়েছে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি পশু। চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি গবাদিপশু।

অন্যদিকে, সবচেয়ে কম কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে- সংখ্যা ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩টি। এরপর ময়মনসিংহ বিভাগে, যেখানে কোরবানি হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৬২টি পশু।বাকি বিভাগের কোরবানির সংখ্যা:রংপুর: ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি খুলনা: ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪টি বরিশাল: ৪ লাখ ৭৮৩টি

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রায় ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি গবাদিপশু অবিক্রীত থেকে গেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর পশু উৎপাদন তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে এই পশুগুলো আগামীতে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার, পারিবারিক অনুষ্ঠান বা অন্য প্রয়োজনে কাজে লাগবে। হয়তো আগামী বছর আরও বেশী পশু কোরবানি হতে পারে ।

মোহনগঞ্জ ওলামাদলের সভাপতি বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু।

ফ্যানের সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আটপাড়া উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি রাজিব তালুকদা (২৮) মৃত্যু হয়েছে। ১১ জুন আটপাড়া উপজেলার বাউশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।রাজিব হাসান তালুকদার বাউশার গ্রামের মৃত কাঞ্চন তালুকদার এর ছেলে। তিনি মোহনগঞ্জ উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি ছিলেন।

রাজিব হাসান তালুকদার মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়কাশিয়া মামার বাড়িতে বসবাস করতেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে আটপাড়া উপজেলার বাউশা গ্রামে নিজ বাড়িতে স্ট্যান্ড ফ্যানের সংযোগ দিচ্ছিলেন রাজিব।

এ সময় হঠাৎ বিদ্যুতায়িত হন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।সাস্হ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, লাশ মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাজিব হাসান তালুকদার এর ভাই কামরুল হাসান জানান, নিজ বাড়ীতে ট্রেন্ড ফ্যানে বিদ্যুতায়িত হয়ে বিদ্যুৎৃষ্ট হয়ে সে মারা যায়, মোহনগঞ্জ জানাজা শেষে নিজ গ্রাম বাউশা জানাজা হবে তার পর গ্রামের বাড়িতেই দাফন করা হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ