আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

দ্য আর্ট অব ডেমোক্রেসি ' চিত্র প্রদর্শনী

জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই – ফারুক ই আজম

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নব ইতিহাসের সাক্ষী হওয়া ‘নতুন বাংলাদেশে’ বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই জারি রাখার আহ্বান এসেছে ‘ the art of democracy, unity – a Journey of unity ‘ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী থেকে।

চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়। আর্ট এক্সিবিশন উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ত্রান ও দূর্যোগ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন।

ঐক্যের গণজোয়ারে আবারও এক হই” এই স্লোগানে শুরু হওয়া প্রদর্শনী উদ্বোধনের পর আগত অতিথি ও দর্শনার্থীরা শিল্পকলার আর্ট গ্যালারি দ্বিতীয়  ও তৃতীয় তলায় প্রদর্শনীস্থল ঘুরে দেখেন। ২০১৮ সালের কোটা বিরোধী আন্দোলন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের  একশত ষাটটি ছবি স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। 

এর আগে চব্বিশের গণআন্দোলনের আলোকচিত্র, স্লোগান, গ্রাফিতি ও জুলাই বিপ্লব নিয়ে নির্মিত তথ্যচিত্রের টিজার  নিয়ে আয়োজিত এ প্রদর্শনীর আগে জুলাই বিপ্লবের  ইতিহাসভিত্তিক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন পর্বে শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের  উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

ফারুক ই আজম বলেন-জুলাই বিপ্লবে ইতিহাস ধরে রাখার তরুনদের এমন উদ্দ্যেগ যেন পুর্নতা পায়। ইতিমধ্যে জুলাইয়ের গণ অভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার। আহতদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার। অনেককে বিদেশে চিকিৎসা করা হচ্ছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারটা যেন তাড়াতাড়ি হয়। আমরা আশাবাদী।  আর বৈষম্য করা যাবে না। পুরো রাস্ট্রকে সুস্থ ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, ‘ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল এক ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াই, যেখানে তরুণরা স্বৈরাচারী দমননীতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি তোলে।

চসিকের মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন – বলেন,  ৫২ ‘ ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ; সব সংগ্রামই বৈষম্যের বিরুদ্ধে। জুলাই বিপ্লব বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দ্বারা স্পষ্ট হলেও  এটি মুলত ক্ষমতার বিরুদ্ধে মানুষের লড়াই।  আর সেই বিপ্লবের ইতিহাস ধারন করে এখন চলবে বিস্মৃতির বিরুদ্ধে স্মৃতির লড়াই।

স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিজয়কে কোনোভাবেই নস্যাৎ করতে দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে, এবং আমরা এই ঐক্য ধরে রাখব। অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের অন্যায্য ও কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রক্তাক্ত জুলাইয়ের স্মৃতি জাগিয়ে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি।

আয়োজকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণে সারাদেশে সচিত্র আর্কাইভ তৈরির অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মানের ভিজুয়াল ফিল্ম তৈরি, ফটোগ্রাফিক আর্কাইভ বুক ও ম্যাগাজিন প্রকাশ, তথ্যভিত্তিক ওয়েব সাইট তৈরির উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস ভিত্তিক তথ্যচিত্রটি আন্তর্জাতিক স্ট্রিমিং প্রতিষ্ঠান ‘নেটফ্লিক্স ‘ এর সাথে চুক্তির ভিত্তিতে নির্মিত হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক  মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘ রক্তাক্ত  জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি ও ইতিহাস ধরে রাখার গুচ্ছ  প্রয়াস  the art of democracy, unity – a Journey of unity। বছর জুড়ে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে চিত্র প্রদর্শনী, তথ্যচিত্র নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ডাটাবেইজ ওয়েবসাইট থাকছে প্রকল্পে। ‘

The art of democracy, unity – a Journey of unity প্রকল্পের উপদেষ্টা ওয়াহিদ জামান জানান , ‘ জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডল ছড়িয়ে দিতে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে ডকুমেন্টারি নির্মাণ, আর্কাইভ বুক, ম্যাগাজিন প্রকাশের উদ্দ্যেগ নেয়া হয়েছে। মুলত আজকে জুলাই বিপ্লবের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের চিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে পুরো প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়েছে। ‘

ইফরাদ আবিদ ও সুমি শারমিনের উপস্থাপনায়  প্রথম পর্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইতিহাস সংরক্ষণের পুরো প্রকল্পের বিষয়টি দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন আল মাহমুদ বিন শামসুদ্দিন, মিনহাজ উদ্দিন, ইফফাত ফাইরুজ ইফা, সুমাইয়া খানম।

২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রছাত্রীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রদর্শনীতে গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি, আন্দোলনকারীদের স্মৃতিচারণ এবং ভবিষ্যৎ আন্দোলনের করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কালিয়াকৈরে শ্রমিক দলের বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচির আলোকে কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হুমায়ুন কবির খানের সমর্থনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল গাজীপুর জেলা শাখার কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌর শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচি শুরু হয় কালিয়াকৈর বাস টার্মিনাল থেকে।
র‍্যালিটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা, সফিপুর, মৌচাক, কোনাবাড়ি, বোর্ডঘর ও সূত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় বাস টার্মিনালে ফিরে এসে এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ও গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মিনার উদ্দিন, এবং গাজীপুর জেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আলহাজ্ব উদ্দিন যুবরাজ।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌর শ্রমিক দলের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দসহ বিপুলসংখ্যক শ্রমিক, পরিবহন কর্মী ও স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী।

বক্তারা বলেন, “গাজীপুর-১ আসনের শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষের প্রকৃত প্রতিনিধি হিসেবে মোঃ হুমায়ুন কবির খানই যোগ্য প্রার্থী। আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আহ্বান জানাই—গাজীপুর-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে মোঃ হুমায়ুন কবির খানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হোক।”

তারা আরও বলেন, “শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে সাধারণ জনগণের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি। এই ভোট হবে পরিবর্তনের ভোট, এই ভোট হবে শ্রমজীবী মানুষের সরকারের পক্ষে।”

র‍্যালি ও আলোচনা সভা চলাকালে কালিয়াকৈরের বিভিন্ন এলাকায় “ধানের শীষে ভোট দিন, শ্রমজীবীর জয় হোক”—এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো অঞ্চল।
শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের মুখে একটাই প্রত্যাশা—গাজীপুর-১ আসনে শ্রমিক নেতা মোঃ হুমায়ুন কবির খানকে সংসদে দেখতে চায় তারা।

পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবীতে চাটমোহরে জন সমুদ্রে..

পাবনা প্রতিনিধিঃ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে ঘিরে ৭০,পাবনা-০৩ (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তন এবং স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের দাবিতে সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল জনসমাবেশ। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে উপজেলা ও পৌর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় জনসমুদ্রের মতো এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপির কঠিন সময়েও চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরের নেতাকর্মীরাই দলকে টিকিয়ে রেখেছেন। মামলা, জেল, নির্যাতন সবকিছু মোকাবিলা করে তাঁরা বিএনপির পতাকা উড়িয়েছেন। অথচ এখন যদি বহিরাগত কাউকে ধানের শীষের প্রার্থী করা হয়, তা স্থানীয় নেতাকর্মীরা মেনে নেবেন না। তারা বলেন, এই এলাকার রাজনীতি এই এলাকার মানুষই ভালো জানে। বাইরে থেকে কাউকে এনে জনগণের ভোট চাওয়া সম্ভব নয়।

বক্তারা আরো সতর্ক করে বলেন, যদি স্থানীয়তার ভিত্তিতে যোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও ত্যাগী নেতাকে প্রার্থী করা না হয়, তবে নির্বাচনের ফলাফল দলের জন্য শুভ হবে না। মাঠ পর্যায়ে যারা বছরের পর বছর লড়াই করেছেন, তাদের উপেক্ষা করলে আন্দোলন-সংগ্রামের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ আসনে যেন স্থানীয় এবং ত্যাগী নেতারই মনোনয়ন দেওয়া হয়।

চাটমোহর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তায়জুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন,
চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য কে.এম আনোয়ারুল ইসলাম,চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা, ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাড. মজিবুর রহমান, ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মতিন রাজু, চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল আজিজ, ফরিদপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব কাকন হোসেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম, চাটমোহর পৌর বিএনপি নেতা আবু তালেব, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম হৃদয় সহ আরও অনেকে।

সমাবেশে বক্তারা এক কণ্ঠে বলেন, যারা দুঃসময়ে বিএনপির পতাকা ধরে রেখেছেন, যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদেরই প্রার্থী করা হোক। বহিরাগত চাপিয়ে দিলে মাঠে কোনো সাড়া মিলবে না। তবুও যদি বহিরাগত প্রার্থী কি রাখা হয় তবে এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের দায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের নয়, দলের উচ্চ পর্যায়কে নিতে হবে।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান হোসেন।

সমাবেশ শেষে স্থানীয় নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল বের করে চাটমোহর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। মিছিল শেষে তারা আবারও ঘোষণা দেন “চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া- ফরিদপুরের জনগণ স্থানীয় প্রার্থীই চায়; এই দাবির প্রতিফলন না ঘটলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ