আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসরেরা এখনো বহাল তবিয়তে: আবদুস সালাম মামুন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন বলেছেন, হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসরেরা এখনো বহাল তবিয়তে। বিগত ১৭ বছর আন্দোলনের ফলে জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে গত ৫ আগস্ট। জনগণের বিজয়ের মাধ্যমে শিশু ও গণহত্যাকারিরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশ থেকে স্বৈরাচার বিদায় হয়েছে।

এখন আমাদের দেশকে গড়তে হবে। আমরা জনগণের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে চাই। গত ১৭ বছর জনগণ ভোটাধিকার হারা। তাদের ভোটাধিকার ফেরত দিয়ে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে। জনস্রোতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভেসে গেছে। এক্ষেত্রে তারেক রহমানের সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা যে ইতিহাস তৈরি করেছে। তা পুরো পৃথিবীর ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি আজ শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব এস রহমান হলে দুপুর সাড়ে ১১ টায় ফ্যাসিবাদ উৎখাত আন্দোলন চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর শাখার প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী এম এ হাশেম রাজুর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের বাংলাদেশের সাংগঠনিক সচিব সাংবাদিক আলমগীর নূরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর যাবত গণতন্ত্র ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করেছি।

এখনো আন্দোলনে আছি আমরা, যতদিন জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারবে ততদিন অব্যাহত থাকবে আন্দোলন। তাই ভোটাধিকারের মাধ্যমে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপিলটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও বাসস ব্যুরো চীপ মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে। তারা বাংলাদেশকে লুটপাট ও মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার কিছু দোসর এখনও দেশে রয়ে গেছে, যারা আবারো দেশকে আক্রমণ করতে পারে। সেই ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক চোখ হারানো সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ বলেন, হাজার হাজার ছাত্র জনতার মায়ের বুক খালি হওয়ার মধ্য দিয়ে যে স্বপ্ন নিয়ে গত ১৭ বছর ধরে স্বৈরাচারমুক্ত একটি নতুন মানবিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো কায়েম করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র রক্তে রঞ্জিত হয়েছিলো সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ফ্যাসিবাদ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের মাটিতে অব্যাহত থাকবে।

এম এ হাশেম রাজু বলেন, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে একযোগে দল মতের উর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি। গত ১৭ বছরের সব ঝড়-ঝঞ্ঝা আর গ্লানি মুছে দিয়ে এই নতুন প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমরা থামব না, আমরা আমাদের স্বপ্ন পূর্ণ করবই।

সংগঠনের বাংলাদেশে সাংগঠনিক সচিব সাবেক ছাত্রনেতা আলমগীর নূর বলেন, গত ১৭ বছরে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার আইনের সুশাসন, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা, জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ধ্বংস করে দিয়েছে। এখনো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোগুলোতে সেই স্বৈরাচারের দোসর বহাল তবিয়তে রয়েছে। অনতিবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনুস সাহেব আপনি দ্রুত সময়ের মধ্যে দেশের সের্বোচ্চ রাষ্ট্র কাঠামো সচিবালয়সহ সারাদেশে ঘাপটি মেরে বসে থাকা খুনি স্বৈরাচারের দোসরদের বাধ্যতামূলক অবসরের ব্যবস্থা করবেন নইলে দুর্বার গণ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বিশেষ অতিথি ডেনমার্ক বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার খান বলেন, গত ১৪ বছর নিজের মা-বাবার চেহারা দেখিনি, ফ্যাসিষ্ট হাসিনা রাষ্ট্রদ্রোহীর মামলার হুমকী দিয়েছে, দেশে থাকা পরিবার পরিজনকে।

ডেনমার্ক বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সোনিয়া আফরোজ খান বলেন, বিদেশের মাটিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আকাংখা বুকে ধারণ করে দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ডেনিচ ও ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ঘেরাও করে প্রতিদিন মিছিল মিটিং করেছি। দেশে আর কোন ফ্যাসিষ্ট দেখতে চাই না।বক্তব্য রাখেন এডভোকেট আবদুল মান্নান, জায়েদ তালুকদার, ফরিদ উদ্দিন, মিনহাজ উদ্দিন চৌধুরী রানা, মোহাম্মদ জায়েদ উদ্দিন, সাবেক ছাত্র নেতা ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, এড: সৈয়দ এহেসানুল হক, ডবলমুরিং থানা বিএনপি নেতা হাজী আবদুর রহিম, সাংবাদিক নুররুল ইসলাম রিপন, জাহিদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ শফিকুর

রহমান, সাংবাদিক মোঃ ইমতিয়াজ ফারুকী, ইঞ্জিনিয়ার মাজেদুল আলম, ওসমান সরওয়ার খান, মো: রাশেদ, মো. মিজান, মো: বাবুলু, মো: খোকন, মো: আকতার, মো: মিনহাজ রানা, মো. শাকিল, মো. তায়েস, মো: জাহেদ, মো: নুরুল আলম ও মো: আরিফ প্রমুখ। প্রতিনিধি সম্মেলনে হাউজের নিকট উপদেষ্টা মন্ডলীতে ৩ জনের নাম ঘোষণা করা হয়। মো: জাহিদুল করিম কচি, মো: শাহ নওয়াজ ও কামরুল হুদা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ