আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

আকাশ মন্ডল একাই সাতজনকে হত্যা করে : র‍্যাব

স ম জিয়াউর রহমান

চাঁদপুরের হাইমচরে জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান (২৬) ক্ষোভ থেকে জাহাজের মাস্টারকে হত্যা করেন। পরে ধরা পড়ার ভয়ে অন্যদেরও হত্যার পরিকল্পনা করেন। তিনি একাই এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। তাকে গ্রেপ্তারের পর আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

আজ ২৫ ডিসেম্বর বুধবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লা নগরের শাকতলা এলাকায় র‍্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং হয়।
সেখানে এ সব তথ্য জানান র‍্যাব-১১-এর উপ–অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
র‍্যাব জানান, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পাওয়ার জেরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজের মাস্টারের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন আকাশ। ঘটনার সময় খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রথমে মাস্টারকে হত্যা করেন তিনি। এরপর চিন্তা করেন, অন্যরা জীবিত থাকলে তিনি সহজেই ধরা পড়ে যাবেন। তখন জাহাজে থাকা বাকি সবাইকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। জাহাজে থাকা অন্য সাতজনকে আঘাত করেন। এর মধ্যে একজন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা জাহাজটিতে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‍্যাব-১১ ও র‍্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারি থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। তিনি জাহাজটিতে প্রায় ৮ মাস ধরে লস্কর পদে কর্মরত ছিলেন।
এদিকে বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পেশকৃত ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে, আন্দোলন করছে। যদি মালিক পক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতেন, তাহলে হয়তো এ ধরনের নারকীয় ঘটনা ঘটতো না। চাকরি করে নিয়মিত বেতন ভাতা না পাওয়ার ফলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষোভে পরবর্তীতে হত্যার মতো ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের নারকীয় ঘটনা কোন মতে কাম্য নয়। তিনি বলেন আরও অধিকতর তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে ঘটনার সাথে জড়িত ছিল যারা, তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে এবং নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সহ পরিবারের সদস্যকে চাকরি দিতে হবে, আহতদের কে সরকারি খরচে চিকিৎসা ও আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হউক। ক্ষোভ প্রকাশ করে মো : নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, মালিক পক্ষ শ্রমিকদের স্বার্থ চিন্তা করে না কখনো। মালিক পক্ষ আমাদের ১১ দফা দাবি না মানলে এ ধরনের নারকীয় ঘটনা আরও ঘটবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ