আজঃ শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কমে গেছে পণ্য আমদানি ঘুরে ছাঁড়াচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের পানগাঁও টার্মিনাল

চট্টগ্রাম ব্যুরোোংো

।কসাড়ে ৩ হাজার একক কনটেইনার ধারণক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালে ২০২৩ সালে ভিড়েছিল ১৪৭টি পণ্যবাহী জাহাজ। অর্থাৎ, গড়ে প্রতিমাসে ১২টির বেশি জাহাজ। নানা প্রতিকূলতা ও অভিযোগ থাকলেও এই টার্মিনালকে এখন নতুন করে সাজানো হয়েছে। দ্রুত হয়রানিমুক্ত পণ্য পরিবহনের জন্য যাথাযথ ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে সংশ্লিষ্টরা। পানগাঁও বন্দরের স্টোরেজ সক্ষমতা সাড়ে ৩ হাজার টিইইউএস কনটেইনার। বছরে এ বন্দর হ্যান্ডলিং করে এক লাখ ১৬ হাজার টিইইউ কনটেইনার।
এদিকে নৌপথ ব্যবহার করে স্বল্পসময়ে বেশি পরিমাণ পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চালু করা হয় পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল। ৮৯ একর জায়গার ওপর নির্মাণ করা দেশের প্রথম অভ্যন্তরীণ এ নৌ-টার্মিনালে রয়েছে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ও অবকাঠামোগত সুবিধা। কিন্তু তারপরও তলানিতে নেমে এসেছে এই টার্মিনালের কার্যক্রম।
নৌপথে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালের ব্যস্ততা বাড়াতে ছয়টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে বন্দরের ঝিমিয়ে পড়া কনটেইনার টার্মিনাল ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছে কর্তৃপক্ষ।
বিশেষ ছয়টি উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম রুটে জাহাজের বিদ্যমান ভাড়া কমাতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি বাতিলে উদ্যোগ নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে নদীপথে কনটেইনার পরবিহনের ভাড়া প্রতিযোগিতামূলক হয়ে বর্তমান ভাড়ার চেয়ে ব্যাপক হ্রাস পাবে বলে মনে করেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনালের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পূর্ব নির্ধারিত একটি জেটি ছাড়া অতিরিক্তি আরেকটি জেটি পানগাঁওগামী জাহাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বার্থিং প্রায়োরিটির কারণে আগের চেয়ে দ্বিগুণ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-পানগাঁও-চট্টগ্রাম নৌরুটে বর্তমানে ১৯টি নিবন্ধিত জাহাজ রয়েছে। জাহাজগুলোকে নিয়মিত চলাচল করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কনটেইনার অপারটেরসহ অন্যান্য শিপিং লাইনগুলো নদীপথে কনটেইনার পরবিহনের জন্য পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আমদানি পণ্যের কনটেইনারের গন্তব্য পানগাঁও টার্মিনালের নাম উল্লেখ করে ইমপোর্ট জেনারেল মেনিফেস্ট, বিল অব লেডিং এবং এলসি খোলার বিষয়ে আমদানি-রপ্তানিকারকগণকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।পণ্য শুল্কায়নে কাস্টমসের জটিলতা নিরসন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ফলে জটিলতা ছাড়াই পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পানগাঁও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনালের হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি ও টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম গতিশীল করার জন্য জাহাজ মালিকদের ও আমদানি-রপ্তানিকারকদের সাথে চলতি মাসেই দু’বার মতবিনিময় সভা করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান। সভায় পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনালের জন্য গৃহীত ছয় উদ্যোগের কথা জানান। যা ব্যবহার করে পানগাঁও আইসিটিকে ব্যবসাবান্ধব করার জন্য আমদানি-রপ্তানিকারক, শিপিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, সম্প্রতি কাস্টমস ও আমদানিকারকদের নানা সমস্যার কারণে পানগাঁও টার্মিনাল কেন্দ্রিক পণ্য আমদানি কমে গেছে। আমদানিকারকরা এই রুটের পণ্য আমদানি না করলে স্বাভাবিকভাবেই জাহাজ আসাও কমে যাবে। তবে টার্মিনালের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে। এখানে অধিক পরিমাণ জাহাজ ও পণ্য ওঠানামা সম্ভব। তার সব লজিস্টিক ফ্যাসিলিটি আমরা নিশ্চিত করেছি। আরেকটি জেটি বরাদ্দ, পরিবহন খরচ কমানোসহ ৬টি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম-পানগাঁও রুটে শিডিউল মেনে ২১টি কনটেইনার জাহাজ চলাচল করতো। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন জাহাজ পানগাঁও এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ডুবে যাওয়ায় এবং মেরিন ট্রাস্ট-১ কলকাতা বন্দরে ডুবে যাওয়ায় এখন এই রুটে ১৯টি জাহাজ চলাচল করে। এদের প্রতিটির ধারণক্ষমতা ১২০ থেকে ১৩০ একক কনটেইনার। ছোট আকারের এই জাহাজগুলোতে পণ্য ওঠানামা করা যায় ৬ ঘণ্টার মধ্যেই। তাই এই ১৯টি জাহাজ একত্রে প্রায় আড়াই হাজার কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পানগাঁওয়ে পরিবহন করতে পারবে বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

তালা ঝুলিয়ে দিল টিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের নিচু জায়গা ভরাট করা নিয়ে বিরোধে রাজশাহী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নামের প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহী টিটি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে অবস্থিত। টিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা জায়গা ভরাটের বিরোধিতা করে আসছিলেন।

পুলিশ ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষক কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় ঘটনাস্থলে তারা আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এতে আটকা পড়েন শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।

আরএমপির রাজপাড়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ তাদের মূল একাডেমি ভবনের পাশের কিছু নিচু জায়গা ভরাট করছিলেন। তা দেখতে পেয়ে টিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা বাধা দেন।

বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। এর জেরে টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয় দেন। এতে শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থী আটকে পড়েন। খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে এ সময়ে জায়গা ভরাট কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ঘটনার বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ওয়াহেদুল কবীর সোহরাওর্দী বলেন, সরকারি সব বিধিবিধান মেনে শিক্ষা প্রকৌশল শাখার তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জায়গাটি ভরাটের কাজ চলছিল। অযোক্তিকভাবে টিটি কলেজের কিছু শিক্ষার্থী বাধা দেন। এটি একটি ন্যক্কারজনক কাজ। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি।

অন্যদিকে রাজশাহী টিসার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ শওকত আলী খান বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের লোকজন তাদের উদ্দেশ্য করে গালাগালি ও অপমান সূচক কথা বলেছেন। এর প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে।

জানা গেছে, দুই প্রতিষ্ঠানের বিরোধ নিস্পত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে টিটি কলেজ ক্যাম্পাসে যান রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. ইব্রাহিম আলী, রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব শামীম আরা চৌধুরীসহ অনেকে।

তারা দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে বিকাল সাড়ে ৩টায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব শামীম আরা চৌধুরী বলেন, একই ক্যাম্পাসে দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে এই বিরোধ কাম্য নয়। আমরা সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চউকে দুদকের অভিযান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অনিয়ম

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) এর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুপুরে দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর চার সদস্যের একটি টিম চউক ভবনে এ অভিযান পরিচালনা করছে। চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এ অভিযান। চউক’র নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব দাশের কক্ষে দুদক কর্মকর্তারা নথিপত্র যাচাই-বাছাই করছেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে দুর্নীতি প্রসঙ্গে সিডিএতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও চীনের র‌্যাঙ্কিন।

এ প্রকল্পের অভিযোগ তদন্ত এবং নির্মাণকাজের গুণগত মান যাচাইয়ে গত বছরের ১০ জুন উপকমিটি গঠন করে দেয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। পরবর্তীতে গত বছরের ৪ জুলাই গঠিত উপকমিটির আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ও মজিবুর রহমান মনজু পরিদর্শন শেষে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি ‘কিছু অসঙ্গতি’ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ