আজঃ শনিবার ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

চট্টগ্রাম বন্দরে তিনদিনের সফরে আসছেন আইএসপিএস প্রতিনিধিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরে অষ্টমবারের মত পরিদর্শনে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের চার সদস্যের ইন্টারন্যাশনাল শিপ এন্ড পোর্ট ফ্যাসেলিটি সিকিউরিটি’র (আইএসপিএস) একটি প্রতিনিধি দল। জাহাজ চলাচল ও সার্বিক নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিদর্শনে আগামী ২১ জানুয়ারী তারা তিন দিনের সফরে আসবেন বলে জানা গেছে।

 

চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সফরে আসা আইএসপিএস প্রতিনিধি দলে ইউএস কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কমান্ডার খেইম ভি নাইজির নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নাম পাওয়া গেছে। অন্য সদস্যরা হলেন-মার্টিন এস ডুনুহুই, ইরভিং এ চিনট্রন এবং মিজ ক্রামির।

ওই কর্মকর্তা জানান, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে টু-ইন-টাওয়ারে ওয়ান-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বের যেসব দেশ থেকে জাহাজে পণ্য আমদানি রফতানি করে, সে সব দেশের বন্দর ও জাহাজের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে আইএসপিএস কোড চালু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের মেরিটাইম রুলস অনুসরণ করে আইএসপিএস প্রতিনিধি দল ইতোপূর্বে আরো সাতবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে তারা চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছিল। আগামী ২১

জানুয়ারি থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তিনদিন এখানে অবস্থান করে চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ড, জেটি, সিএফএস (কন্টেনার ফ্রেইট স্টেশন), বন্দর গেইট, সিসিটিভি ক্যামেরা, বন্দরের সিকিউরিটি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা এবং পোর্ট

ফ্যাসিলিটিজ’র আওতাধীন কয়েকটি আইসিডি পরিদর্শন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বিশেষ করে বন্দরে হ্যান্ডলিংকৃত পণ্য স্ক্যানিং, সিসিটিভি ক্যামেরা, লোকবল, পণ্য তল্লাশির ধরণসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়গুলো তারা দেখে থাকেন।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নীতিমালা অনুসরণ করে। আইএমও বিশ্বের বন্দর সমুহের জাহাজ চলাচল ও নিরাপত্তা রক্ষায় আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নে সহায়তা দেয়। সেহেতু চট্টগ্রাম বন্দর এই আইএসপিএস কোড অনুসরণ করে তাদের নির্দেশিত কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন করছে শুরু থেকেই। যুক্তরাষ্ট্র যে সব দেশ থেকে তৈরী

পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য আমাদনি করে সে সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তৈরী পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে চীন এবং তাইওয়ানের পর বাংলাদেশের অবস্থান। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের গুরুত্ব প্রণিধানযোগ্য। পানি পথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।

আইএসপিএস প্রতিনিধি দল তাদের সফর শেষে প্রতিবারই চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু উন্নয়নমুলক পরামর্শ দিয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে নিয়ে বাস্তবায়ন করে। ফলে আইএসপিএস প্রতিনিধি দল তাদের কোড বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং তা ধরে রাখার বিষয়ে বিভিন্ন সময় পরিদর্শন এবং অগ্রগতি রিপোর্ট প্রদান করে। যে সব বন্দরে আইএসপিএস কোড অনুসরণ পুরোপুরি হয় না, সে সব বন্দরকে একটি সময় দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোডের শর্ত পূরণের সময় দেয়া হয়। যে সব বন্দর এতে ব্যর্থ হয় সেগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। কালো তালিকাভুক্ত বন্দর দিয়ে আমেরিকায় কোন পণ্য পরিবহন করা যায় না। ২০০৪ সাল থেকে আমেরিকান কোস্টগার্ডের আইএসপিএস প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শুরু করে।

ইতোপূর্বে তারা চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বাধুনিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে সব শর্ত পূরণের তাগাদা দিয়েছিল, তা পূরণ করে আসছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে আইএসপিএস প্রতিনিধি দলে সর্বশেষ সফরে এসেছিলেন। তারা কয়েকটি আইসিডিসহ চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলো পরিদর্শন করে সন্তোষজনক রিপোর্ট প্রদান করেছিলেন। প্রায় আড়াই বছর পর আবারো আইএসপিএস কোডের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দরে আসছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, আগামী ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি তিনদিন তারা চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ও স্থাপনা পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। প্রতিনিধি দল জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তার বিষয়টি মূল্যায়ন করবে এবং কয়েকটি বেসরকারী কন্টেইনার ইয়ার্ড পরিদর্শন করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব জানান, আইএসপিএস প্রতিনিধি দল চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন নিয়মিত বাণিজ্যিক সুযোগ সুবিধা ও বন্দর উন্নয়নের অংশিদারিত্বের অংশ। তারা আমাদের দেশ থেকে তৈরী পোশাকসহ অন্যান্য পণ্য নিয়ে থাকে। সেজন্য তাদের প্রেসক্রিপসনের কমপ্লায়েন্সগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা তা দেখে থাকেন।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বড় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ফায়দা নিতে গিয়ে অন্যদের ধ্বংস করেছে:চসিক মেয়র

বড় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ফায়দা নিতে গিয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের ধ্বংস করেছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, আজ বিভিন্ন কারণে ছোট মাঝারি ব্যবসায়িরা সমস্যায় পড়েছে। বড় বড় ব্যবসায়িরা তাদের ফায়দা নেওয়ার জন্য রাজনীতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ট্যাক্স মওকুফ করিয়েছে। তারা কমপ্রোমাইজ করেছে তাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য। কিন্তু ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীদের তারা ধ্বংস করে দিয়েছে গত ১৬ বছরে।

শনিবার দুপুরে কাজীর দেউড়ী ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এশিয়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বাংলাদেশ ২০২৫ এর উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য মেলার আয়োজক ও মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইসহাক মিয়ার সভাপতিত্বে ও স্বপ্না জিমি ও শিশির চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।
মেলায় ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপাল, ইরান ও চায়না সহ দেশি বিদেশি দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হয়ে ১ মার্চ পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলার প্রবেশ টিকেট ২০ টাকা। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।

চসিক মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম অনেক পুরানো নগরী। এটা বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। এক সময় মায়ানমারের সঙ্গে চট্টগ্রামের একটা সংযোগ ছিল ব্যবসার। সেই ব্যবসাটা বাড়তে বাড়তে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চট্টগ্রামের সুনাম ব্যবসায়িকভাবে ছড়িয়েছে।
জিয়াউর রহমানের মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ফিরতে হবে জানিয়ে মেয়র শাহাদাত বলেন, এ ধারা থেকে বেরিয়ে এসে মুক্তবাজার যে অর্থনীতি, যেটা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের পরে তিনি উন্মুক্ত করেছেন। এবং যার ধারাবাহিকতায় অর্থনীতির জিডিপিতে, মানবসম্পদ, কৃষি এবং গার্মেন্টস সেকশনে যে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছিল, সেই ধারায় আমাদের ফিরে যেতে হবে। আজ চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক নগরের পাশাপাশি পর্যটন নগরীও। কিন্তু সেটাকে আমরা সেভাবে ফোকাস করতে পারি নাই। এটাকে ফোকাস করতে হবে বলে জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবুল হাশেম বক্কর বলেন, এই মেলা চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো হতে যাচ্ছে। এখানে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভাতৃত্বের বন্ধন ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। দেশে কঠিন এক সময় অতিক্রম করে আজকে আমরা এই পরিবেশে এসেছি। বর্তমান গণতান্ত্রিক পরিবেশে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধশালী করা ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে আহ্বান জানাই। এতে বক্তব্য রাখেন পাকিস্তানের ব্যবসায়ী আফসা মনসুর, ভারতের ব্যবসায়ী মিরাজ কাশ্মীর, মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য ফেরদৌস আহমেদ লিটন, এনায়েত হোসেন ফোরকান, জুনায়েদ আহমেদ, কোরআন তেলওয়াত করেন মো. কাউসার প্রমূখ।

পাটজাত ব্যাগ পলিথিনের ব্যবহার কমাতে সহায়ক হবে:মেয়র শাহাদাত

চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, পাটজাত ব্যাগ পরিবেশবান্ধব ও অপচনশীল পলিথিনের ব্যবহার কমাতে সহায়ক হবে। শুক্রবার নগরের ষোলশহরের রাষ্ট্রায়ত্ত আমিন জুট মিলসের বন্ধ কারখানা পরিদর্শনকালে মেয়র এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় মেয়র আমিন জুট মিলস পুনরায় চালু করা হলে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যাগ তৈরি করা সম্ভব হবে উল্লেখ করেন।

মেয়র জানান, আমিন জুট মিলস লিমিটেড চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত একটি ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান। এটি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের অধীনে ২৬টি মিলের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১০টি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান পাটকল।পাটকলে পৌঁছালে মেয়রকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান আমিন জুট মিলসের প্রকল্প প্রধান

এএইচএম কামরুল হাসান, নিরাপত্তা বিভাগীয় প্রধান আবদুল্লা আল মামুন ভূঁইয়া এবং শ্রম বিভাগীয় প্রধান মীর্জা কাইয়ুম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান জিয়া ,ফখরুল ইসলাম শাহীন, আকবর হোসেন মানিক, মো. আবদুল আউয়াল প্রমুখ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ