আজঃ শনিবার ৮ নভেম্বর, ২০২৫

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা দলীয়করণ করার বিপক্ষে। তারেক রহমানের নির্দেশ, আমরা কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করতে চাই না। বাংলাদেশটা ধ্বংস হয়ে গেছে দলীয়করণের কারণে। প্রত্যেকটি জায়গায় দলীয়করণ করতে করতে দেশ আজ এ জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে।

নতুন বছরের প্রথমদিন বুধবার (১ জানুয়ারী) দুপুরে নগরীর মেহেদীবাগস্থ বাসভবনে চট্টগ্রাম বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের উদ্যোগে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বঞ্চিত ব্যাবসায়ী ফোরামের আহবায়ক এস এম সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও ফোরামের পরিচালক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী রোকন উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ এর সাবেক সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী।

ব্যবসায়ীদের হয়ে কে নেতৃত্ব দিবে তা নিজেদের মধ্যে ঠিক করতে হবে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, যখন আমি মন্ত্রী ছিলাম তখন কে কোথাকার, কোন চেম্বারের, কোন এসোসিয়েশনে কে হবে, সেসব মাথা ঘামায়নি। কারণ, এটা একেবারে উচিত না। আপনাদের নেতা আপনাদের নির্ধারণ করতে হবে। কে নেতৃত্ব দিবে সেটার সিদ্ধান্ত আপনাদের। সেখানে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। আমরা (বিএনপি) চাইও না।

দেশের মানুষের মনোজগতের বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, তা ধারণ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশটা শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে মানুষের মনোজগতের যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে, সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি না। এই পরিবর্তনের সাথে যারা নিজেদের ধারণ করতে পারবে না, আগামী দিনে সে রাজনীতিবিদ হোক, আর যেই হোক তার কোনো ভবিষ্যৎ নেই দেশে। মানুষের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা, ধারণা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে গেছে। রাজনীতিও আগের মতো চলবে না।

ব্যবসায়ে নতুন ধারণা, সততা ও স্বচ্ছতা আনতে হবে জানিয়ে সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের (ব্যবসায়ী) ট্রেড বডিও চলবে না।এগুলোর মধ্যে নতুন ধারণা আনতে হবে। এখানে সততা আনতে হবে, স্বচ্ছতা আনতে হবে। মানুষ যাতে বাইরে থেকেও দেখতে পারে, ভেতর থেকেও দেখতে পারে। এরমধ্যে ঘোলাটে করার সুযোগ নেই। তাই এটা আমাদের সকলকে ধারণ করতে হবে।

দেশকে পরিবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি দিয়ে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, এ সুযোগ যদি আমরা দেশকে পরিবর্তন করার জন্য এবার ব্যবহার করতে না পারি, তাহলে আমরা সকলে ডুবে যাব। রাজনীতিবিদরা ডুববে, দেশের জনগণ ডুববে, ব্যবসায়ীরা ডুববে, সিএনএফ এসোসিয়েশনও কাজ করতে পারবে না। তাই এ সুযোগটা নিতে হলে সকলের মধ্যে সততা, স্বচ্ছতা, নতুন ভাবনা এবং নতুন চিন্তায় আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশটা যেভাবে দলীয়করণ এবং লুটপাটের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সিএনএফ এসোসিয়েশন কিন্তু তার বাইরের কেউ না। শুধু যে চট্টগ্রাম সিএনএফ এসোসিয়েশন ধ্বংস হয়েছে তা নয়, দেশে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই এভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, এ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুক্ত করে সকলের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া। দল হিসেবে এ দায়িত্বটা পালন করছি। কে নেতৃত্বে যাবে, কোন দল যাবে, এসবের মধ্যে আমরা (বিএনপি) নেই। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করবো যাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারি।

ব্যবসায় নেতৃত্ব ভালো না হলে প্রতিষ্ঠানে ক্ষতি জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, আপনারা নেতৃত্ব যদি ভালো আনতে না পারেন, এতে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের তো হবেই, অর্থনীতিরও হবে। তবে সবচেয়ে বেশি আপনাদের প্রতিষ্ঠান ক্ষতি হবে। আপনারা যারা মেম্বার আছেন, তাদের নিজেদের স্বার্থ এবং দেশের স্বার্থ দেখতে হবে। কিন্তু আমরা নিজেদের স্বার্থ নিয়ে এতো গভীরে চলে যায়, তখন আমরা দেশের স্বার্থ দেখি না।

প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে হলে দোসরদের জায়গা দেওয়া যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে হলে দোসরদের জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি দোসরদের জায়গা দেওয়া হয় তাহলে নিজেদেরই ক্ষতি হবে। তাই আপনাদের নিজেদের অবস্থান নিতে হবে। বাইরে থেকে গিয়ে কিছু করতে পারবেন না। দোসররা যাতে ফিরে না আসে, যারা লুটপাট করেছে, দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দেশের রাজনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে, প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই দোসররা যদি আবার আপনাদের এখানে ফিরে আসে। তাহলে সেখানে তো আপনারা নিজেরাই আত্মহত্যা করবেন। এরজন্য আপনাদের যে অবস্থান নেওয়া দরকার, তা আপনাদের (ব্যবসায়ী) নিতে হবে। বাকিরা আপনাদের সহযোগিতা করতে পারবে, কিন্তু আপনাদের কাজ আর কেউ করতে পারবে না। এজন্য শক্ত অবস্থান নিতে হবে।

মাঝামাঝি অবস্থাণে কোনো লাভ হবে না জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, এখানে মাঝামাঝি কোনো অবস্থান নেই। মাঝামাঝি গেলে আপনাদের কোনো লাভ হবে না। দোসরদের বিরুদ্ধে যারা শক্ত অবস্থান নিয়েছে, তারা সফল হয়েছে। আর যারা নিতে পারে নাই, চেষ্টা করেছে, আবার ভাবছে সম্পর্কের কথা এখানে এসবের কিন্তু কোনো জায়গা নেই।

দোসরদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আপন ভাই হলেও দোসরদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। আমরা আত্মীয়স্বজন আছে যারা দোসরদের সঙ্গে ছিল, তাদের আমি বাসায়ও প্রবেশ করতে দিই না।

দোসরদের নির্বাচন তো দূরের কথা আগে জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, যারা এত বছর লুটপাট করেছে, এদের ফিরে আসার কোনো অধিকার নেই। আর ফিরে আসার দরকারও নেই, এদের তো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে গেছে। তাদের আর ব্যবসা করার দরকার নেই। এদের এখন জেলে দেওয়া দরকার শুধু। তাদের যারা হাজার কোটি টাকার মানুষ হয়েছে, তারা কেউ নিয়মের মাধ্যমে হয়নি। অনিয়মের মাধ্যমেই হয়েছে, তাই এদের জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে। নির্বাচন করা তো দূরের কথা, তাদের তো দেশের মানুষের সামনে, আইনের সামনে জবাবদিহিতা করতে হবে। প্রথমে জবাবদিহি তারপর নির্বাচনের ব্যাপার। সেটা অনেক পরের কথা। শেখ হাসিনার মতো বিভিন্ন এসোসিয়েশনের যারা পালিয়ে গেছেন তারাও মেসেজ কলের মাধ্যমে নির্দেশ দেন। যারা এসব নির্দেশ গ্রহণ করে তাদেরও জেলে দেওয়া দরকার।

এস এম ফজলুল হক বলেন, বাংলাদেশের ট্রেড বডি ও এসোসিয়েশনগুলোকে বাদ দিলে কোন অর্থনীতিই হয় না। অর্থনীতি ছাড়া দেশ চলতে পারে না। দেশে যত ট্রেড বডি ও অ্যাসোসিয়েশন আছে সবগুলোকে দেখভাল করে দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে। তার সাথে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, কিছু ট্রেড বডি ও অ্যাসোসিয়েশনকে বাদ দিলে বাকিগুলো গার্বেজের মত। আমির খসরু নির্দেশ দিয়েছেন এইগুলিকে দূষণমুক্ত করে সুশৃংখলভাবে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তাই বিগত দিনে যেসব ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারেন নাই, আপনারা সুসংগঠিত হোন। দেশের স্বার্থে দুর্নীতিমুক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুন।

এরশাদ উল্লাহ বলেন, বিগত দিনে যারা সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের দায়িত্বে ছিল তারা সিএন্ডএফকে খনি পেয়েছে মনে করতো। সেখানে তাদের যে সিন্ডিকেট আছে তা ভাঙতে হবে। সিএন্ডএফে সব তো ফ্যাসিবাদের ভোটার।তাদেরকে বাদ না দিলে নির্বাচনে গিয়ে কোন লাভ হবে না। এনবিআরের সংস্থার কমিটির কাছে তাদের অনিয়মের বিষয়ে জানাতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিতে হবে। নতুন করে কমিশন গঠন করতে হবে।

নাজিমুর রহমান বলেন, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। ব্যবসা বাণিজ্যের মূল প্রাণ কেন্দ্র এই চট্টগ্রাম। বিগত ১৭ বছর ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে ব্যবসা করতে দেওয়া হয়নি। সাধারণ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। তাই আগামী সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের নির্বাচনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। নির্বাচনে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ব্যবসাবান্ধব সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন নিশ্চিত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এস এম সাইফুল আলম বলেন, বিগত সরকারের দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের দৃঢ় ভূমিকার কারণে চট্টগ্রাম চেম্বারকে আমরা কলঙ্ক মুক্ত করতে পেরেছি। আমাদেরকে অনেক প্রলোভন দেখিয়েছে কিন্তু আমরা কোন কম্প্রমাইজ করি নাই। সাধারণ ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমরা চট্টগ্রাম কাস্টম সিএনএফ এসোসিয়েশনে অযাচিত হস্তক্ষেপ করি নাই। কোন প্রকার জোর জবরদস্তি করি নাই। নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে অনেক ব্যবসায়ীর আপত্তি আছে। এই কমিশনের অধিনে যদি নির্বাচন করে সেটি প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী শওকত আলী, আবু ছালেহ, এড. ওমর ফারুক, আবদুল্লাহ আল মিলন, ওয়াহিদ মুরাদ, নুরুল হক, নুরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, আলী আহসান, আলমগীর সরকার, এনামুল হক চৌধুরী, এ এস এম ইসমাইল খান, মোরশেদুল আলম, শাহনেওয়াজ রুমি, তাজুল ইসলাম, গোলাম নবী, মো. আলমগীর, আবু তাহের, উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী ফোরামের জয়নাল আবেদীন জিয়া, হুমায়ুন কবির সোহেল, জামাল উদ্দিন বাবলু সহ বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ী।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত “প্রজেক্ট অধরা” মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা — আমাদের দেহ, আমাদের যত্ন।

হাল্ট প্রাইজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করছে “প্রজেক্ট অধরা”— একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও সম্প্রদায়মুখী উদ্যোগ, যা নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লজ্জা, কুসংস্কার ও ভুল ধারণা দূর করতে কাজ করে। এই উদ্যোগ এস ডি জি ৩ (সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল) এবং ৪ (গুণগত শিক্ষা)-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ৪ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে ফতেয়াবাদ শৈলবালা সিটি কর্পোরেশন হাই স্কুলে যেখানে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাল্ট প্রাইজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২৫/২৬ সনের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অফ স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা। পাশাপাশি এই প্রকল্পটির নেতৃত্ব দেন তানজিফ হাসান‌, নিশাত তাহসিন চৌধুরী এবং কমিউনিটি এনগেজমেন্ট টিমের সকল সদস্য। তাঁরা সবাই একত্রে মাসিক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক জ্ঞান প্রদান এবং ভ্রান্ত ধারণা দূর করার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করেন।

কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে মাসিক সম্পর্কে স্পষ্ট, সহানুভূতিশীল এবং আত্মবিশ্বাসী আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। সেশনে আলোচনা করা হয় মাসিক কীভাবে শুরু হয়, কীভাবে রক্তপ্রবাহ ঘটে, মাসিক চলাকালীন কীভাবে নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত এবং এই সময়ে কোন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি অনুসরণ করা জরুরি। আয়োজকরা উল্লেখ করেন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই এ সময় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং যথাযথ যত্ন নেওয়া অপরিহার্য।

সেশনের শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও উৎসাহ বৃদ্ধি করতে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যা আলোচিত বিষয়গুলোকে আরও সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। অংশগ্রহণকারীদের মাঝে নিজস্বভাবে প্রস্তুত করা উপহার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে, যা তাদের শেখার আগ্রহ ও সম্পৃক্ততাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও, অংশগ্রহণকারী ছাত্রী, শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষিকার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় তাঁদের মতামত, অভিজ্ঞতা এবং কর্মশালা-পরবর্তী উপলব্ধি জানতে। অনুষ্ঠানে বার্তা দেওয়া হয় যে নারীর মাসিক স্বাস্থ্য কোনো লজ্জার বিষয় নয়, এটি তাদের শরীর ও জীবনের একটি প্রাকৃতিক চক্র। এই বিষয়টি লুকিয়ে নয়, বোঝা ও যত্ন নেওয়া উচিত — কারণ
আমাদের দেহ, আমাদের যত্ন — প্রতিটি চক্রই গুরুত্বপূর্ণ।
এর পাশাপাশি আরও নতুন তথ্য ও আপডেট জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হাল্ট প্রাইজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটি অনুসরণ করুন।

চট্টগ্রামে প্রবাসীর ১৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট, আসামি গ্রেফতার

চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ডাকাতি মামলার পলাতক আসামি মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাদ্দাম হোসেন ভোলার লালমোহন থানার দুলা মিয়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে।

র‌্যাব-৭’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান, গত ২১ জুলাই সাড়ে ৮টায় দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ সামসুদ্দিন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে এ কে খান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে লিংক রোড় এলাকায় ডাকাতদল নগদ টাকাসহ ১৯ লাখ ৮২ হাজার ২০০ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ৩/৪ জনকে আসামি করে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে এ মামলার আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ