আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চলছে নির্মাণকাজ

মো: গোলাম কিবরিয়া , রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নির্মাণকাজ চলছে রাজশাহীতে। নানা সমালোচনার মধ্যেই চলতি বছরের শুরুতে শুরু হয় রাজশাহীর পাঁচ ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় সেই নির্মাণ কার্যক্রম। যন্ত্রপাতি গুটিয়ে লাপাত্তা হন ঠিকাদার ও শ্রমিকরাও। তবে মাসখানেক বিরতি দিয়ে আবারও শুরু হয়েছে নির্মাণকাজ। কিন্তু এখন সেই ফ্লাইওভার নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক আর সমালোচনা। এবার নির্মাণকাজে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর বিলসিমলা রেলক্রসিং এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কাজ করছে মেসার্স মজিদ অ্যান্ড সন্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি দিনে ও রাতে প্রকাশ্যে সরাসরি বিদ্যুতের লাইন থেকে তার সংযুক্ত করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নিজেদের যন্ত্রপাতি পরিচালনা করছে। রাতে কাজ করার জন্য রাখা হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতির সংযোগও। নগরীর বিলসিমলা রেলগেট পার হয়ে নির্মাণাধীন চার নম্বর পিলারসংলগ্ন বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে দেখা গেছে। সেই বিদ্যুৎ দিয়ে ওয়েল্ডিং মেশিন চালাতেও দেখা গেছে। একই সময় নগরীর বহরমপুর রেলক্রসিং এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারেও একই চিত্র দেখা গেছে। এদিকে নগরীর হড়গ্রাম রায়পাড়া রেলক্রসিং এলাকায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কাজ করছেন মেসার্স ডেনকো লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানটিও দিনে-রাতে প্রকাশ্যে সরাসরি বিদ্যুতের লাইন থেকে তার সংযুক্ত করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে নিজেদের যন্ত্রপাতি পরিচালনা করছে। রাতে কাজ করার জন্য সেখানেও রাখা হয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটের সংযোগ। সেখানে গিয়ে দেখা য়ায়, প্রতিটি বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকেই পৃথক সংযোগ লাইন নিচে নামানো আছে। এমনকি একটি লাইন থেকে সরাসরি লোহা কাটতে ও ঝালাই করতেও দেখা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেসার্স মজিদ অ্যান্ড সন্স লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক জার্জিসুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সেখানে দুটি সংযোগ নেওয়া আছে। অবৈধভাবে কোনো বিদ্যুৎ আমরা ব্যবহার করছি না। তবে বিলসিমলা এলাকার অবৈধ লাইনের ব্যাপারে জানানো হলে তিনি এক প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। সেই প্রকৌশলী অবশ্য অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।’ এদিকে মেসার্স ডেনকো লিমিটেডের প্রকৌশলী সঞ্জয় বলেন, ‘আমরা বিদ্যুতের লাইন নামিয়ে রেখেছি। আমরা ওই লাইন ব্যবহার না করে জেনারেটর ব্যবহার করি। মূলত এগুলো সিটি করপোরেশনের রোড লাইটের লাইন থেকে নামানো।’ অবৈধ লাইনে সরাসরি লোহা কাটা ও ঝালাইয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমনটি হওয়ার কথা না। আমি কাল পরিদর্শনে গিয়ে বিস্তারিত জানাব।’ এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আল মঈন পরাগ বলেন, ‘রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কোনো বিদ্যুৎ তারা ব্যবহার করতে পারে না। যদি ব্যবহার করে থাকে, তবে এর দায়ভার তাদের নিতে হবে। আমি এক্ষুনি আমার অফিসারদের খোঁজ নিতে বলছি।’ কিছুক্ষণ পরই রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী ফোন করে জানান, মজিদ অ্যান্ড সন্স দুটি বৈদ্যুতিক মিটার সংযোগ ব্যবহার করছে। তাদের প্রতি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল আসছে। আর ডেনকো লিমিটেডের বিদ্যুৎ লাইন নেই। তারা জেনারেটরের মাধ্যমে কাজ করে। অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। রাসিকের প্রশাসক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই সিটি করপোরেশন বা অন্য কারও বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ব্যবহার করতে পারে না। অবৈধভাবে কিছু করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

আমরা তোমাকে ভুলবো না আছিয়া।

আমি যখন সংবাদে জানতে পারলাম, আছিয়া মারা গেছে। ঠিক তখনই দুমড়ে, মুচড়ে গেলাম আমি । একদম কাচের মতো টুকরো, টুকরো হয়ে গেলাম। জীবনের সাথে যুদ্ধ করে আর ঠিকে থাকা হলো না ছোট আছিয়ার। কি কারণে আমরা আজ আছিয়া কে হারালাম??? কি অন্যায়?? কি দোষ??? কি ত্রুটি ছিলো ৩য় শ্রেণীতে পড়া ছোট এই আছিয়ার??? একটাও প্রশ্নের উত্তর আমি খুজে পেলাম না। কেন

আমরা এই ছোট আছিয়ার নিরাপত্তা দিতে পারিনি??? হিংস্র কিছু মানুষ রুপী পশুর নির্মম নির্যাতনের শিকার হলো আমাদের ছোট আছিয়া। যে আছিয়া স্কুলে
যাওয়ার কথা, হেসে খেলে মুক্ত বাতাসে তার এলোমেলো চুল উড়ানোর কথা, সেই আছিয়ার কেন এই নিষ্ঠুর পরিনতি??

আমরা কি পারবো, দ্রুত সময়ের মধ্যে, আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে ?? ৩য় শ্রেণির ছাত্রী ছিলো আমাদের আছিয়া। আমরা তোমায় ভুলবো না আছিয়া। আকাশে জ্বলজ্বল করে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো আমাদের হৃদয়ে চীর স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমাদের আছিয়া।

আমরা আর কোন আছিয়াকে হারাতে দেব না। আমাদের সমাজের এই ছোট সোনামনিদের, নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে ।

সাড়ে ৫ লাখ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াবে চসিক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৬-১১ মাসের ৯০ হাজার এবং ১২-৫৯ মাসের ৪ লাখ ৭০ হাজার শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়াবে চসিক। বৃহস্পতিবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের পর চিকিৎসক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় তিনি ক্যাম্পেইন সফল করার বিষয়ে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি সম্পর্কে অবগত হয়ে দিক-নির্দেশনা দেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় উক্ত ক্যাম্পেইন সফল ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার করার লক্ষ্যে ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। যথাক্রমে কেন্দ্রীয় এ্যাডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা আয়োজন, জোন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে এ্যাডভোকেসী ও পরিকল্পনা সভা আয়োজন, ওয়ার্ড পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল বিতরণ, ব্যপকভাবে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ, সকল আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, মসজিদের খতিব ও ইমাম সাহেবদের দিয়ে প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে চসিক ।

শনিবার (১৫ মার্চ) চসিকের সাতটি ইপিআই জোনের আওতায় ৪১ ওয়ার্ডে ১ হাজার ৩২১টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ক্যাম্পেইন চলবে। ৬-১১ মাসের শিশুকে ১ লাখ ইউনিটের নীল রঙের ও ১২-৫৯ মাসের শিশুকে ২ লাখ ইউনিটের লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
চসিক মেয়র জানান, জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চসিক। ক্যাম্পেইনে বাদ পড়া শিশুদের চসিকের ব্যবস্থাপনায় চসিক পরিচালিত দাতব্য চিকিৎসালয়, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইপিআই কেন্দ্রে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। শিশুদের রাতকানা রোগ প্রতিরোধ এবং অপুষ্টি ও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষার জন্য মা, বাবা, অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান মেয়র।

মেয়র জানান, ক্যাম্পেইন চলাকালে মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণে গর্ভবতী ও প্রসূতি মা’দের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ প্রাণিজ খাবার (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা) এবং উদ্ভিজ্জ খাবার (হলুদ ফল, রঙিন শাক-সবজি) খাওয়াতে পরামর্শ দেওয়া হবে। জন্মের পর এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানোসহ প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে পুষ্টিবার্তা প্রচার করা হবে। ছয় মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি সুষম খাবার পরিমাণ মতো খাওয়াতে হবে।
এর আগে ২০২৪ সালের ১ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে চসিকের অর্জনের হার ৯৯ শতাংশ।

৬-১১ মাসের ৮৮ হাজার ৫৯০ শিশুর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৭ হাজার ৯৫৭ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল। অন্যদিকে ১২-৫৯ মাসের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৫০ শিশু। এর বিপরীতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫৯ শিশুকে ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল। অর্জনের হার ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ইমাম হোসেন রানা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ হোসনে আরা, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডাঃ তপন কুমার চক্রবর্তী, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুমন তালুকদার, ডাঃ আকিল মাহমুদ নাফে, ডাঃ আবদুল মজিদ সিকদার, ডাঃ শর্মীলা রায়, ডাঃ মামুন রশিদ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ