আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাড়ে ৪শ বছরেও অপরূপ মাসুম খাঁ কাবুলি মসজিদ

পাবনা প্রতিনিধিঃ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

পাবনার বিখ্যাত চলনবিল অঞ্চলের ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর এর ৪৪৪ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে আজও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়েছে তিন গম্বুজবিশিষ্ট ‘শাহী মসজিদ’। শাহী মসজিদটি বাংলার মুসলিম স্থাপত্যে একটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করে। পাবনা-ভাঙ্গুড়া মহাসড়কে চাটমোহর শহরের ভাদুনগর মোড় থেকে ১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম কর্নারে সুলতানী মোঘল আমলের নিদর্শন নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যের ৪৪৪ বছরের মসজিদটি। কাকশাল গোত্রের সন্তান খান মুহাম্মদ তুকি খান ৯৮৯ হিজরি অর্থাৎ ১৫৮১ খ্রিষ্টাব্দে আকবরের শাসনামলে সৈয়দ নেতা আবুল ফতে মোহাম্মদ মাসুম খাঁর অর্থায়নে তারই সহোদর মুহাম্মদ বিন তুর্কি খান (কাকশাল) চাটমোহরে মসজিদটি নির্মাণ করেন। সম্রাট আকবরের সময়কালে মসজিদটি মাসুম খাঁ কাবুলি নামে নামকরণ করা হয়। বর্তমানে চাটমোহর শাহী মসজিদ নামে সর্বাধিক পরিচিত। চাটমোহরের তিন গম্বুজ শাহী মসজিদের শিলালিপিতে এর নির্মাতা ও নির্মাণকাল সম্বন্ধে এ পর্যন্ত কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি।

চাটমোহর উপজেলা উইকিপিডিয়া সূত্রে ও মুসল্লিদের নিকট থেকে জানা যায়, চাটমোহর শাহী মসজিদটি কালের বিবর্তনে এক সময় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ১৯৮০ এর দশকে বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর মসজিদটির অবকাঠামো ঠিক রেখে নতুনভাবে নির্মাণ করেন। তবে পুনর্নিমাণের কয়েক বছর পর মসজিদের তিনটি গম্বুজ ও ছাদ প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের অধীনে মসজিদ সংস্কার ও সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মাসুম খাঁ কাবুলি মসজিদ একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। মসজিদটি সংস্কারের সময় এর অভ্যন্তরে একটি তুঘরা শিলালিপি পাওয়া যায়। শিলালিপিটি বর্তমানে রাজশাহী বরেন্দ্র জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। চাটমোহর এক সময় মোগল পাঠানদের অবাধ বিচরণভূমি এবং অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা ছিল।

মসজিদটির ভেতরের দৈর্ঘ্য ৪৫ ফুট, প্রস্থ প্রায় ২২ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং উচ্চতা ৪৫ ফুট। ক্ষুদ্র পাতলা নকশা খচিত লাল জাফরি ইটে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির সামনে ইদারার গায়ে কালেমা তাইয়্যেবা লিখিত এক খন্ড কালো পাথর আজো শোভিত আছে। মসজিদ অভ্যন্তরে মেহরাবের চারদিকে ইটের কারুকাজ লক্ষণীয়। ফলকে খোদাইকৃত ফার্সি অক্ষরে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস লিপিবদ্ধ রয়েছে।

বর্তমানে মসজিদটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি রয়েছেন পদাধিকার নিয়মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুসা নাসের চৌধুরী। আর পেশ ইমাম হিসাবে হাফেজ কাজী আব্দুস সালাম মাসুদ এবং মুয়াজ্জিন হিসেবে রয়েছেন তরিকুল ইসলাম। আর পুরাকৃর্তি ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের পক্ষে পরিচালক হিসেবে আছেন শাহজাহান আলী। শাহজাহান আলী তিন দশকের বেশি সময় ধরে এই শাহী মসজিদের দেখাশোনা করছেন।

পরিচালক শাহজাহান আলী বলেন, নথিপত্রে চাটমোহর শাহী মসজিদ মাসুম খাঁনের নামে পাওয়া গেলেও সুলতানী-মোঘল আমলের শাহী মসজিদ মনে করে সারাবছরে বহু মানুষ আসেন পাবনার চাটমোহরে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা আসেন একসারিতে তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদ ও এর কারুকাজ দেখতে। সংস্কারের মাধ্যমে মূল কাঠামো ও সৌন্দর্য ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা থেকে আসা শহিদুল ইসলাম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আমি অনেক বছর হচ্ছে শুনেছি চাটমোহরে মোঘল আমলের স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন চাটমোহরে প্রায় সাড়ে ৪শ বছরের পুরাতন মাসুম খাঁ কাবুলি নামে মসজিদ আছে। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট চাটমোহর শাহী মসজিদের নির্মাণ কৌশলে প্রাচীন সুলতানী স্থাপত্যের প্রভাব রয়েছে। আজ এসে নিজ চোঁখে দেখে অনেক ভালো লাগলো, মসজিদে নামাজ আদায় করলাম, সকলের জন্য দোয়া করেছি।

মসজিদের মুয়াজ্জিন মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, মাসুম খাঁ কাবুলি এই এলাকা শাসনকালে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট প্রার্থনাকক্ষ নির্মাণে মুগল রীতি মসজিদ নির্মাণ পরিকল্পনার একটি পরিপুর্ণ রূপ হিসেবেই বিবেচিত হয়। বাংলায় বিদ্যমান মুগল ইমারতের মধ্যে এই মসজিদটি সর্ব প্রাচীন নিদর্শন। যদিও ইমারত টি মুগল আমলে নির্মিত কিন্তু এটি বর্তমান রূপে এ অঞ্চলের সুলতানি স্থাপত্য রীতির সুস্পষ্ট প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। প্রায় প্রতিদিন অনেকেই আসেন দেখতে, ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ এমন একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি।

মসজিদের ইমাম হাফেজ কাজী আব্দুস সালাম মাসুদ বলেন, দূর থেকে মসজিদটি বিশাল মনে হলেও, ভেতরে মাত্র দুই কাতার লোক নামাজে দাঁড়াতে পারেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও জুমার নামাজ আদায় হয় এই মসজিদে। এছাড়া, মসজিদের বাইরে দু’টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় সাড়ে ৪শ বছর পূর্বে নির্মিত এই মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী ভিড় করেন।

কেউ মসজিদটি দেখতে আসতে চাইলে, ঢাকা থেকে ঢাকা-ঈশ্বরদী রেলরুটের ভাঙ্গুড়ার বড়াল ব্রীজ স্টেশনে ও চাটমোহর স্টেশনে নেমে মাত্র ৯ ও ৪ কিলোমিটার পশ্চিম ও উত্তরে অটোরিকশা বা ভ্যানে চড়ে সহজে আসতে পারবেন। ঢাকার কমলাপুর থেকে সকালে আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেসে চড়ে চাটমোহরে পৌঁছাবেন দুপুরে, সময় লাগবে মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টা। চাটমোহরে ভালো মানের খাবার হোটেল রয়েছে। দুপুর থেকে ঘুরে বিকেলে পদ্মা এক্সপ্রেসে চড়ে আবার ঢাকা ফিরে যেতে পারবেন। এছাড়া, রাতযাপন করতে চাইলেও চাটমোহর, পাবনা ও ঈশ্বরদীতে রয়েছে আধুনিক সব হোটেল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ