আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে বেনজীরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা, জালিয়াতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জালিয়াতির মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির অভিযোগে সোমবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন সংস্থার উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।আসামিরা হলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের সাবেক পরিচালক মো. ফজলুল হক, সাবেক পরিচালক মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম, পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের টেকনিক্যাল ম্যানেজার সাহেনা হক।
দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, বেনজীর আহমেদ পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি, অতিরিক্ত আইজিপির পদমর্যাদায় র‌্যাবের মহাপরিচালক ও ডিএমপি কমিশনার পদে দায়িত্ব পালনের সময় পাসপোর্টের আবেদনপত্রের প্রফেশনের জায়গায় সরকারি চাকরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও জাল জালিয়াতি-প্রতারণার আশ্রয় নেন। তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে প্রাইভেট সার্ভিস উল্লেখ করে বিভিন্ন সময়ে বিভাগীয় অনাপত্তিপত্র (এনওসি) ছাড়া মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও ই-পাসপোর্টের (ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট) জন্য আবেদন করেন।
অন্যান্য আসামিরা বেনজীর আহমেদের দাফতরিক পরিচয় সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞাত থেকেও বিভাগীয় অনাপত্তি সনদ (এনওসি) সংগ্রহ ও যাচাই না করে স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ করেছেন। আসামিরা বেনজীর আহমেদের নামে সাধারণ পাসপোর্ট, ই-পাসপোর্ট (ইলেক্ট্রনিক্স পাসপোর্ট) ইস্যুর জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং বাংলাদেশ পাসপোর্ট অর্ডার ১৯৭৩ এর ১১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় বসনিয়াতে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০০২ সালের জুলাই থেকে ২০০৩ সালের জুন পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় কসোভোতে কর্মরত ছিলেন। তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে চিফ অব মিশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সেকশনে (পি-ফাইভ/ভি) ২০০৮ সালের ২ মে থেকে ২০০৯ সালের ১০ মে পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি ডিএমপি কমিশনার (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে ২০১০ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং র‌্যাবের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে আইজিপি পদে যোগদান করেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ সদর দফতরে আইজিপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ