আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের অপসারণ নয়, সহযোগী ভাবুন- ইউপি অ্যাসোসিয়েশন

নিজস্ব প্রতিনিধি :-

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা গত ইউপি নির্বাচনে প্রায় ৭৫% এর উপর সাধারণ ভোটারদের উপস্থিতিতে প্রতিযোগিতা পূর্ণ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সর্বমোট ৪৫৮০টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৬৫% চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র, বিএনপি, জামায়াত সহ অন্যান্য দলের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়। স্থানীয় সরকার কর্তৃক তাদের উপর অর্পিত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আইন-শৃংখলা রক্ষা, গ্রামীন অবকাঠামো সহ স্থানীয় প্রশাসনকে সার্বিক সহায়তা করে থাকে। জন্ম-মৃত্যু, অন্ধ, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধি ও দুঃস্থদের নিবন্ধন করা, যাচাই-বাছাই এর মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ ও মৃত্যু সনদ প্রদান করা, বিধবা, এতিম, গরীব ও দুঃস্থ ব্যক্তিদের মাঝে সরকারি সহায়তা সুষ্ঠুভাবে বিতরণ, গ্রামের রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা এবং গ্রামীণ জনসাধারণের ঝগড়া-বিবাদের মীমাংসা ও মামলা মোকদ্দমা নিস্পত্তির মাধ্যমে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। 

এবিষয়ে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন এর নেতৃবৃন্দ বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিগণ গুরুত্বপূর্ণ  ভূমিকা রেখে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে আসছি এবং বাংলাদেশের জনগণের বহুল কাঙ্ক্ষিত একটি দুর্নীতিমুক্ত জনকল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন এতে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ এসোসিয়েশন নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ একমত। আরও বলেন, সংস্কার কাজে তাদের  জোরালো সমর্থন রয়েছে এবং এই সংস্কার কাজে চেয়ারম্যান মেম্বারগণ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করতে চায়।

কিন্তু কিছুদিন যাবত সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ হয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিতিদের অনুপস্থিতির কারণে জনসেবা বিঘ্নিত হওয়ার অজুহাতে বর্তমান সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রান্তিক পর্যায়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিকল্পহীন প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের সকল চেয়ারম্যান মেম্বারদের অপসারনের উদ্যোগ নিয়েছেন। অথচ ১৯অক্টোবর প্রকাশিত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার একটি রিপোর্টে বলা হয় বাংলাদেশের সর্বমোট ৪৫৮০ জন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যে ৩,১৬৪জন চেয়ারম্যান উপস্থিত রয়েছেন এবং ১,৪১৬জন চেয়ারম্যান। ৫আগস্টের পূর্ববর্তী আন্দোলন বিরোধী নাশকতামূলক কার্যকলাপে সম্পৃক্ততায় মামলা মোকদ্দমার আসামি হওয়া বা গ্রেপ্তার হওয়া সহ বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত অথবা পলাতক রয়েছেন যার কারনে ঐসব ইউনিয়নে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। এই কারণে বাংলাদেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের অপসারণ করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তে অনির্বাচিত প্রশাসক নিয়োগের আত্মঘাতী উদ্যোগ নিচ্ছেন। কতিপয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণের অনুপস্থিতির কারণে এ ধরনের আত্মঘাতী উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণ চরমভাবে সেবা বঞ্চিত এবং হয়রানির শিকার হবেন এবং সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হবে বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালনে সর্বদা উপস্থিত ৩,১৬৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্দোষ চেয়ারম্যানদের সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা  হবে। জনপ্রতিনিধিদের পরিবর্তে প্রশাসক দ্বারা একটি ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করা প্রায় অসম্ভব বলে আমরা মনে করেন। বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ  বর্তমান অন্তর্ভুক্তি কালীন সরকারের কাছে জোর দাবি করে বলেন মাথাব্যথার জন্য মাথা কাটা নয়, মাথা ব্যাথার জন্য সঠিক চিকিৎসা করে এই নীতির আলোকে অনুপস্থিত পলাতক চেয়ারম্যানদের কে অপসারণ করে  বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ আইনের আওতায় বিধি মোতাবেক প্যানেল চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব অর্পণ করে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার মাধ্যমে সেবা প্রদান এবং পরিষদে উপস্থিত দায়িত্বরত চেয়ারম্যান মেম্বারদের অপসারণ না করে মেয়াদকালীন সময় পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগী হওয়ার সুযোগ দেওয়ার হোক।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ