আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

চবিতে দেশ-বিদেশের চার শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহনে প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

 

প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার উদ্যোগে নবম বারের মতো ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন ২০২৫। প্রতি বছর বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা আসেন বিতর্ক, কুটনীতি ও আলোচনায় দেশের অন্যতম এ প্রতীকী সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় ৪০ টি প্রতিষ্ঠানের চার শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে এ সম্মেলনে। এবারের সম্মেলনে আরও অংশগ্রহণ করছেন নাইজেরিয়া , সোমালিয়া, ক্যামেরুন, গাম্বিয়া, আইভরি কোস্ট, উগান্ডা, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া নেপাল, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরাও।

সম্মেলনটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অগ্রগতির জন্য যুব নেতৃত্বের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী উদ্ভাবনের প্রসার’। এ প্রতিপাদ্য বিষয়টিকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীরা ৮টি কমিটিতে বিভক্ত হয়ে জাতিসংঘের আলোকে কূটনৈতিক আলেচনায় অংশ নিবে। কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ-১, জাতিসংঘ

মানবাধিকার কমিশন, বিশ্ব মেধা সম্পদ সংস্থা, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা, অন্তর্র্বতীকালীন বাংলাদেশ সরকার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম

বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. আমীর মুহাম্মদ নসরুল্লাহ ও উক্ত বিভাগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমদ, চবি ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের সভাপতি মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক ও চবি দর্শন বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক।
চবি উপাচার্য বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকি জাতিসংঘ কর্তৃক আয়োজিত শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি ব্যতিক্রমী সুযোগ। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি সমগ্র বাংলাদেশও বিদেশের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনে

যুবসমাজের সম্পৃক্ততা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে কথা বলার সুযোগ করে দেয়।
লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আমীর মুহাম্মদ নসরুল্লাহ প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ তরুণ। আমাদের উদ্ভাবনী উপায়গুলি নিয়ে ভাবতে হবে কিভাবে তরুণদের অগ্রগতিতে সম্পৃক্ত করা যায় এবং কীভাবে তাদেরকে বিশ্বব্যাপী অন্তর্ভুক্তির জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায়।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্সি এডুকেশন চট্টগ্রামের ভাইস প্রিন্সিপাল মোঃ জসিম উদ্দিন। তিনি প্রতীকী জাতিসংঘের গুরুত্ব আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, প্রতীকি জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এমন অসংখ্য দক্ষতা অর্জন করতে পারে, যা তাদের মানসিকতাকে বিকশিত করে এবং তা ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্মগুলিতে কীভাবে জড়িত হতে হয়, তা শিখতে পারে। এ একক ইভেন্টে একজন শিক্ষার্থী শুধু বৈশ্বিক সমস্যা এবং সেগুলি কেবল সমাধান করার উপায়ই নয় বরং পেশাদারভাবে উপস্থাপন করার উপায়গুলি সম্পর্কেও শেখে।
চবি দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, বৈশ্বিক অগ্রগতির চালিকাশক্তি হিসেবে যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য উদ্ভাবনী ধারণা দিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করা

অপরিহার্য। চবি প্রতীকী জাতিসংঘের এ অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য সমাধান অন্বেষণ এবং উন্নত বিশ্বে অবদান রাখার জন্য একটি অর্থবহ স্থান তৈরি করে।
পরিশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সংস্থার মহাসচিব ইশফাকুল কবির আসিফ বলেন, আমি এখানে আগত প্রতিটি প্রতিনিধিকে এ সুযোগটি কাজে লাগানোর এবং নিজেদেরকে বিকশিত করার জন্য অনুরোধ করছি। এ সম্মেলনে আগামী ৪ দিন আপনারা বৈশ্বিক বিষয়, কূটনীতি এবং বিতর্ক সম্পর্কে জানতে পারবেন। আমি

আপনাদের সকলকে এই সুযোগটি কাজে লাগানোর এবং ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য স্বাগত জানাই।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতীকী জাতিসংঘ সম্মেলন শিক্ষার্থীদের কূটনীতিক চিন্তার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সম্মেলনটি তরুণদের বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টার পাশাপাশি কূটনীতিক আলোচনায় আগ্রহী করে তোলে।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

ওসমান হাদিকে দেখতে এসে তোপের মুখে মির্জা আব্বাস।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সেনাবাহিনীর সদস্যরা মির্জা আব্বাসকে নিরাপত্তা দিয়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ