আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

৪৩ মাস পর আদালতে রায় চট্টগ্রামের নগর পিতা ডা. শাহাদাত হোসেন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেছেন একটি আদালত। মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীনের আদালত এ রায় দেন। একইসঙ্গে আগামী ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। যার ফলে চট্টগ্রামের নগর পিতা ডা. শাহাদাত হোসেন।
সাড়ে তিন বছর আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বাতিল চেয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের দায়ের করা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল মামলায় এ রায় দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের এড. আরশাদ হোসেন আসাদ। তিনি জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বাতিল চেয়ে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের দায়ের করা মামলায় তাঁকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ঘোষিত ফলাফল এবং মেয়র হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে নির্বাচিত ঘোষণা করে প্রকাশিত গেজেট বাতিল করে পুনর্নির্বাচন চেয়ে আদালতে মামলা করেন ডা. শাহাদাত হোসেন। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ তৎসহ নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর ৫৩ নম্বর বিধি ও ২ নম্বর উপবিধি মোতাবেক মামলাটি দায়ের করেন শাহাদাত।
চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ বলেন, বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা.শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রামের মেয়র ঘোষণা করেছেন নির্বাচনী ট্রাইবুনাল। ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামের ১ম যুগ্ম জেলা জজ আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা মামলার একতরফা সূত্রে ডিক্রি দিয়েছেন। এতে ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র হিসেবে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ইসিকে।
এদিকে অবিলম্বে আদালতের রায় কার্যকর করতে নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্ববর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ফলাফল বাতিল চেয়ে দায়ের করা মামলায় তাকে মেয়র ঘোষণার পর সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন তিনি।
এজলাসের বাইরে ডা. শাহাদাত আরো বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে সারাদেশের গণতান্ত্রিক মানুষের আইনের শাসনের প্রতি যে অনাস্থা তৈরি হয়েছিল তা ফিরে আসতে শুরু করবে। একইসাথে চট্টগ্রামের ২০ লাখ ভোটার যারা বার বার প্রতারিত হয়েছিল তারাও খুশি হয়েছে।
ডা. শাহাদাত বলেন, গত ১৬ বছর আওয়ামী দুঃশাসনে রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রকে আওয়ামী যন্ত্রে রূপান্তরিত করে দেশে তারা ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করেছে। ২০২১ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের যে নির্বাচন হয়েছিল, সেখানে তারা ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জালিয়াতি করে ইভিএম রেজাল্ট পাল্টে দিয়ে জালিয়াতি করে অবৈধভাবে রেজাউল করিমকে মেয়র ঘোষণা করেছিল। তিনি বলেন, নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে ২০২১ সালের মার্চ মাসে যে মামলা করা হয়েছে, সে মামলার কারণে আমাকে পাঁচ থেকে ছয় মাস জেল খাটতে হয়েছিল। সে মামলার আজ সাড়ে তিন বছর পর রায় হয়েছে। আমরা মনে করি, এ রায় বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের সময়ে পেয়েছি- বিচার বিভাগ যে স্বাধীন, আইনের শাসন যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- এ রায়ের মাধ্যমে সেটা প্রতীয়মান হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে প্রাক্তন মেয়র রেজাউল করিমকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। নির্বাচন কমিশন সচিবকে বলেছেন, ১০ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বহাল করে ডিক্লেয়ারেশন দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি আরেকটি ডিক্লেয়ারেশন দিয়েছেন, আমি যে বৈধ মেয়র- আমাকে জালিয়াতি করে হারানো হয়েছে। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালত প্রাঙ্গনে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনে মেয়র ঘোষণা করা হয়েছিল আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে। এতে রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ এবং তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান বলে ঘোষণা করা হয়েছি। পরে নির্বাচনে অবিশ্বাস্য কারচুপির অভিযোগ এনে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা করেন শাহাদাত হোসেন। মামলায় তখনকার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা ও চসিকের তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়েছিল।
তিন বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আড়ালে চলে যান রেজাউল। গত ১৯ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে অপসারণ করে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামের আরও ৪ আসন পেল বিএনপির প্রার্থী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে বাকি থাকা ছয়টি আসনের মধ্যে আরও ৪ টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে চারটায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামের এই

প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এর আগে গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিলেন। চট্টগ্রামে বাকি চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) ও চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিযেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।চট্টগ্রামের আসনগুলো হলো: চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯

(কোতোয়ালী,বাকলিয়া,চকবাজার) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়ার অংশকি) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য ও লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নাজমুল মোস্তফা আমিন।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপির ঘোষিত চট্টগ্রামের ১০টি আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন, চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই): চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি): চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সরওয়ার আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড): কাজী সালাউদ্দিন। চট্টগ্রাম-৫

(হাটহাজারী): বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া): বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও প্রয়াত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী): চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী): বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া): দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম। চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী): সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী): সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ