আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

টঙ্গীতে খুনের মামলার বাদীর বাড়ীতে হামলা; তদন্তে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ

সুরুজ্জামান রাসেল গাজীপুর প্রতিনিধি:

গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে খুনের মামলার বাদীর বাড়িতে আসামী পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে মামলা প্রত্যাহারের করতে হুমকী প্রদান করে। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারী) দুপুরে মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার মাছিমপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়াও তদন্তে পুলিশ গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনাস্থা প্রকাশ করে তদন্তের দায়িত্ব সিআইডি বা পিবিআইতে স্থানান্তরের জন্য পুলিশের আইজিপি বরাবরে আবেদন করেছেন নিহতের স্বজনরা।

গত ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারী ভোররাতে মিলগেট লাল মসজিদ বস্তির একটি গ্যারেজের সামনে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মাছিমপুর এলাকার লাল মসজিদ বস্তির মৃত শেরেকুল @ নুরুজ্জামান মিয়ার ছেলে শাহ আলী(৩০)কে মাথাসহ পুরো শরীর জখম হয়ে গুরুতর আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত শাহ আলীকে উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহতের বোন মোসাঃ হালিমা বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় ১৫(১)২৪ নং মামলাটি দায়ের করে। এছাড়াও ২০১৫ সালে ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম সানি ও তার লোকজন নিহতের চাচাত ভাই মঙ্গলকে হত্যা করেছিল।

নিহতের বোন মামলার বাদী বলেন, নিহত শাহ আলী ও তার স্ত্রী কাপড় বিক্রি করত। দীর্ঘ দিন যাবত অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবসা, গার্মেন্টসের পুরাতন মালামাল, বস্তির জায়গা জমি দখল নিয়ে নিহতের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। বাসা থেকে ডেকে নিয়ে শাহ আলীকে হত্যা করে হত্যাকারীরা নিজেরাই পুলিশকে সংবাদ দিয়েছে। মামলাটি ১ম পর্যায়ে এসআই খন্দকার ফরিদ মামলা তদন্ত কালে গাফিলতি করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলাটি পরবর্তীতে তদন্তের জন্য জিএমপি টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি (তদন্ত)জাকির হোসেনকে কর্তৃপক্ষ তদন্তের দায়িত্ব ভার প্রদান করেন। উনিও কিছুদিন আগে বদলী হয়েছেন। বর্তমানে মামলাটি এসআই শরীফ তদন্ত
করছেন। কিন্তু প্রকৃত আসামী গ্রেফতার ও মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের কোন চেষ্টা বা তৎপরতা নেই। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই পুলিশ নিষ্ক্রিয়। সেই সুযোগে আসামীরা বাদীর বাড়ীতে হামলা করে। এঘটনায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে নিহতের বোন থানায় সাধারণ ডায়েরী করে। কিন্তু পুলিশ নিহতের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদানে কোন ব্যবস্থা নেয় নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুনের মামলার আসামীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ও প্রভাবশালী। যার কারণে নিহতের পরিবার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসামীদের বিরূদ্ধে মাছিমপুর নিশাত বস্তিসহ আশপাশে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ, পানি ও জায়গা দখলের অভিযোগ পুরানো। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হলেও স্থানীয় প্রশাসনের অলৌখিক কারণে ব্যবস্থা নিতে অনীহা রয়েছে।

এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরীফ জানান, হত্যা মামলার বাদী আসামীদের বিরূদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন

এসংক্রান্তে জানতে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান দ্বীপুর কাছে যোগাযোগ করলে উনি জানান, পুলিশকে এখন কেউ মানে না। পুলিশের যতটুকু সামর্থ্য ততটুকুই কাজ করা হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ