আজঃ সোমবার ২৩ জুন, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরে তিনদিনের সফরে আসছেন আইএসপিএস প্রতিনিধিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরে অষ্টমবারের মত পরিদর্শনে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের চার সদস্যের ইন্টারন্যাশনাল শিপ এন্ড পোর্ট ফ্যাসেলিটি সিকিউরিটি’র (আইএসপিএস) একটি প্রতিনিধি দল। জাহাজ চলাচল ও সার্বিক নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিদর্শনে আগামী ২১ জানুয়ারী তারা তিন দিনের সফরে আসবেন বলে জানা গেছে।

 

চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সফরে আসা আইএসপিএস প্রতিনিধি দলে ইউএস কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কমান্ডার খেইম ভি নাইজির নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম পাওয়া গেছে। অন্য সদস্যরা হলেন-মার্টিন এস ডুনুহুই, ইরভিং এ চিনট্রন এবং মিজ ক্রামির।

ওই কর্মকর্তা জানান, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টু-ইন-টাওয়ারে ওয়ান-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বের যেসব দেশ থেকে জাহাজে পণ্য আমদানি রফতানি করে, সে সব দেশের বন্দর ও জাহাজের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে আইএসপিএস কোড চালু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের মেরিটাইম রুলস অনুসরণ করে আইএসপিএস প্রতিনিধি দল ইতোপূর্বে আরো সাতবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে তারা চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছিল। আগামী ২১

জানুয়ারি থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তিনদিন এখানে অবস্থান করে চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ড, জেটি, সিএফএস (কন্টেনার ফ্রেইট স্টেশন), বন্দর গেইট, সিসিটিভি ক্যামেরা, বন্দরের সিকিউরিটি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা এবং পোর্ট

ফ্যাসিলিটিজ’র আওতাধীন কয়েকটি আইসিডি পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বিশেষ করে বন্দরে হ্যান্ডলিংকৃত পণ্য স্ক্যানিং, সিসিটিভি ক্যামেরা, লোকবল, পণ্য তল্লাশির ধরণসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়গুলো তারা দেখে থাকেন।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নীতিমালা অনুসরণ করে। আইএমও বিশ্বের বন্দর সমুহের জাহাজ চলাচল ও নিরাপত্তা রক্ষায় আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নে সহায়তা দেয়। সেহেতু চট্টগ্রাম বন্দর এই আইএসপিএস কোড অনুসরণ করে তাদের নির্দেশিত কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন করছে শুরু থেকেই। যুক্তরাষ্ট্র যে সব দেশ থেকে তৈরী

পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য আমাদনি করে সে সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তৈরী পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে চীন এবং তাইওয়ানের পর বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের গুরুত্ব প্রণিধানযোগ্য। পানি পথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।

আইএসপিএস প্রতিনিধি দল তাদের সফর শেষে প্রতিবারই চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু উন্নয়নমুলক পরামর্শ দিয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বাস্তবায়ন করে। ফলে আইএসপিএস প্রতিনিধি দল তাদের কোড বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং তা ধরে রাখার বিষয়ে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন এবং অগ্রগতি রিপোর্ট প্রদান করে। যে সব বন্দরে আইএসপিএস কোড অনুসরণ পুরোপুরি হয় না, সে সব বন্দরকে একটি সময় দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোডের শর্ত পূরণের সময় দেয়া হয়। যে সব বন্দর এতে ব্যর্থ হয় সেগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। কালো তালিকাভুক্ত বন্দর দিয়ে আমেরিকায় কোন পণ্য পরিবহন করা যায় না। ২০০৪ সাল থেকে আমেরিকান কোস্টগার্ডের আইএসপিএস প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শুরু করে।

ইতোপূর্বে তারা চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বাধুনিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে সব শর্ত পূরণের তাগাদা দিয়েছিল, তা পূরণ করে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে আইএসপিএস প্রতিনিধি দলে সর্বশেষ সফরে এসেছিলেন। তারা কয়েকটি আইসিডিসহ চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিদর্শন করে সন্তোষজনক রিপোর্ট প্রদান করেছিলেন। প্রায় আড়াই বছর পর আবারো আইএসপিএস কোডের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, আগামী ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি তিনদিন তারা চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও স্থাপনা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। প্রতিনিধি দল জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তার বিষয়টি মূল্যায়ন করবে এবং কয়েকটি বেসরকারী কন্টেইনার ইয়ার্ড পরিদর্শন করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব জানান, আইএসপিএস প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন নিয়মিত বাণিজ্যিক সুযোগ সুবিধা ও বন্দর উন্নয়নের অংশিদারিত্বের অংশ। তারা আমাদের দেশ থেকে তৈরী পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে থাকে। সেজন্য তাদের প্রেসক্রিপসনের কমপ্লায়েন্সগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা তা দেখে থাকেন।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা, আরো দুইজনের মৃত্যু।

চট্টগ্রামে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন ১৪ বছর বয়সী কিশোর। এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনায় চারজনের মৃত্যু হল। রোববার চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে গত ২৪ ঘন্টায় দুজনের মৃত্যুর পাশাপাশি আরও ১২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার তথ্য দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট ৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন, যার মধ্যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, ২৪ ঘন্টায় মৃত দুজন হলেন- মো. এরশাদ (১৪) ও ইয়াসমিন আক্তার (৪৫)।কিশোর এরশাদের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত শুক্রবার তাকে চট্টগ্রাম সরকারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরীক্ষায় তার শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার তার মৃত্যু হয়েছে।

হৃদরোগ এবং কিডনি জটিলতা নিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় এরশাদ কোভিড আক্রান্ত হন বলে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এছাড়া মৃত ইয়াসমিনের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি আগে থেকে যক্ষ্মা রোগে ভুগছিলেন। কোভিড পজেটিভ হিসেবে শনাক্ত হওয়ার পর তাকে শনিবার চট্টগ্রাম সরকারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে ভর্তির পরেই আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়েছে।রক্তে সংক্রমণজনিত কার্ডিয়াক শকে ইয়াসমিনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।

এর আগে, শনিবার (২১) আগের ২৪ ঘন্টায় নগরীর বাকলিয়ার বাসিন্দা ৭১ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যুর তথ্য দিয়েছিল সিভিল সার্জনের কার্যালয়।এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ১২টি ল্যাবে ২৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে গত ২৪ ঘন্টায় ১২ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১১ জনই চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করেন।এ নিয়ে সরকারি হিসেবে চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ জনে, যার মধ্যে ৬৬ জনই নগরীর বাসিন্দা।মৃত চারজনের মধ্যে একজন নগরীর এবং তিনজন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ইলেকট্রনিক সিগারেট জব্দ।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমদানি নিষিদ্ধ ইলেকট্রনিক সিগারেট (ই-সিগারেট) ও ইলেকট্রনিক ধূমপান সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে।রোববার সকালে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে আবুধাবি থেকে আসা এক যাত্রীর কাছ থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়। ফ্লাইটটি সকাল ৬টা ২০ মিনিটে শাহ আমানত

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য নিয়ে আসা মাওলানা মোহাম্মদ আইয়ুব নামে ওই যাত্রীর বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। তবে তাকে আটক করা হয়নি।সতর্ক করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আইয়ুবের কাছ থেকে জব্দ সামগ্রীর মধ্যে আছে- ২০টি ই-সিগারেট বা ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম, এতে ব্যবহার্য ৪৯০টি সিগারেট রিফিল লিকুইড, ২৮০টি কার্টিজ এবং ৩০টি কয়েল।

বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল জানান, গোপন খবরের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এবং বিমানবন্দরের নিরাপত্তা টিম যৌথভাবে আইয়ূবকে তল্লাশি করে আমদানি নিষিদ্ধ এসব সামগ্রী উদ্ধার করেছে। যদিও দেশে আমদানি এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ, তবুও এসব সামগ্রীর আনুমানিক বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে রিফিল লিকুইডের দামই প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা।

জিজ্ঞাসাবাদে এবং আগের নথিপত্র পর্যালোচনায় সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত হয়েছেন, মাওলানা আইয়ূব প্রথমবারের মতো এ ধরনের চোরাচালানে জড়িত হয়েছেন। এজন্য তাকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ