আজঃ বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

বিদেশ পাঠানোর কথা বলে ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও

মো: গোলাম কিবরিয়া রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ৩ কোটি টাকা নিয়ে উধাও দম্পতি।বিদেশে পাঠানো ও চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন এক দম্পতি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী সুকতারা বেগম গা ঢাকা দিয়েছেন।

 

৪ জানুয়ারি গোদাগাড়ীতে এক সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিকার চেয়েছেন এলাকার প্রতারিত ৩৫ জন নারী পুরুষ। তারা টাকা ফেরত পেতে পথে পথে ঘুরছেন। তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগও করছেন না ওই দম্পতি। টাকা ফেরত চাইলে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়া হচ্ছে ।

 

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগে জানা গেছে, মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী বাসুদেবপুর হাইকেয়ার মোড়ের বাজারে একটি দোকানঘর ভাড়া নিয়ে তৈরি পোশাকের দোকান দেন। সেই সুবাদে এলাকার মানুষের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। মনিরুজ্জামান ও সুকতারা দম্পতি উদ্যোক্তা তৈরি, বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির ব্যবস্থা করা, স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ পাইয়ে দেওয়া, বিদেশে লোক পাঠানো ও কর্মসংস্থানের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান, কাঁথা সেলাই করে ঢাকার বাজারে বিক্রি ও হাতের কাজ শেখানোর কথা বলে এলাকাবাসীকে আকৃষ্ট করেন।

প্রতারণার কৌশল হিসেবে এলাকাবাসীর কাছ থেকে টাকা জমা নেওয়া শুরু করেন। আবার জমা টাকার ওপর কয়েকজনকে এক দুই মাস কিছু কিছু পরিমাণে লাভ দেন।

ভুক্তভোগী শারমিন খাতুন অভিযোগে বলেন, মনিরুজ্জামান ও সুকতারা দম্পতি এলাকার ৩৫ জনকে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়ে ঋণের সমুদয় টাকা নিজের কাছে রেখে দেন। ভুক্তভোগীদের বলা হয় ঋণের টাকা তার কাছে নিরাপদে থাকবে এবং ঋণের কিস্তি তারাই পরিশোধ করবেন। মাঝখান থেকে ঋণ গ্রহীতারা মাসে মাসে ভাল অংকের লাভ পাবেন। এছাড়া এলাকার আরও কয়েকজনকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে মোটা অংকের টাকা নেন। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকরির কথা বলে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাসুদেবপুর এলাকায় জমি কিনে একটি পাকা বাড়ি তৈরি করেন।

 

ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, তারা এই দম্পতির প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে টাকা ফেরতের জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। কিন্তু নানা কৌশলে সে বুঝিয়ে সময়ক্ষেপন করেন। এদিকে গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরপরই একদিন রাতের আঁধারে উধাও হয়ে যান মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী সুকতারা বেগম। এরপর থেকেই তাদের ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

ভুক্তভোগীরা টাকা উদ্ধারের জন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গিয়ে তাদের সন্ধান পান। তবে টাকা উদ্ধার করতে পারেননি কেউ। উল্টো তাদেরকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি দেওয়া হয়েছে। অবশেষে ভুক্তভোগীরা গোদাগাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

 

ভুক্তভোগীদের পক্ষে শারমিন খাতুন বলেন, আমরা টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। প্রতারক এই দম্পতি অনেক মানুষকে সর্বস্বান্ত করে এলাকা থেকে উধাও হয়েছেন। মোবাইল ফোন নম্বর বদলে ফেলেছেন। ফলে তাদের সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তারা প্রতারক দম্পতিকে গ্রেফতার করে আইনী প্রতিকারসহ টাকা ফেরত চান।

ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া মনিরুজ্জামান ও তার স্ত্রী সুকতারা বেগমের মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরগুলি বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হনুমান উদ্ধার,চকরিয়া সাফারি পার্কে অবমুক্ত

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল মোড়ে লোকালয়ে ঢুকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে একটি মুখপোড়া হনুমান। আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হনুমানটি আহত অবস্থায় সড়কে পড়ে গেলে স্থানীয় দুই যুবক মো. মুন্না ও ফয়সাল তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে।

মুন্না জানান, হনুমানটি সকাল থেকে ভবনের ছাদ ও গাছে লাফালাফি করছিল। দুপুরের দিকে একটি গাছ থেকে ছাদে লাফ দিতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যায়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা এসএম সাইদুল আলম সাঈদ বলেন, “হনুমানটির আংশিক লোম পুড়েছে, তবে গুরুতর জখম হয়নি। তাকে স্যালাইন দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং এখন অনেকটাই সুস্থ।

পরে বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বনবিভাগের চট্টগ্রাম সদর রেঞ্জার মুহাম্মদ ইসমাইল হোসাইন জানান, “এটি একটি মুখপোড়া হনুমান, যা প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রাণিটিকে চকরিয়া সাফারি পার্কে পাঠানো হবে, যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকবে।”তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের উদ্ধার ও চিকিৎসা উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মুন্না ও ফয়সালকে ধন্যবাদ জানাই তাদের মানবিকতার জন্য।”

কালিয়াকৈরে পৌর বজ্রের দখলে আঞ্চলিক সড়ক শালবন মানুষের দুর্ভোগ।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভা দেশের উন্নত পৌরসভার তালিকায় থাকলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রয়েছে চরম অব্যবস্থা।

সোমবার (২১এপ্রিল) সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় ডাম্পিং ব্যবস্থাপনা থাকলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। নজরদারির অভাবে শহরের সড়ক, ফুটপাত ও শালবন আবাসিক এলাকা ক্রমশই পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাগাড়ে।

পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিকাটা এলাকার সফিপুর-বড়ইবাড়ী আঞ্চলিক সড়কে দেখা গেছে, দিন-রাত সেখানে ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। নির্দিষ্ট ডাম্পিং জোন থাকা সত্ত্বেও তা এড়িয়ে ঠিকাদাররা সড়কের ওপরেই ময়লা ফেলছেন, ফলে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার কারণে এ সড়ক দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলেও সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ ভোগান্তি। দুর্গন্ধে আশেপাশের বাড়িঘরেও অবস্থান করা দায় হয়ে পড়েছে। কখনো কখনো রাস্তা এতটাই ময়লায় ভরে যায় যে, পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় চলাচল।

একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কালামপুর পূর্বপাড়া এলাকায়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে মহল্লার প্রবেশপথে সরকারি শালবনের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে চলাচলেও তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।

এছাড়াও কালিয়াকৈর হাইটেক সিটির পাশে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত ভবনের জমিও দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনায় সয়লাব হয়ে রয়েছে।

নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত কালিয়াকৈর পৌরসভায় কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করে। আবাসিক এলাকার বর্জ্য অপসারণে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের ক্ষোভ ও হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আজ থেকেই অতিরিক্ত পরিবহন সংযুক্ত করে ময়লা অপসারণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ বলেন, নাগরিক ভোগান্তির বিষয়টি আমরা অবগত। পৌর এলাকায় অব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। শহরের পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজন হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব কালিয়াকৈর গড়ে তোলা।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ