আজঃ রবিবার ২৩ মার্চ, ২০২৫

রাজশাহীতে আলু চাষিদের সমাবেশ

মো: গোলাম কিবরিয়া রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীর তানোরে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সমাবেশ। তানোর উপজেলার গোল্লাপাড়া বাজারেহিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীর তানোরে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সমাবেশ করে।হিমাগারে আলু রাখার ভাড়া চার টাকা কেজির পরিবর্তে আট টাকা করার প্রতিবাদে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। তানোর উপজেলার গোল্লাপাড়া মাঠে সমাবেশে তাঁরা বলেছেন, দেশে বিদ্যুতের দাম বাড়েনি অথচ অযৌক্তিকভাবে হিমাগারের আলুর ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হলে আবার সমাবেশ করে হিমাগার ঘেরাও করা হবে।সমাবেশে জানানো হয়, গত বছর হিমাগারে আলু রাখায় বস্তাপ্রতি ‘পেইড বুকিং’ ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকা। সাধারণ ভাড়া বা ‘লুজ বুকিং’ ছিল ২৮৫ টাকা পর্যন্ত। সরকারিভাবে বস্তায় ৫০ কেজি পর্যন্ত আলু রাখার নিয়ম; কিন্তু সচরাচর কৃষকেরা ৬০-৬৫ কেজি পর্যন্ত আলু রাখার সুযোগ পান। পেইড বুকিং আলু ওঠার এক বছর আগেই দিতে হয়। আর লুজ বুকিংয়ের ভাড়া আলু হিমাগার থেকে বের করার সময় পরিশোধ করতে হয়। সব মিলিয়ে প্রতি কেজি আলুর জন্য গড়ে হিমাগারের ভাড়া পড়ে পাঁচ টাকা।

বক্তারা বলেন, এবার ইতিমধ্যে বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ সমিতি প্রতি কেজি আলুর ভাড়া নির্ধারণ করেছে আট টাকা। বিভিন্ন দেশে শিল্পপতিরাই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। আর এখানে হিমাগারের মালিকেরা কৃষকদের শোষণ করছেন। এটা মানা যায় না। এবার একটু বেশি আলু চাষ দেখেই হিমাগারের মালিকেরা সিন্ডিকেট করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেন, গত বছর যে ভাড়ায় আলু রেখেছেন, এবারও সেভাবেই আলু রাখবেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী আলুচাষি ও জেলা আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম। সমাবেশ শেষে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।

হিমাগারের মালিকেরা ব্যবসায়ী বা কৃষকের সঙ্গে আলোচনা না করেই ভাড়া বাড়িয়েছেন বলে জানান, পবা উপজেলার বড়গাছি এলাকার আলুচাষি ও ব্যবসায়ী ইমরান আলী। প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, ‘হিমাগারের মালিকেরা কি বাংলাদেশের বাইরের লোক? আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে ম্যানেজার যা বলবে তা হবে না। আমরা সফল হব। গত দুই বছর থেকে চাষিরা হয়তো দুই টাকা লাভ করছে, এইটা আর তারা সহ্য করতে পারছে না।

হিমাগারে আলুর ভাড়া বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই দাবি করে কৃষক আবু সাঈদ বলেন, ‘দেশে এখন বিদ্যুতের দাম বাড়েনি। ভবিষ্যতে আলোচনার মাধ্যমে তারা যদি আমাদের সঙ্গে একমত না হয়, তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলব এবং ন্যায্য দাবি আদায় করব।’ আলুচাষি ও তানোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আবদুল মান্নান বলেন, ‘হিমাগার ব্যবসায়ীরা যা খুশি তা করতে পারবে না। আমরা রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করব।’

১০ জানুয়ারির মধ্যে হিমাগারের মালিকেরা যদি কৃষকদের দাবি না মানেন তাহলে আবার সমাবেশের আয়োজন করা হবে। হিমাগার ঘেরাও করা হবে।
আবদুল মতিন, তানোর আলুচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক
‘চাষি বাঁচলে দেশ বাঁচবে, সবাই বাঁচবে’ উল্লেখ করে কাজী রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যদি না বাঁচি, দশতালা ভবনে খাবার যাবে না। আমরা যদি জমিতে না যাই তাহলে চাকরিজীবী বাজারে গিয়ে কিছু পাবে না। যারা সিন্ডিকেট করে ভাড়া বাড়াচ্ছে, তাদের আমাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য একত্র হতে হবে।’

তানোর আলুচাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন জানান, আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে হিমাগারের মালিকেরা যদি কৃষকদের দাবি না মানেন তাহলে আবার সমাবেশের আয়োজন করা হবে। হিমাগার ঘেরাও করা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বাগমারায় প্রতিবন্ধিদের পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা প্রশাসন।

রাজশাহীর বাগমারার সেই প্রতিবন্ধী পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হুইল চেয়ার বিতরণের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

প্রথম আলোর অনলাইনে ” স্বামী- স্ত্রীসহ ৮ সদস্যের পরিবারে ৬ জনই প্রতিবন্ধী” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি নজরে আসে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলামের। তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংবাদ কর্মীদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নেন পরিবারটির। পরিবারের উপার্জনক্ষম স্বাভাবিক থাকা রেজাউল হককে নিজ দপ্তরে ডেকে পাঠান। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং মূল সমস্যাগুলো শোনেন। পরিবারের কয়েক সদস্যের হুইল চেয়ারের প্রয়োজন হওয়াতে দ্রুত তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের প্রতিবন্ধী সদস্যদের প্রতিনিধি স্বাভাবিক রেজাউল হককে নিজ দপ্তরে ডেকে তাঁদের চলাচলের জন্য হুইল চেয়ার ও ট্রাইসাইকেল দেন। এছাড়াও একই সময়ে উপজেলার আরও ২৪জন প্রতিবন্ধীকে হুইল চেয়ার ও ছয়জনকে ট্রাইসাইকেল দেওয়া হয়। চেয়ার পেয়ে খুশি হন পরিবারের সদস্যরা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী খলিলুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। আরিকুল্লাহ বলেন, আগে ঘর ও বারান্দায় সময় কাটাতে হতো, চেয়ার পাওয়াতে আপাতত উঠান ও বাড়ির আশপাশে যেতে পারবো। নিজেও কিছু একটা কাজ করতে পারবো।

বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম জানান, তিনি পত্রিকার মাধ্যমে পরিবারের দুর্দশার কথা জেনেছেন। প্রাথমিক সহায়তা শুরু করা হলো। পরিবারের অসহায়ত্বের কথা ও দ্রুত প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে সহায়তা করা হবে। এছাড়াও আর্থিক সহায়তা করা হবে। স্থায়ী উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

আরিকুল্লাহ–রেজিয়া দম্পতির বাড়ি রাজশাহীর বাগমারার গনিপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামে। তাঁরাসহ পরিবারের মোট সদস্য আটজন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। যদিও কেউই প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করেননি। ১১-১২ বছর বয়সে এসে অসুস্থতা থেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাঁরা। এখন বিনা চিকিৎসায় আর খাবারের সংকটে কোনোমতে দিনযাপন করছেন। তাঁদের দেখভাল করা স্বাভাবিক থাকা ছেলে রেজাউল হক এখন পর্যন্ত বিয়েশাদি করেননি।

ভ্যান চালককে কুপিয়ে টাকা ছিনতাই।

রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক ভ্যান চালকে মারাত্মকভাবে কুপিয়ে টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের সেনভাগ গাওপাড়া ঢালান এলাকার মোঃ আলমগীরের ছেলে, আলম আলী নাটোর-রাজশাহী মহা সড়ক দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে হেলমেট পরা তিন যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে এসে পথ আগলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে, আলমের নিকট থাকা ১৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন দিন দুপুরে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। আলমের দুই পা, দুই হাত, বুকে এবং পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়

পরে সেখান থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেন। দিনে দুপুরে এমন ঘটনায় ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওই ঘটনায় এখন ওকে গ্রেপ্তার হয়নি।

এ বিষয়ে আহত আলম আলী বলেন, আমি হেঁটে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলাম পিছন থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমাকে ডাক দেয়। আমি কাছে যেতেই আমার উপর ছুরি চাপাতি দিয়ে হামলা চালায় এবং আমার মাথায় বাড়ি দিয়ে ফেলে দেয়। পরে আমার কাছে থাকা ১৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তারা পালিয়ে যায় তারা তিনজনেই হেলমেট পড়া ছিল।

এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন জানান, এই ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ