আজঃ মঙ্গলবার ১৭ জুন, ২০২৫

ঝিনাইদহে আবাসিক এলাকায় অপরিকল্পিত গরুর খামার স্থাপনে দুর্গন্ধ; ডেঙ্গু আতঙ্কে এলাকাবাসী

রবিন মাহমুদ, ঝিনাইদহ-

আবাসিক এলাকায় যত্রতত্র নির্মাণ করা হয়েছে গরুর খামার। বাতাসের সাথে ছড়ানো গোবরের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। বায়ু দূষণ সহ মানুষকে নানা রকম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘটনাটি ঝিনাইদহ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের উপশহর পাড়া এলাকায়।
জানা যায়, খামার প্রতিষ্ঠা হওয়ার ফলে দুর্গন্ধের কারণে ঐ এলাকায় কেউ বাসা ভাড়া নিতে চায় না। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে অধিকাংশ ভাড়াযোগ্য বাড়ি খালি থাকছে। অনেকে আবার নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে। এছাড়াও গোবর-চুনা ও খামারের কারণে আশেপাশের বাড়িতে অবস্থানরত মানুষেরা দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছে। গোবরের চুনার দূর্গন্ধে খাবার টেবিলে বসে খাওয়ার মতো পরিবেশ টুকু ও নেই। খামারের দুর্গন্ধে এলাকায় বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবেশ দূষণ ও জনদূর্ভোগের হাত থেকে রেহাই পেতে বারবার অভিযোগ দেবার পর মালিকদের দারস্থ হয়েও কোনো ফল পাননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই এলাকার বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মরহুম উজ্জ্বল বিশ্বাসের শ্বশুর জাহাঙ্গীর নিয়মনীতি না মেনে পরিবেশ দূষণ করে গরুর খামার স্থাপন করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জাহাঙ্গীর তার নিজ জমিতে নারায়ণ বিশ্বাসের বাড়ি সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে গরুর একটি খামার স্থাপন করেছে। খামারটির আশপাশে মলমূত্র ও গোবর ছড়িয়ে- ছিটিয়ে রয়েছে। ওই গোবর, ময়লা- আবর্জনা খামারের পাশেই কোন রকম গর্ত করে ফেলা হচ্ছে। এছাড়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত খামারের মলমূত্র, পানিনিষ্কাশন ও বর্জ্য অপসারণের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। খামারের চারপাশে রয়েছে বসতবাড়ি। এসব বাড়ি থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া সামান্য বৃষ্টিপাতে মলমূত্র ও গোবর পানির সাথে মিশে পচা দূর্গন্ধ ছড়ানো সহ মশা-মাছির উপদ্রব বেড়ে চলেছে।
পৌরসভার বিদ্যমান নীতি ও আইন এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫’র সুনির্দিষ্ট আইন থাকা সত্বেও এমন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গরুর খামার স্থাপনে বিদ্যমান আইনকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই গরুর খামার। গরুর গোবর ও মলমূত্র থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। বসবাস করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
খামারের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, দুর্গন্ধে আমাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে বসবাস করতে পারছেনা। নোংরা পরিবেশের কারণে মশার উপদ্রপ বেড়েছে। যা ডেঙ্গু বিস্তারের অন্যতম কারণ। আমরা এর স্থায়ী প্রতিকার চাই।
ওই এলাকার বাসিন্দা উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গরুর খামার ও গোবরের দুর্গন্ধে নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছি। এ বিষয়ে পৌরসভায় একাধিকবার অভিযোগ দিয়ে ও কোন সুরাহা মেলেনি।
গরুর খামার মালিক জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হবার পর তার এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করা হয়।
এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়রের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ব্যক্তিগত সহকারী জানান, স্যার ঢাকায় আছে। ঢাকা থেকে আসার পর কথা বলতে পারবেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ মুন্তাছির রহমান জানান, জনগণের ভোগান্তি ও দূর্ভোগ সৃষ্টি করে আবাসিক এলাকায় গবাদিপশু পালনের কোন সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে ফোন দিলে তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করেননি।এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মনোজিত কুমার মন্ডল বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। এটা স্থানীয় সরকারের কাজ। যদিও আবাসিক এলাকায় গরু পালন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ তবুও কেউ যদি গরু পালন করতে চাই সেক্ষেত্রে জনগণের যেনো কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
পৌরসভার আবাসিক এলাকায় বে-আইনীভাবে গড়ে ওঠা পরিবেশ বিধ্বংসী গরুর খামারের ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।।।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম মহানগরে আরও ৯ জনের করোনা সানাক্ত।

চট্টগ্রাম মহানগরে ২৪ ঘণ্টায় ১৫০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।এ নিয়ে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। রোববার দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, করোনা মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার মধ্য দিয়ে এ সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি ল্যাবের তিনটি ল্যাবে ১৫০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ২৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১ জন, এপিক হেলথ কেয়ারে ৪৯টি নমুনা পরীক্ষায় ৪ জন, পার্কভিউ হাসপাতালে ৫৯টি নমুনা পরীক্ষায় ২জন

এবং এভারকেয়ার হাসপাতালে ১৮টি নমুনা পরীক্ষায় ২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্ত ৯ জনের মধ্যে দুইজন উপজেলা এবং ৮ জন নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে থমকে আছে ২৮৫ কোটি টাকার বার্ন হাসপাতাল নির্মাণ কাজ ।

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে প্রায় ২৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট প্রকল্পের কাজ থমকে আছে। বৃষ্টির কারণে নগরের গোয়াছি বাগান এলাকায় পাহাড়ের মাটি নরম হওয়ায় মূল ভবনের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের সয়েল নেইলিং (খাড়া পাহাড় কেটে ঢালু করা) করা যাচ্ছেনা। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ এখনো শুরু করতে পারেনি বলছে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের গোয়াছি বাগান এলাকায় ১৫০ বেডের বিশেষায়িত ‘বাংলাদেশ-চাায়না ফ্রেন্ডশিপ বার্ন ইউনিট চট্টগ্রাম’ প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা অনুমোদন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় গত বছর ১২ জুন। এর আগে একই বছরের ৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় বার্ন ইউনিট প্রকল্পের অনুমোদন দেয় তৎকালীন সরকার। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২৮৪ কোটি ৭৬ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৫ টাকা। এর মধ্যে চীন দেবে ১৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ টাকা এবং সরকার দেবে ১০৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩১ হাজার ৯৫৫ টাকা। এছাড়া চীন থেকে আমদানিতে ট্যাক্স ভ্যাট বাবদ ৭০ কোটি টাকাসহ সংযোগ রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, বৈদ্যুতিক সংযোগ, দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও কেমিক্যাল

রিঅ্যাজেন্ট আনার খরচ ধরা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ছয় তলা ভবন, জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ল্যাবরেটরি, অপারেশন থিয়েটার, ১০টি আইসিইউ বেড, ১০টি পুরুষ এইচডিইউ বেড, ১০টি মহিলা এইচডিইউ বেড ও ৫টি শিশু এইচডিইউ রয়েছে। এছাড়া ১১৫ বেডের ওয়ার্ডে মহিলাদের জন্য বেড রাখা হয়েছে ৪৫টি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০২৬ সালের জুনে।

চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চমেক হাসপাতালের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে অগ্নিদগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে গুরুতর আগুনে পোড়া রোগীদের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সংকট ও নানা সমস্যার কারণে এখানে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হয় না। ফলে এসব রোগীকে নিয়ে ঢাকার বিশেষায়িত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে ছুটতে হয়।

সারাদেশের রোগীদের চাপ থাকায় অনেক সময় চিকিৎসকদের চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হয়।
এদিকে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, বার্ন ইউনিটের প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবনের বেসমেন্টের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। ভবনের কলামের কাজ চলছে। ভবনের পাশাপাশি পাহাড়ে সয়েল নেইলিং, কলাম বসানো এবং রিটেইনিং ওয়ালের কাজও
শুরু হবে।

জানা গেছে, চলতি বৃষ্টির আগেই হাসপাতালের মূল ভিত্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ভবনের কলাম নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন পর্যন্ত ১৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে যাতে ভবনের ওপর না পড়ে, তাই ঢালু পাহাড়ে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাম বসানো হবে। এছাড়া পাইলিং করে সেখানে উন্নতমানের ঘাস লাগানো হবে। যাতে বৃষ্টি হলে তা গড়িয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্কাশন করা যায়। পরে পাহাড় রক্ষার জন্য রিটেনিং দেয়াল নির্মাণ করা হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ