আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

ওয়ার্ড সচিবদের সেবা কার্যক্রমে সচেষ্ট থাকার আহ্বান মেয়র ডা. শাহাদাতের

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করতে ওয়ার্ড সচিবদের আরও দায়িত্বশীল ও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে বিভিন্ন সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে জনভোগান্তি এড়াতে দ্রুত এবং কার্যকর সেবা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন।

বৃহস্পতিবার চসিক নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ওয়ার্ড সচিবদের সাথে মতবিনিময় সভায় মেয়র বলেন, “জনগণের অধিকার এবং তাদের সেবার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গাফিলতি সহ্য করা হবে না। প্রতিটি নাগরিকের প্রয়োজনীয় সনদ পেতে যেন দুর্ভোগ না পোহাতে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। ওয়ার্ড পর্যায়ে সেবার মানোন্নয়নই আমাদের মূল লক্ষ্য।”

মেয়র ডা. শাহাদাত বিভিন্ন সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে বিলম্ব এবং জটিলতার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “একটি জন্মনিবন্ধন বা অন্যান্য সনদ পেতে দিনের পর দিন ঘুরে বেড়ানো নাগরিকদের জন্য অমানবিক। এ ধরণের অসুবিধা দূর করতে আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষিত জনবলের ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। জনগণ আমাদের সেবা পেতে আসে, দুর্ভোগ নিয়ে ফিরে যাওয়া তাদের প্রাপ্য নয়। জনগণকে ভোগান্তি দেয়ায় ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকজন ওয়ার্ড সচিবকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করেছি এবং কয়েকজনকে বদলি করেছি। জনভোগান্তি সৃষ্টি করলে কোন ছাড় নেই।”

তিনি ওয়ার্ড সচিবদের প্রতি হুঁশিয়ারি উ”চারণ করে বলেন, যেসব কর্মচারী দায়িত্বে অবহেলা বা স্বজনপ্রীতির কারণে নাগরিক সেবা ব্যাহত করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যব¯’া নেওয়া হবে।
সভায় ওয়ার্ড সচিবদের প্রতি মেয়র নির্দেশনা দেন, সেবা গ্রহণকারীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা এবং সময়মতো সেবা প্রদানের মাধ্যমে তাদের আ¯’া অর্জন করতে হবে। তিনি বলেন, “আপনাদের কাজের পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। কোনো সেবা প্রত্যাশীর অভিযোগ যাতে উপেক্ষিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”

ডা. শাহাদাত আরও বলেন, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদসহ অন্যান্য সরকারি সেবার ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নগরবাসী যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সনদ হাতে পান, তা নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের কথা তিনি জানান।

মেয়র সভায় উপস্থিত ওয়ার্ড সচিবদের আরও উদ্যমী হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের উন্নয়নে আপনাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নগরীকে আরও আধুনিক এবং পরিবেশবান্ধব করে তুলতে হবে। ওয়ার্ড পর্যায়ে টিসিবির পণ্য সরবরাহ এবং পরি”ছন্ন কার্যক্রম ঠিকমতো হচ্ছে  কীনা সে বিষয়ে ওয়ার্ড সচিবরা সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। ”

সভায় ওয়ার্ড সচিবরা তাদের কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন এবং কাজের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেন। মেয়র তাদের দেওয়া তথ্য এবং পরামর্শ শোনার পাশাপাশি তাদের কার্যক্রম নিয়মিত মূল্যায়নের নির্দেশ দেন।

মেয়র জানান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি স্বয়ংক্রিয় ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে কাজ করছে। তিনি বলেন, “একটি স্বচ্ছ, কার্যকর এবং জবাবদিহিমূলক প্রশাসনই নাগরিক সেবা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিনসহ ৪১টি ওয়ার্ডের সচিব।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পরিবেশ রক্ষায় চট্টগ্রামে চালু হয়েছে “ক্লিন বাংলাদেশ প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার”

নগরীর জলাবদ্ধতা ও প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় ক্লিন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-এর সহযোগিতায় যাত্রা শুরু করলো “প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ কর্নার”। মাহে রমজান উপলক্ষ্যে চালু হওয়া এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিনের বিনিময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করা হচ্ছে।চকবাজার কাঁচাবাজারের সামনে শুক্রবার আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি, সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা ও সাধারণ জনগণ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বলেন পরিবেশ রক্ষা ও জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার। ক্লিন বাংলাদেশ-এর এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, কারণ এটি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নগর পরিচ্ছন্নতার জন্য একটি বাস্তবসম্মত সমাধান দিচ্ছে। আমরা চাই এই কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হোক এবং নগরবাসী প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আরও সচেতন হোক।
ক্লিন বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা শওকত হোসেন জনি বলেন আমাদের শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো প্লাস্টিক বর্জ্য ও জলাবদ্ধতা। আমরা সবাই জানি, নালা ও ড্রেনগুলো প্লাস্টিকের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আমরা চেয়েছি সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান দিতে—যেখানে পরিবেশ রক্ষা ও মানবিক সহায়তা একসাথে করা যায়। তাই, ‘প্লাস্টিক আনুন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিন’ এই ধারণা নিয়ে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এটি শুধু প্লাস্টিক দূষণ রোধ করবে না, বরং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রমজানের সময়ে সহায়তা হিসেবে কাজ করবে।
রমজান মাসব্যাপী প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট ও আগ্রাবাদ কাঁচাবাজারের সামনে এই কার্যক্রম চলবে। ব্যবহৃত প্লাস্টিক ও পলিথিন জমা দিয়ে চনা, ছোলা, খেজুর, ছিড়া, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করতে পারবেন সাধারণ জনগণ।

এই আয়োজন সফলভাবে পরিচালনা করছেন ক্লিন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক তানভীর রিসাত ও টিম লিড করছে ইমন, আলভি, জাহিদ, প্রমি, তানজিফা। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে কাজ করছে সাকিব, ইয়াজ, মুনতাসির, পার্থ। উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও রাজনীতিবিদ মনিরুল ইসলাম ইউসুফ ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।ক্লিন বাংলাদেশ আশা করছে, এই উদ্যোগ নগরবাসীর মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে এবং পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

খালগুলো আবর্জনার স্তূপে পরিণত জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি: মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সোমবার সকালে নগরীর চান্দগাঁও থানার ওয়াপদা অফিসের মুখে ডোম খালের মাটি উত্তোলন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা জানান ।

এ সময় মেয়র বলেন, আমরা কাজ শুরু করেছি যাতে এবারের বর্ষায় যতটুকু সম্ভব জলাবদ্ধতা কমিয়ে আনতে পারি। আমরা চেষ্টা করছি শহরের ভেতরে যতগুলো নালা ও সমুদ্র, নদীতে পানি যাওয়ার প্রবাহ সেগুলো চালু করার। পরের বর্ষায় যাতে পানি চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়, সেজন্য আমরা কাজ করছি।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একসময় গ্রামাঞ্চলে কৃষি উন্নয়নের জন্য খাল খনন কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন, আর আজ শহরের জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে আমাদের সেই একই উদ্যোগ নিতে হচ্ছে। চট্টগ্রামের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। ফরিদার পাড়া, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, বাকলিয়া, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩৬টি খালে কাজ করছে। বাকী ২১টি খাল পরিষ্কারের কাজ আমাদের করতে হবে। কিন্তু খাল পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়; জনসচেতনতা বাড়ানোও অত্যন্ত জরুরি।

আমি দেখেছি, খালগুলো আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, নালার মধ্যে ময়লা ফেলবেন না, বিশেষ করে প্লাস্টিক, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক বোতল, ও ককশিট। কারণ এগুলো জলাবদ্ধতার মূল কারণ। বর্তমানে পলিথিনের কারণে খালের উপর চার-পাঁচ ফিট স্তর জমে গেছে, যা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। পলিথিনের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে। এটার বিকল্প হিসেবে নতুন কিছু বাজারজাত করার পরিকল্পনা করছি। আমি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছি। মশার স্প্রে কার্যক্রম সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করছি। ওয়ার্ড কাউন্সিলর না থাকলেও নেতাকর্মীদের একসঙ্গে কাজ করতে বলছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে।

মেয়র আরও বলেন, নগরীর দোকানগুলোর সামনে ডাস্টবিন বসানো হবে। যদি কোনো দোকানের সামনে ময়লা পাওয়া যায়, তবে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে। আমরা পচনশীল ভাত, মাছ, ডিম ইত্যাদি এবং অপচনশীল পলিথিন, প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা করার পরিকল্পনা করছি। এসব বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, জৈবসার এবং বায়োগ্যাস উৎপাদন সম্ভব। এতে বর্জ্য সম্পদে পরিণত হবে এবং যত্রতত্র বর্জ্য ফেলার প্রবণতা কমবে।পরিদর্শনের সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহিসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ