আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে বাড়িতে বাড়িতে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা, নিষ্ক্রিয় চসিক

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় নগরের বাকলিয়া এলাকাকে ‘লাল বা অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। সেই বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গত ৬ মাসেও মশার ওষুধ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। যদিও নগরের একই এলাকায় প্রতি তিনদিনে কমপক্ষে একবার হলেও মশার ওষুধ ছিটানোর কথা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের।
এদিকে নগরীর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে মিলেছে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভা। শুধু তাই নয়, এসব বাসাবাড়ির আশপাশে এবং বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত থাকা ৩৬ শতাংশ কন্টেইনারে মিলেছে লার্ভার প্রজননকেন্দ্র। এসবের মধ্যে আট ওয়ার্ডে মশার ঘনত্ব বেশি। এর মধ্যে ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বহদ্দারহাট এলাকায় সর্বোচ্চ। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। তবুও চসিকের ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম বাড়েনি বলে অভিযোগ তাদের। মশক নিধনে চসিক উদাসীন বলে মনে করছেন নগরবাসী। গত ছয় মাসেও মশার ওষুধ দেয়া হয়নি অভিযোগ করে বাকলিয়া থানাধীন কল্পলোক সমাজকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ছয় মাস আগে আবাসিকের কিছু এলাকায় মশার ওষুধ দিয়েছে। কিন্তু কল্পলোক আবাসিকে ছয় মাসে একবারের জন্যেও ওষুধ দিতে আসেনি কেউ। ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড এলাকার ইসহাক সওদাগর পুল সংলগ্ন সততা টাওয়ারের নিরাপত্তা কর্মী মো. আবু বকর জানান, প্রায় ৬ মাস আগে চসিক থেকে একবার এসে স্প্রে ও ফগিং করেছিল। তাদের আর দেখা যায়নি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের ম্যালেরিয়া ও মশক নিধন কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি বলেন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। যেখানে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে, আমরা সেসব এলাকা বিশ্লেষণ করে ওষুধ দিচ্ছি। যে সাত এলাকাকে ‘লাল বা অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, সেখানেও ক্রাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করছি। এছাড়া, তিনদিনের মধ্যে একই এলাকায় কমপক্ষে একবার হলেও মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। মশক নিধন কর্মকর্তা আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ৯১ জনের বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। তারা ‘লাল বা অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকায় নিয়মিত মশার ওষুধ দিচ্ছে। এছাড়া সব এলাকায় নিয়মিত ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকা অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের চেয়ে ভালো দাবি করে এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রতিদিন অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকার ডেঙ্গুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। সে তুলনায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অনেক ভালো আছে। এর কারণ হচ্ছে, এ বছর জানুয়ারি থেকে আমরা প্রয়োজনমতো ওষুধ ছিটিয়েছি। এছাড়াও, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতা কার্যক্রম, মাইকিং এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে নগরীর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে মিলেছে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার লার্ভা। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে পরিচালিত এক জরিপ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে এডিস মশা নিয়ে চালানো জরিপের ফলাফলসহ মশক নিধনে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ। তাতে আটটি সুপারিশও রয়েছে।
জানা গেছে, জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছের নেতৃত্বে গত মাসের ১৭ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জরিপ কাজ চালানো হয়। এতে অংশ নেন কার্যালয়টির কীটতত্ত্বীয় কূশলী সৈয়দ মো. মঈন উদ্দীন ও মো. রিয়াজ উদ্দীন। এসময় তারা উঁচু ভবন, নির্মাণাধীন ভবন, সেমি পাকা, খালি প্লট ও বস্তি এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকার ২০০ বাসা-বাড়ি থেকে এডিস মশার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারমধ্যে ৭৪টিতে এডিস মশার লার্ভার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যা ৩৭ শতাংশ। এছাড়া ১৯৪ কন্টেইনারে থেকে সংগ্রহ করা নমুনার মধ্যে ৬৯ কন্টেইনারে পজিটিভ পাওয়া যায়। যা ৩৬ শতাংশ। এছাড়া প্লাস্টিক ড্রাম ও বাস্কেটে ৪০, টায়ারে ৩৭, মাটির পাত্রে ১২, প্লাস্টিক জার ও শিটে ৬, পানির ট্যাংক, ফুলের টব ও এলুমিনিয়ামে ৩ এবং ভবনের লিফটের নিচে জমানো পানিতে ২ শতাংশ লার্ভা পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত। আর কতগুলো বাড়িতে এডিস মশার উপস্থিতি রয়েছে, তা পরিমাপের সূচক হলো হাউস ইনডেক্স।
জরিপে দেখা যায়, ৮ ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স ২০-এর বেশি। এর অর্থ হচ্ছে, এসব এলাকার ১০০টির মধ্যে ২০টির বেশি পাত্রে মশা বা লার্ভা পাওয়া গেছে। ওয়ার্ডগুলো হলো-৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের বহদ্দারহাটে ৮০ শতাংশ, ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের শেরশাহ-বায়েজিদে ৬০ শতাংশ, ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের পাহাড়তলীতে ৪৫ শতাংশ, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে ৪০ শতাংশ, ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ও কোতোয়ালিতে ৩০ শতাংশ, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের উত্তর ও দক্ষিণ খুলশীতে ২৫ শতাংশ, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের হালিশহর এলাকায় ২০ শতাংশ এবং ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডে ২০ শতাংশ।
জেলা কীটতত্ত্ববীদ এনতেজার ফেরদাওছ বলেন, জরিপে বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করি। এ কাজে আমাদের কর্মীও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। প্লাস্টিকের ড্রাম, পরিত্যক্ত টায়ারে জমা থাকা পানিতে লার্ভার অস্তিত্ব বেশি।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এডিস মশা নিয়ে চালানো জরিপের ফলাফল এবং কিছু সুপারিশ সিটি কর্পোরেশনকে জানানো হয়েছে। ফলাফল অনুসরণ করে মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস এবং ওষুধ ছিটানো সহজ হবে। পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করতেও কাজে লাগবে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মশার ঘনত্ব বাড়বে। তাতে পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ