আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কমে গেছে পণ্য আমদানি ঘুরে ছাঁড়াচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের পানগাঁও টার্মিনাল

চট্টগ্রাম ব্যুরোোংো

।কসাড়ে ৩ হাজার একক কনটেইনার ধারণক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালে ২০২৩ সালে ভিড়েছিল ১৪৭টি পণ্যবাহী জাহাজ। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিমাসে ১২টির বেশি জাহাজ। নানা প্রতিকূলতা ও অভিযোগ থাকলেও এই টার্মিনালকে এখন নতুন করে সাজানো হয়েছে। দ্রুত হয়রানিমুক্ত পণ্য পরিবহনের জন্য যাথাযথ ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্টরা। পানগাঁও বন্দরের স্টোরেজ সক্ষমতা সাড়ে ৩ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। বছরে এ বন্দর হ্যান্ডলিং করে এক লাখ ১৬ হাজার টিইইউ কনটেইনার।
এদিকে নৌপথ ব্যবহার করে স্বল্পসময়ে বেশি পরিমাণ পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চালু করা হয় পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল। ৮৯ একর জায়গার ওপর নির্মাণ করা দেশের প্রথম অভ্যন্তরীণ এ নৌ-টার্মিনালে রয়েছে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও অবকাঠামোগত সুবিধা। কিন্তু তারপরও তলানিতে নেমে এসেছে এই টার্মিনালের কার্যক্রম।
নৌপথে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালের ব্যস্ততা বাড়াতে ছয়টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে বন্দরের ঝিমিয়ে পড়া কনটেইনার টার্মিনাল ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছে কর্তৃপক্ষ।
বিশেষ ছয়টি উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম রুটে জাহাজের বিদ্যমান ভাড়া কমাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি বাতিলে উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে নদীপথে কনটেইনার পরবিহনের ভাড়া প্রতিযোগিতামূলক হয়ে বর্তমান ভাড়ার চেয়ে ব্যাপক হ্রাস পাবে বলে মনে করেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনালের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পূর্ব নির্ধারিত একটি জেটি ছাড়া অতিরিক্তি আরেকটি জেটি পানগাঁওগামী জাহাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বার্থিং প্রায়োরিটির কারণে আগের চেয়ে দ্বিগুণ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম নৌরুটে বর্তমানে ১৯টি নিবন্ধিত জাহাজ রয়েছে। জাহাজগুলোকে নিয়মিত চলাচল করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কনটেইনার অপারটেরসহ অন্যান্য শিপিং লাইনগুলো নদীপথে কনটেইনার পরবিহনের জন্য পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আমদানি পণ্যের কনটেইনারের গন্তব্য পানগাঁও টার্মিনালের নাম উল্লেখ করে ইমপোর্ট জেনারেল মেনিফেস্ট, বিল অব লেডিং এবং এলসি খোলার বিষয়ে আমদানি-রপ্তানিকারকগণকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।পণ্য শুল্কায়নে কাস্টমসের জটিলতা নিরসন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে জটিলতা ছাড়াই পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনালের হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি ও টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য জাহাজ মালিকদের ও আমদানি-রপ্তানিকারকদের সাথে চলতি মাসেই দু’বার মতবিনিময় সভা করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান। সভায় পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালের জন্য গৃহীত ছয় উদ্যোগের কথা জানান। যা ব্যবহার করে পানগাঁও আইসিটিকে ব্যবসাবান্ধব করার জন্য আমদানি-রপ্তানিকারক, শিপিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, সম্প্রতি কাস্টমস ও আমদানিকারকদের নানা সমস্যার কারণে পানগাঁও টার্মিনাল কেন্দ্রিক পণ্য আমদানি কমে গেছে। আমদানিকারকরা এই রুটের পণ্য আমদানি না করলে স্বাভাবিকভাবেই জাহাজ আসাও কমে যাবে। তবে টার্মিনালের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে। এখানে অধিক পরিমাণ জাহাজ ও পণ্য ওঠানামা সম্ভব। তার সব লজিস্টিক ফ্যাসিলিটি আমরা নিশ্চিত করেছি। আরেকটি জেটি বরাদ্দ, পরিবহন খরচ কমানোসহ ৬টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-পানগাঁও রুটে শিডিউল মেনে ২১টি কনটেইনার জাহাজ চলাচল করতো। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন জাহাজ পানগাঁও এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়ায় এবং মেরিন ট্রাস্ট-১ কলকাতা বন্দরে ডুবে যাওয়ায় এখন এই রুটে ১৯টি জাহাজ চলাচল করে। এদের প্রতিটির ধারণক্ষমতা ১২০ থেকে ১৩০ একক কনটেইনার। ছোট আকারের এই জাহাজগুলোতে পণ্য ওঠানামা করা যায় ৬ ঘণ্টার মধ্যেই। তাই এই ১৯টি জাহাজ একত্রে প্রায় আড়াই হাজার কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পানগাঁওয়ে পরিবহন করতে পারবে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশব্যাপী নারী হেনস্থার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের মানববন্ধন

দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে কেন্দ্র ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

আজ সোমবার (১০ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামে স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন করেছে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাত্রদল । এসময় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা মোঃ আরমান হোসেন, মোঃ মানিক রতন তানিম, সামির হায়দার, হৃদয় মোল্লা, আহসান আলমগীর চৌধুরী, সামিরা নুর সহ নেতৃবৃন্দ।

পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা
রিয়াদুল হক রিয়াদ, আতিক, জিসান সহ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হেডকোয়ার্টারে সোমবার (১০ মার্চ) আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. মো.নাজমুল করিম খান।

উক্ত কল্যাণ সভায় পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারগণ এবং উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ পুলিশের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ পুলিশের সার্বিক কল্যাণ এবং শৃঙ্খলা নিয়ে তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। এছাড়াও গত মাসে পুলিশের ওয়ারেন্ট তামিল এবং ভাল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় পুলিশ কমিশনার পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অর্থ পুরস্কার বিতরণ করেন।

পুলিশ কমিশনার ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে এবং ছিনতাই প্রতিরোধে জিএমপি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে নির্দেশনা প্রদান করেন এবং ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি মুলতবি মামলার দ্রুত নিষ্পন্ন করণ এবং ওয়ারেন্ট তামিলে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। সাধারণ মানুষ যাতে কোন ভাবেই হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে সতর্কদৃষ্টি রাখতে সবাইকে নির্দেশনা দেন। পরিশেষে সকলের সর্বাঙ্গীর মঙ্গল কামনা করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি করেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ