আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

দশম গ্রেড বাস্তবায়নে সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্রুত বৈষম্য নিরসন না হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে

অন্যান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (সার্ভেয়িং) ডিগ্রিধারী সার্ভেয়ার অথবা সমমানের পদে কর্মরতদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে চট্টগ্রামে সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা অবস্থান কর্মসূচি ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন।বৈষম্যবিরোধী সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক,(ভূমি অধিগ্রহণ) ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম তানভীর আল নাসীফ বরাবর স্মারকলিপি প্রধান করেন স্মারকলিপি প্রধানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন,নাজমুল হাসান, অমিত মজুমদার, মুমিনুল ইসলাম, আলমগীর কবির,মনিরুল ইসলামসহ প্রমুখ।

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত সার্ভেয়ার ও সমমানের পদে কর্মরত সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা দীর্ঘদিন ধরে চরম বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। একই সমমানের প্রকৌশলীরা ১০ম গ্রেডে কর্মরত থাকলেও ১৪, ১৫ ও ১৬তম গ্রেডে চাকরি করছেন তারা।বৈষম্য নিরসনে উচ্চ আদালত ও বাংলাদেশ কর্ম-কমিশন (পিএসসি) নির্দেশনা দিলেও আগের সরকার তা বাস্তবায়ন করেনি। এ নিয়ে সার্ভে ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
দ্রুত বৈষম্য নিরসন না হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চার বছর মেয়াদি (পূর্বে তিন বছর মেয়াদি প্রকৌশল ডিপ্লোমা) সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর ও সংস্থায় সার্ভেয়ার পদে কর্মরত।

তারা সরকারের সব উন্নয়নমূলক কাজের প্রাথমিক ধাপে সরাসরি ভূমিকা পালন করেন।
কারিগরি অধিদপ্তরের আওতায় যত ডিপ্লোমা টেকনোলজিস্ট আছে, তারা সবাই ১৯৯৪ সালের সম/বিধি-১৬৪নং রাষ্ট্রপতির আদেশে দ্বিতীয় শ্রেণি বর্তমানে ১০ম গ্রেডে উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পান। সেখানে অর্থ বিভাগের সুস্পষ্ট সম্মতি রয়েছে এবং সব দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অথচ সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা ১৪তম, ১৫তম ও ১৬তম গ্রেডে চাকরি করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫ সালে ১৭৮ (১৭) স্মারকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্যান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের ন্যায় উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও বেতন স্কেল দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করতে অনুরোধ করেন। এ ছাড়া ২০১৩ ও ২০১৪ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের, ভূমি মন্ত্রণালয়ের, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি কল্যাণ শাখা থেকে পুনরায় তাদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার সুপারিশ করে অর্থ সচিবকে চিঠি দেয়।

এরপর ভূমি মন্ত্রণালয় ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও সার্ভেয়ার এবং সমমান পদের বেতন স্কেল দ্বিতীয় শ্রেণি (১০ম গ্রেড) বাস্তবায়নে সুপারিশ করে। সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রী সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দেন। আদালতের পক্ষ থেকেও সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো কোনো সুপারিশই বাস্তবায়ন হয়নি।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের কানুনগো ও উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার পদে দীর্ঘদিন ধরে কোনো পদোন্নতি বা নিয়োগ না থাকায় এক হাজার ৪০০টি পদের মধ্যে এক হাজার ২৫০টি পদ শূন্য থাকায় মাঠ প্রশাসনে সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। এসব শূন্য পদ পূরণে সুপারিশ চেয়ে পিএসসিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পিএসসি দ্রুত মন্ত্রণালয়কে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। পিএসসির ১০১৩ জনের মধ্যে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে পদোন্নতি দিতে বলে হলে ও মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তার খামখেয়ালিপনায় পদোন্নতিতে একটা গা-ছাড়া লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। অথচ প্রশাসন ক্যাডারের কোনো পদোন্নতিতে জটিলতা তৈরি হয় না।

একজন সার্ভেয়ারের কর্মকাল ১০ হলে কানুনগো পদে পদোন্নতি পাওয়ার বিষয় নিয়োগবিধিতে উল্লেখ থাকলেও দীর্ঘ ২৫-২৬ বছর চাকরি করে একটিও পদোন্নতি নেই। এতে তাদের আর্থিক ও মানুষ কষ্ট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ভূমির আইনের সংস্কার ও ভূমি ক্যাডার হলে জনগণের ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব সম্ভব।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সার্ভে ডিপ্লোমা এসোসিয়েশন এর পক্ষে সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন,
সরকারের সব দপ্তরে কর্মরত অন্যান্য ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ১০ম গ্রেড বেতন স্কেল বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু সমমান এবং এক ও অভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ার পরও সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ১০ম গ্রেড বেতন স্কেল বাস্তবায়ন করা হয়নি।

তিনি বলেন, একই কারিকুলামে ডিগ্রি অর্জন করে কেউ দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা, আবার কেউ তৃতীয় শ্রেণিতে চাকরি করছেন। আমরা এ বৈষম্যের অবসান চাই। বিগত সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও এ সংক্রান্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ৩২ টি চেক বিতরণ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের উদ্যোগে বোয়ালখালীতে ৩২ টি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় শাকপুরা প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ উপলক্ষে এক সভা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি রূবেল বড়ুয়া হৃদয় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি পল্টু কান্তি বড়ুয়া ও সমাজকর্মী রাজীব বড়ুয়ার উপস্থাপনায় এতে আশির্বাদক ছিলেন- শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বসুমিত্র মহাস্থবির, ভদন্ত বিপস্সী মহাথের, ভদন্ত পরমানন্দ মহাস্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ থেরো। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন -চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আজিজুল হক চেয়ারম্যান,

জেলার সদস্য মোঃ শওকত আলম, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক সরোয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, শওকত আলী চেয়ারম্যান, আবদুল আওয়াল মঞ্জু, শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান, পৌরসভা বিএনপি নেতা হাজী আবু আকতার, বোয়ালখালী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী, শ্রমিক দল নেতা মোঃ মোঃ ইলিয়াসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ,

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ঐক্য ফাউন্ডেশন বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, বৈদ্যপাড়া পঞ্চরত্ন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি দেশপ্রিয় বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট মহানগর-জেলা ও উপজেলা শাখার নেতা কমল জ্যোতি বড়ুয়া,তাপস বড়ুয়া , সুমন বড়ুয়া, রনি বড়ুয়া চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী দিক্ষিত বড়ুয়া, অর্ণব বড়ুয়া,সুমন বড়ুয়া ছোটন বড়ুয়া,পিপলু বড়ুয়া সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার/ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেছেন- বাংলাদেশ সম্প্রতির মেলবন্ধ, এদেশে সকল ধর্মের সহবস্থান ছিল -আছে- থাকবে। তাই ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এরিই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট আমাকে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের সকলের আশির্বাদ প্রার্থী। তিনি এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাস্টি রূবেল বড়ুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এখন সরকারী টাকা দপ্তরে গিয়ে আনতে হয়না, রূবেল বড়ুয়াই সরকারী টাকা নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির। তার এ কর্মযজ্ঞকে আপনাদের আশির্বাদে রাখতে হবে।

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ