আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১১ রেল স্টেশন অচল 

এম মনির চৌধুরী রানা বোয়ালখালী 

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে ১১টি স্টেশনে ট্রেন না থামার কারণে স্টেশনগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।  স্টেশনগুলো হচ্ছে ঝাউতলা, গোমদন্ডী, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, খানমোহনা, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চননগর, খানহাট, হাশিমপুর, লোহাগাড়া। এর মধ্যে ঝাউতলা স্টেশনটি চট্টগ্রাম সিটির মধ্যে, গোমদন্ডী, বেঙ্গুরা বোয়ালখালী উপজেলার মধ্যে, ধলঘাট, খানমোহনা, চক্রশালা, খরনা এই চারটি পটিয়া উপজেলার মধ্যে, কাঞ্চননগর, খানহাট, হাশিমপুর, চন্দনাইশ উপজেলার মধ্যে স্টেশনগুলোর অবস্থান। লোহাগাড়া উপজেলার মধ্যে লোহাগাড়া স্টেশনটি রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে ঝাউতলা, ষোলশহর, জানআলীহাট, গোমদন্ডী, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, খানমোহনা, পটিয়া, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চননগর, খাঁনহাট, হাশিমপুর, দোহাজারী পর্যন্ত ১২টি স্টেশনে ৩ জোড়া ট্রেন চলত। তখন চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে হাজার হাজার মানুষ ট্রেন দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করত। স্টেশনগুলো রাতদিন কোলাহল মুখর ছিল। যাত্রী ছাড়াও ট্রেনগুলো দিয়ে লেবু, পেয়ারা, শাকসব্জি ল্যাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে পরিবহন করা হত।
চট্টগ্রাম-দোহাজারী সকালের ট্রেনে পরিবাহিত এসব পণ্য সকাল ১০টার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির ঐতিহ্যবাহী রেয়াজউদ্দীন বাজারে পৌঁছে যেত। রেয়াজউদ্দীন বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতারা নগরীর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রয় করত। ১৯৯৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ট্রেনের ইঞ্জিন সংকট দেখিয়ে ৩ জোড়া ট্রেন থেকে কমিয়ে আপ-ডাউন একটি ট্রেন চালু রাখে। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে বেসরকারী কোম্পানীর কাছে ৪টি ট্রেন চালুর জন্য হস্তান্তর করেন। ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতা আসলে বেসরকারী ঠিকাদার বাদ দিয়ে সরকারি ভাবে রেল কর্তৃপক্ষের অধীনে শুধু একটি ট্রেন চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে যাতায়াত করে আসছিল। এর মধ্যে ২০২১ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু হলে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রত্যেক টি স্টেশন নতুনভাবে ব্রডগেজ লাইন সিস্টেমে নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্টেশন গুলো সুন্দররূপে সাজানো হলেও ১১ টি স্টেশনে ট্রেন না থামার কারণে স্টেশন গুলো বর্তমানে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছে। এখানে কোন স্টেশন মাষ্টার নেই, নেই কোন কার্যক্রম। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ চালু হওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এ রোড দিয়ে কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটন এক্সপ্রেস নামে ২টি ট্রেন বিরতিহীন চলাচল করে আসছে। এরমধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রীদের অনুরোধে ও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির আবেদেনের প্রেক্ষিতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চলতি সনের বিগত ঈদের সময় ঈদ স্পেশার ট্রেন নামে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে সকাল-সন্ধ্যা আপ-ডাউন একটি ট্রেন চালু করেছে। এই ট্রেনটি ষোলশহর, জানআলী হাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা, রামু স্টেশনে থামে। তবে লোহাগাড়ায় আধুনিক মডেলে স্টেশন করা হলেও এখনও ষ্টেশনে কোন ট্রেন থামেনি। চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে যাত্রীদের দাবি অন্তত: ২টি ট্রেন এ রেলপথে চালু রাখা হলে বন্ধ হয়ে যাওয়া কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত সৌন্দর্য্যমন্ডিত স্টেশন গুলো পুনঃরায় সচল হয়ে উঠবে। এতে বাসে যাত্রীর চাপ কমে যাবে। এব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল, চট্টগ্রাম পরিবহন কর্মকর্তা আকতার কামাল জানান, একদিকে শাখা লাইনের ট্রেন ইঞ্জিন সংকট রয়েছে অন্যদিকে কালুরঘাট সেতু অতিরিক্ত লোড নিতে পারছে না। তবুও ইঞ্জিন সংকট কাটলে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট মিডিয়ার সংবাদ নিয়ে বিশ্বাস যোগ্যতার সঙ্কট ক্রমশ বাড়ছে : মাহবুব মোর্শেদ

বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট মিডিয়ার সংবাদ নিয়ে বিশ^াস যোগ্যতার সঙ্কট ক্রমশ বাড়ছে। এ কারণেই বিবিসির মতো মৌলিক সংবাদ মাধ্যমগুলোও ‘মোজো’ (মোবাইল জার্নালিজম) চালু করেছে। তারা বুঝেছে, সুপরিশীলিত সংবাদ থেকেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কাঁচা কিন্তু বাস্তব ভিডিও বা পোস্ট মানুষের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক, কবি ও কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মোবাইল ও অন্যান্য নন কনভেশনাল মিডিয়ার কার্যকর ভুমিকার দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর আধুনিক তথ্য প্রবাহকে গ্রহন করার জন্য আমরা এখনো মানসিকভাবে তৈরী নই। এক ধরণের পুরোনো সেকেলে গণ্ডিতে আবদ্ধ হয়ে আছি। আমরা পত্রিকা পড়ব। কিন্তু নতুন প্রজন্মের সংবাদমাধ্যমকে গ্রহণ করাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে “মুক্ত গণমাধ্যম ও আগামীর চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী আর রাজী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্র্রফেসর এস. এম. নসরুল কদির, মুখ্য আলোচকের বক্তব্য দেন চবি যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক।
বাসস’র প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণ করার মধ্য দিয়েই আমরা সামনে এগোতে পারব। যেসব দিক নেতিবাচক, সেগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। দমন, পীড়ন, নিয়ন্ত্রণ, বন্ধ করে দেওয়া, এই মানসিকতা ত্যাগ না করলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমরা যখন একটি প্রজন্মের ব্যবহৃত ডিভাইসকে শত্রু হিসেবে দেখি, তখন আসলে সেই প্রজন্মকেই বলছি; এই জায়গা দিয়ে দেশের মুক্তি আসবে না। কিন্তু ২০২৪-এ যে নতুন বাংলাদেশ তৈরি হয়েছে, সেখানে আমাদের ওপেন, গণতান্ত্রিক মানসিকতা নিয়ে এগোতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কর্পোরেট ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে পরিচালিত যে সংবাদপত্র-টেলিভিশনগুলো আছে, যেগুলো মূলত মালিক, সরকার ও আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এবং যাদের সাথে নৈকট্য বেশি আমরা সেসব গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই।

বাসস’র প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে আমরা অনেকেই অংশ নিয়েছিলাম। যদি আমরা স্মরণ করি, তখন প্রচলিত গণমাধ্যমের ভূমিকা কী ছিল, রাষ্ট্রীয়ভাবে নিবন্ধিত পত্রপত্রিকা বা যেসব প্রতিষ্ঠানে আমাদের পরিচিতরা কাজ করেন, সেসব মাধ্যমে আমরা কি সেই অভ্যুত্থানের খবর যথেষ্টভাবে দেখতে পেয়েছি ? একদমই কম পেয়েছি। প্রায় সবগুলো টেলিভিশনই ‘বিটিভি’ হয়ে গিয়েছিল। তারা যেন সরকারি প্রচারের মুখপাত্রে রূপ নিয়েছিল। প্রচলিত, নিবন্ধিত, কনভেনশনাল মিডিয়ার বৃহৎ অংশই হয় এই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে, নয়তো একে পুরোপুরি ব্ল্যাকআউট করেছে। তাহলে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের খবরগুলো কে ছড়িয়েছে ?

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর এস. এম. নসরুল কদির বলেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে এসেও “মুক্ত গণমাধ্যম ও আগামীর চ্যালেঞ্জ” নিয়ে আমাদে;র আলোচনা করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা কী, মুক্ত কী, গণমাধ্যম কী, সংবাদ মাধ্যম কী, এসবের একটা বিচার বিশ্লেষণ প্রয়োজন। আমরা প্রত্যেকেই যদি প্রত্যেকের জায়গায় সৎ থাকি, তাহলেই আমরা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

মুখ্য আলোচক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, অবাধ তথ্যের কথা বলে অন্যের চরিত্র হরণ, অন্যের নামে অপবাদ দেওয়া, অপতথ্য-মিথ্যাতথ্য প্রচারের মত অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভুমিকা রাখতে হবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিশ^াসযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রেল লাইনের মত সমান্তরালভাবে চলতে হবে।

আলোচনা সভার ধারণাপত্র উপস্থাপক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলী আর রাজী বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ‘মুক্ত সংবাদমাধ্যম’ চায় কারণ গণতন্ত্রের বেঁচে বা টিকে থাকার শর্তই হচ্ছে ‘মুক্ত সংবাদমাধ্যম’। এরা পরস্পর ‘পারস্পরিকতাবাদ’ বা ‘মিউচুয়ালিজম’-এ আবদ্ধ। গণতন্ত্র ঠিকাতে হলে ‘মুক্ত সংবাদমাধ্যম’ চাই আর ‘মুক্ত সংবাদমাধ্যম’ ঠিকাতে চাইলে গণতন্ত্র চাই।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য গোলাম মাওলা মুরাদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সাত্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সায়মা আলম, এ্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি ইঞ্জি. সেলিম মো. জানে আলম, এডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান, সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, দৈনিক ইনকিলাবের ডেপুটি ব্যুরো প্রধান রফিকুল ইসলাম সেলিম, দৈনিক আমার দেশের ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ