আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১১ রেল স্টেশন অচল 

এম মনির চৌধুরী রানা বোয়ালখালী 

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ১১টি স্টেশনে ট্রেন না থামার কারণে স্টেশনগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।  স্টেশনগুলো হচ্ছে ঝাউতলা, গোমদন্ডী, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, খানমোহনা, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চননগর, খানহাট, হাশিমপুর, লোহাগাড়া। এর মধ্যে ঝাউতলা স্টেশনটি চট্টগ্রাম সিটির মধ্যে, গোমদন্ডী, বেঙ্গুরা বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যে, ধলঘাট, খানমোহনা, চক্রশালা, খরনা এই চারটি পটিয়া উপজেলার মধ্যে, কাঞ্চননগর, খানহাট, হাশিমপুর, চন্দনাইশ উপজেলার মধ্যে স্টেশনগুলোর অবস্থান। লোহাগাড়া উপজেলার মধ্যে লোহাগাড়া স্টেশনটি রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে ঝাউতলা, ষোলশহর, জানআলীহাট, গোমদন্ডী, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, খানমোহনা, পটিয়া, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চননগর, খাঁনহাট, হাশিমপুর, দোহাজারী পর্যন্ত ১২টি স্টেশনে ৩ জোড়া ট্রেন চলত। তখন চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে হাজার হাজার মানুষ ট্রেন দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করত। স্টেশনগুলো রাতদিন কোলাহল মুখর ছিল। যাত্রী ছাড়াও ট্রেনগুলো দিয়ে লেবু, পেয়ারা, শাকসব্জি ল্যাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে পরিবহন করা হত।
চট্টগ্রাম-দোহাজারী সকালের ট্রেনে পরিবাহিত এসব পণ্য সকাল ১০টার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির ঐতিহ্যবাহী রেয়াজউদ্দীন বাজারে পৌঁছে যেত। রেয়াজউদ্দীন বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতারা নগরীর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রয় করত। ১৯৯৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ট্রেনের ইঞ্জিন সংকট দেখিয়ে ৩ জোড়া ট্রেন থেকে কমিয়ে আপ-ডাউন একটি ট্রেন চালু রাখে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বেসরকারী কোম্পানীর কাছে ৪টি ট্রেন চালুর জন্য হস্তান্তর করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতা আসলে বেসরকারী ঠিকাদার বাদ দিয়ে সরকারি ভাবে রেল কর্তৃপক্ষের অধীনে শুধু একটি ট্রেন চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে যাতায়াত করে আসছিল। এর মধ্যে ২০২১ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু হলে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রত্যেক টি স্টেশন নতুনভাবে ব্রডগেজ লাইন সিস্টেমে নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্টেশন গুলো সুন্দররূপে সাজানো হলেও ১১ টি স্টেশনে ট্রেন না থামার কারণে স্টেশন গুলো বর্তমানে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। এখানে কোন স্টেশন মাষ্টার নেই, নেই কোন কার্যক্রম। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ চালু হওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এ রোড দিয়ে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটন এক্সপ্রেস নামে ২টি ট্রেন বিরতিহীন চলাচল করে আসছে। এরমধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীদের অনুরোধে ও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির আবেদেনের প্রেক্ষিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চলতি সনের বিগত ঈদের সময় ঈদ স্পেশার ট্রেন নামে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে সকাল-সন্ধ্যা আপ-ডাউন একটি ট্রেন চালু করেছে। এই ট্রেনটি ষোলশহর, জানআলী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, রামু স্টেশনে থামে। তবে লোহাগাড়ায় আধুনিক মডেলে স্টেশন করা হলেও এখনও ষ্টেশনে কোন ট্রেন থামেনি। চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে যাত্রীদের দাবি অন্তত: ২টি ট্রেন এ রেলপথে চালু রাখা হলে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্টেশন গুলো পুনঃরায় সচল হয়ে উঠবে। এতে বাসে যাত্রীর চাপ কমে যাবে। এব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম পরিবহন কর্মকর্তা আকতার কামাল জানান, একদিকে শাখা লাইনের ট্রেন ইঞ্জিন সংকট রয়েছে অন্যদিকে কালুরঘাট সেতু অতিরিক্ত লোড নিতে পারছে না। তবুও ইঞ্জিন সংকট কাটলে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

ওসমান হাদিকে দেখতে এসে তোপের মুখে মির্জা আব্বাস।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সেনাবাহিনীর সদস্যরা মির্জা আব্বাসকে নিরাপত্তা দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ