
অবৈধ সম্পদ অর্জনের জন্য ওয়াসার গাড়ি চালক (বরখাস্তকৃত) তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দ্বায়ের। তার এতো সম্পদ অর্জনে আয়ের উৎস নেই, অথচ রয়েছে ৫ তলা বাড়িসহ অর্ধ কোটিরও বেশি টাকার সম্পদ। স্বামীর অবৈধ আয় দিয়েই খাইরুন্নেছা বেগম নামের এক নারী বিপুল পরিমাণের এ সম্পদ গড়েছেন। তার স্বামী হচ্ছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার গাড়ি চালক (সাময়িক বরখাস্তকৃত) মো. তাজুল ইসলাম।
২২ জানুয়ারী (মঙ্গলবার) এই দম্পতির বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন। দাখিলকৃত এ চার্জশিটেই উঠে আসে খাইরুন্নেছা বেগমের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য। ২০২২ সালের ৬ মার্চ একই কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম মোড়ল বাদী হয়ে মো. তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী খাইরুন্নেছা বেগমের বিরুদ্ধে যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। সেই মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে দুদক কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন দম্পতির বিরুদ্ধে অর্ধকোটিরও বেশি টাকার সম্পদ অর্জন সম্পর্কিত উক্ত চার্জশিট দাখিল করেন। যদিও মামলার এজাহারে ২৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৫৯ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
আদালতসূত্র জানায়, মো. তাজুল ইসলাম চট্টগ্রাম ওয়াসা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি তিনি বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদকও। ১৯৮৯ সালে দুই হাজার টাকা বেতনে চট্টগ্রাম ওয়াসায় চালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেছিলেন তিনি। দুদকের দাখিলকৃত চার্জশিটে বলা হয়, চট্টগ্রাম ওয়াসার গাড়ি চালক মো. তাজুলের স্ত্রীর নামে মহানগরীর রৌফাবাদে ৫ তলা বাড়ি রয়েছে। ২০০২ সালে জমি ক্রয় এবং পরে প্রায় ৩৯ লাখ টাকা খরচ করে সেখানে গড়ে তোলা হয় উক্ত বাড়ি। কিন্তু সম্পদের হিসাব বিবরণীতে ২৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়। চার্জশিটে বলা হয়, পোল্ট্রি খামার ব্যবসা রয়েছে বলা হলেও খাইরুন্নেছা বেগমের কোন ব্যবসা নেই। তিনি শুধুই একজন গৃহিনী। দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, সবমিলে তাজুলের স্ত্রীর ৬০ লাখ টাকার মতো অবৈধ সম্পদ রয়েছে। যা তিনি স্বামীর অবৈধ আয় দিয়ে অর্জন করেছেন।
আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওয়াসার কর্মচারীদের তিনি তটস্থ রাখতেন বলেও অভিযোগ আছে। ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, নিয়োগ–বাণিজ্য, তদবির, পদোন্নতি ও বদলিতে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে তাজুল ইসলাম অর্থ আয় করেছেন। চাকরিজীবনের শুরু থেকেই তিনি এসবে জড়িয়ে যান। পরে অবৈধভাবে অর্জিত টাকা দিয়ে জায়গা কিনে দুই দশক আগে বাড়ি করেন।