আজঃ শুক্রবার ১৩ জুন, ২০২৫

সর্বাত্মক অবরোধে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সড়কে যানবাহন ছিলনা তেমন। গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল একেবারে কম

কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সড়কে যানবাহন ছিলনা তেমন। গণপরিবহণ ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল একেবারে কম দেখা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে যানবাহন চলাচল কম দেখা গেছে। তবে বেলা গড়াতে যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কেও যানবাহন তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে। নগরী থেকে দূরপাল্লার যানবাহন কম ছাড়ছে বলে জানা গেছে। এদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠ সকাল থেকেই নগরীতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। মহাসড়কে বিজিবি সদস্যরা সাঁজোয়া যানে করে টহল দিচ্ছেন বলে বিজিবির ব্যাটালিয়ন-৮ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকী জানিয়েছেন।
এদিকে দোকান-পাট খোলা ছিল। সরকারি-বেসরকারি অফিস যথানিয়মে চালু ছিল। চালু ছিল কল-কারখানা। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা এবং পণ্যবাহী পরিবহনের আসা-যাওয়া স্বাভাবিক আছে। সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিরসরাই থেকে সীতাকুণ্ড হয়ে নগরীতে পৌঁছান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন। তিনি লন, মহাসড়কে আমি কোথাও পিকেটিং দেখিনি। কোথাও অবরোধকারীদের দেখাও পাইনি। চট্টগ্রাম অংশে মহাসড়ক স্বাভাবিক আছে। যানবাহন চলছে। আমার কাছে গাড়ি কম মনে হয়নি।কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির সংযোগ সড়ক-মহাসড়ক স্বাভাবিক আছে জানিয়ে তিনি বলেন, হাটহাজারীর বিষয়ে আমরা অ্যালার্ট আছি। সেখান থেকে এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। যানবাহন চলছে। কক্সবাজার মহাসড়কেও আমাদের অংশে কোনো সমস্যা নেই।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, সারাদেশে যে চলমান পরিস্থিতি তার প্রভাব চট্টগ্রাম বন্দরে পড়েনি। সব কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে। পণ্য উঠানো-নামানোর কাজও স্বাভাবিক। তিন হাজার টিইইউস কনটেইনারের শুল্কায়ন সমাপ্তের নথি জমা পড়েছে। সেগুলো ডেলিভারি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও ‘খুনের প্রতিবাদে’ এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এ সংক্রান্ত বার্তায় বলা হয়, শাটডাউন চলাকালে শুধুমাত্র হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোন প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোন গাড়ি চলবে না। সারাদেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
তবে নগরী এবং জেলার কোথাও এ পর্যন্ত কোটা আন্দোলনকারীদের বড় কোনো জমায়েত বা পিকেটিংয়ের খবর পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র সকালে নগরীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় প্রায় তিনশ’র মতো লোক জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। বিশ মিনিট পর পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, সকালে একদফা অবরোধের চেষ্টা ছাড়া নগরীতে আর কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোথাও অবরোধ আহ্বানকারীদের কোনো জমায়েতও আমরা দেখিনি। তাকে সকল পয়েন্টে আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। যদি কোনো বিশেষ পরিস্থিতি কেউ সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
[18/07, 18:06] Bishhajit: চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় চার
মামলায় আসামী প্রায় ৭ হাজার
চট্টগ্রাম: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ও অস্ত্রবাজির ঘটনায় চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বুধবার পাঁচলাইশ থানায় ৩টি ও খুলশী থানায় ১টি মামলা করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে তাণ্ডব চালানো হয়েছিল। এসব মামলায় অজ্ঞাতনামা প্রায় ৭ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত এসব মামলায় ১৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, ২ নম্বর গেইট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় এমইএস কলেজের শিক্ষার্থী শাহেদ আলী বাদী হয়ে ৫০০-৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে খুলশী থানায় মামলা করেছেন। খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নেয়ামত উল্লাহ বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ফুটেজ দেখে আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ চাকমা জানান, থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলার বাদী হয়েছে পুলিশ। এ দুটি মামলায় প্রতিটিতে অজ্ঞাতনামা ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার জনকে আসামি করা হয়। আরেকটি মামলা করেন মুরাদপুরে কোটা আন্দোলনকারীদের মারধরে আহত ইমন ধরের মা সুমি ধর। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আজ (গতকাল) বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ১৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে গত বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৮৮ জনকে এবং বুধবার থেকে ভোর ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রাজশাহীতে আজীবন বহিষ্কার ২ বি, এন, পি নেতা।

রাজশাহীতে দলীয় শৃংখলা ভংগের কারণে, ২ বি,এন পি, নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে ।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে রাজশাহীতে বিএনপির দুই নেতাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।বুধবার (১১ জুন) জেলা বিএনপির এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম এবং উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। 

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবু সাইদ (চাঁদ), সদস্যসচিব বিশ্বনাথ সরকার ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম (মার্শাল) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন। 

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, আনোয়ারুল ইসলাম একজন প্রধান শিক্ষককে স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না। এ জন্য শোকজ করেছিলাম। তিনি জবাব দিলেও সেটি গ্রহণযোগ্য না। তাই তাকে বহিষ্কার করা হলো। এছাড়া রফিকুল ইসলাম দুই সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা করেছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। তাই তাকেও বহিষ্কার করা হলো।

রাজশাহী বিভাগে সবচেয়ে বেশী কোরবানি হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগে সবচাইতে বেশী কোরবানি হয়েছে ।ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে বিপুলসংখ্যক গবাদিপশু কোরবানি করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সরকারি হিসাব বলছে, এ বছর সারাদেশে কোরবানি দেওয়া হয়েছে ৯১ লাখেরও বেশি পশু।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৫ সালের ঈদুল আজহায় কোরবানি দেওয়া হয়েছে মোট ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু। এর মধ্যে গরু ও মহিষ মিলিয়ে কোরবানি হয়েছে ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি, ছাগল ও ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি, আর অন্যান্য পশু ছিল ৯৬০টি।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর জানায়, স্তরায়িত দৈব নমুনা পদ্ধতির (স্ট্র্যাটিফায়েড র‍্যান্ডম স্যাম্পলিং) মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে এ হিসাব তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলার একটি ছোট, একটি মাঝারি এবং একটি বড় গ্রাম থেকে কমপক্ষে এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করা ।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এবার সর্বাধিক পশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। মোট কোরবানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১টি। এরপর রয়েছে ঢাকা বিভাগ, যেখানে কোরবানি হয়েছে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি পশু। চট্টগ্রাম বিভাগে কোরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি গবাদিপশু।

অন্যদিকে, সবচেয়ে কম কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে- সংখ্যা ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩টি। এরপর ময়মনসিংহ বিভাগে, যেখানে কোরবানি হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৬২টি পশু।বাকি বিভাগের কোরবানির সংখ্যা:রংপুর: ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি খুলনা: ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪টি বরিশাল: ৪ লাখ ৭৮৩টি

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর প্রায় ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি গবাদিপশু অবিক্রীত থেকে গেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ বছর পশু উৎপাদন তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে এই পশুগুলো আগামীতে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার, পারিবারিক অনুষ্ঠান বা অন্য প্রয়োজনে কাজে লাগবে। হয়তো আগামী বছর আরও বেশী পশু কোরবানি হতে পারে ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ