আজঃ বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

চমেক হাসপাতালে ২৮৫ কোটি টাকার বার্ন ইউনিট নির্মাণে পাহাড় কাটার কথা স্বীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট নির্মাণ প্রকল্পে পাহাড় কাটার অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তছলিম উদ্দীন। তিনি পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করেন এবং এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি বলে জানান। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশে

কাজ বন্ধ রাখা হয়। আমরা পরিবেশে অধিদপ্তরের কাছে ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করবো। ছাড়পত্র পেলে সে অনুযায়ী কাজ করবো।বুধবার চমেক হাসপাতাল পরিচালকের সভাকক্ষে অংশীজনদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ভৌত অবকাঠামোগত কাজ করার আগে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়কে ঢালু আকারে কেটে এতে চীনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কলাম বসানো হবে। এর ফলে ভবিষ্যতে

 

পাহাড় ধসের শঙ্কা কমে আসবে। যে জায়গায় পাইলিং করা হবে সেখানে উন্নতমানে ঘাস লাগানো হবে। যাতে বৃষ্টি হলে তা গড়িয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্কাশন করা যায়।
তিনি আরও জানান, এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২ বছর। কিন্তু চীনা প্রতিনিধি দল নির্ধারিত সময়ের আগে এই কাজ শেষ করে ফেলতে পারবে বলে জানিয়েছে। তাদের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হলেও এদিন উপস্থিত ছিলেন না পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো প্রতিনিধি। ফলে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৯ মে একনেকে অনুমোদন পায় ১৫০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট নির্মাণ প্রকল্প । নগরের চট্টেশ্বরী রোডে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রাবাসের পশ্চিমে গোয়াছি বাগান এলাকায় ২৮৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পের মধ্যে চীন সরকার অর্থায়ন করবে ১৮০ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার দেবে ১০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় একটি ছয়তলা ভবন নির্মিত হবে।

তবে প্রকল্পের চীনা প্রতিনিধি দলেন প্রধান মে ইইউ চ্যং বলেন, পাহাড়টা দেখার পর মনে হয়েছে- পাশে ভবন হলে জায়গাটি নিরাপদ হবে না। কারণ ভবনে বেইজ করার সময় পাহাড় ধসে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। পাহাড়ের মাটিগুলো খুবই নরম। পানির স্পর্শ পেলে নিচের দিকে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকৌশলীরা সয়েল নেইলিং প্রযুক্তির মাধ্যমে পাহাড়টি ড্রেসিং করে কলাম বসিয়ে কাজ করবে এবং সেখানে ঘাস রোপণ করা হবে।

পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহী বলেন, গত বছরও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছিল। তখন তারা বলেছিলেন, পাহাড় রক্ষা করে কাজ করবেন। আজ আবার তারা বলছেন, পাহাড় ধসে পড়ার কারণে তারা পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছেন। যেকোনও প্রকল্প করতে হলে

 

পরিবেশগত প্রভাব পর্যালোচনা (ইআইএ) করতে হয়। কিন্তু ইআইএ না থাকায় আমরা অবাক হয়েছি। চমেক হাসপাতালের মতো একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরনের অবহেলা আশা করা যায় না। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ রাখা হয়েছে, সৌন্দর্যবর্ধক গাছের সঙ্গে দেশিয় প্রজাতির গাছও লাগাতে হবে।এর আগে বার্ন ইউনিট প্রকল্প এলাকায় পাহাড় কাটার ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই তড়িঘড়ি করে এই অংশীজন সভা ডাকে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

রাজশাহীতে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

নাজিয়া পারভীন রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল নার্সিং কলেজের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
রাজশাহী মহানগরের একটি ছাত্রীনিবাস থেকে নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটিকে ‘আত্মহত্যা’ বলে ধারণা করছে পুলিশ।

নগরের বড়বনগ্রাম রায়পাড়ার একটি ছাত্রীনিবাস থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ওই শিক্ষার্থীর নাম নাজিয়া পারভীন। তিনি রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল নার্সিং কলেজের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায়।লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন বলেন, ‘নাজিয়া পারভীন ওই ছাত্রীনিবাসে থাকতেন। সেখানে ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। আমাদের ধারণা, আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যু মামলা হবে।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই – ফারুক ই আজম

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নব ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া ‘নতুন বাংলাদেশে’ বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই জারি রাখার আহ্বান এসেছে ‘ the art of democracy, unity – a Journey of unity ‘ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী থেকে।

চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়। আর্ট এক্সিবিশন উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ত্রান ও দূর্যোগ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন।

ঐক্যের গণজোয়ারে আবারও এক হই” এই স্লোগানে শুরু হওয়া প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর আগত অতিথি ও দর্শনার্থীরা শিল্পকলার আর্ট গ্যালারি দ্বিতীয়  ও তৃতীয় তলায় প্রদর্শনীস্থল ঘুরে দেখেন। ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের  একশত ষাটটি ছবি স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। 

এর আগে চব্বিশের গণআন্দোলনের আলোকচিত্র, স্লোগান, গ্রাফিতি ও জুলাই বিপ্লব নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রের টিজার  নিয়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীর আগে জুলাই বিপ্লবের  ইতিহাসভিত্তিক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন পর্বে শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের  উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

ফারুক ই আজম বলেন-জুলাই বিপ্লবে ইতিহাস ধরে রাখার তরুনদের এমন উদ্দ্যেগ যেন পুর্নতা পায়। ইতিমধ্যে জুলাইয়ের গণ অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। অনেককে বিদেশে চিকিৎসা করা হচ্ছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারটা যেন তাড়াতাড়ি হয়। আমরা আশাবাদী।  আর বৈষম্য করা যাবে না। পুরো রাস্ট্রকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই, যেখানে তরুণরা স্বৈরাচারী দমননীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি তোলে।

চসিকের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন – বলেন,  ৫২ ‘ ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ; সব সংগ্রামই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। জুলাই বিপ্লব বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দ্বারা স্পষ্ট হলেও  এটি মুলত ক্ষমতার বিরুদ্ধে মানুষের লড়াই।  আর সেই বিপ্লবের ইতিহাস ধারন করে এখন চলবে বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই।

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয়কে কোনোভাবেই নস্যাৎ করতে দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে, এবং আমরা এই ঐক্য ধরে রাখব। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের অন্যায্য ও কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রক্তাক্ত জুলাইয়ের স্মৃতি জাগিয়ে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি।

আয়োজকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে সারাদেশে সচিত্র আর্কাইভ তৈরির অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মানের ভিজুয়াল ফিল্ম তৈরি, ফটোগ্রাফিক আর্কাইভ বুক ও ম্যাগাজিন প্রকাশ, তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট তৈরির উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস ভিত্তিক তথ্যচিত্রটি আন্তর্জাতিক স্ট্রিমিং প্রতিষ্ঠান ‘নেটফ্লিক্স ‘ এর সাথে চুক্তির ভিত্তিতে নির্মিত হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক  মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘ রক্তাক্ত  জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও ইতিহাস ধরে রাখার গুচ্ছ  প্রয়াস  the art of democracy, unity – a Journey of unity। বছর জুড়ে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে চিত্র প্রদর্শনী, তথ্যচিত্র নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ডাটাবেইজ ওয়েবসাইট থাকছে প্রকল্পে। ‘

The art of democracy, unity – a Journey of unity প্রকল্পের উপদেষ্টা ওয়াহিদ জামান জানান , ‘ জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল ছড়িয়ে দিতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে ডকুমেন্টারি নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্দ্যেগ নেয়া হয়েছে। মুলত আজকে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের চিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে পুরো প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়েছে। ‘

ইফরাদ আবিদ ও সুমি শারমিনের উপস্থাপনায়  প্রথম পর্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইতিহাস সংরক্ষণের পুরো প্রকল্পের বিষয়টি দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন আল মাহমুদ বিন শামসুদ্দিন, মিনহাজ উদ্দিন, ইফফাত ফাইরুজ ইফা, সুমাইয়া খানম।

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রছাত্রীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনীতে গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি, আন্দোলনকারীদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ