আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে তালাবদ্ধ বাসা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার, খুনের রহস্য উদঘাটন

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মহানগরীতে তালাবদ্ধ বাসা থেকে অজ্ঞাত হিসেবে এক নারীর লাশ উদ্ধারের পর তার পরিচয় ও খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার সকালে মহানগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধারের সময় প্রতিবেশিরা ওই নারী পোশাক কারখানার কর্মী বলে নিশ্চিত করেন। তবে তার নাম-পরিচয় কেউ জানাতে পারেনি। স্বামী পরিচয়ে তার সঙ্গে থাকা যুবক ও চার বছর বয়সী এক ছেলে ওই বাসায় থাকার তথ্য পেলেও লাশ উদ্ধারের সময় তাদেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।পরবর্তীতে বাসার পাশে একটি দোকানে থাকা ক্যাশ-মেমোতে থাকা একটি মোবাইল নম্বরের সূত্রে হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলতে শুরু করে।

সংবাদ সম্মেলনের তথ্য অনুযায়ী, ওই মোবাইল নম্বরের সূত্রে ঢাকার পোস্তগোলায় ইব্রাহিম হাওলাদারের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর ইব্রাহিম চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পৌঁছে বাগেরহাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাটগামী রয়েল পরিবহনের বাসে তল্লাশি করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ইব্রাহিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নিহত নারীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য পায় ডিবি। তার নাম টুম্পা আক্তার (২২)। তার বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। তিনি নগরীর সিইপিজেডে প্যাসিফিক জিনস কারখানায় কর্মরত ছিলেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বলেন, টুম্পার সঙ্গে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়। সেই সংসারের চার বছর বয়সী এক ছেলে নিয়ে সে কলসি দিঘীর পাড়ে ভাড়া বাসায় থাকতো। সেখানে স্বামী পরিচয় দিয়ে ইব্রাহিমকে সে সঙ্গে রেখেছিল। বাস্তবে তারা স্বামী-স্ত্রী ছিলেন না। বিয়েবর্হিভূত সম্পর্ক কন্টিনিউ করতে গিয়ে তাদের মধ্যে নানা কারণে মনোমালিন্য হয়।ঘটনার রাতে ঝগড়ার জেরে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে ইব্রাহিম। এরপর টুম্পার ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে যায়। বাসার কাছে রাস্তায় তাকে ফেলে রেখে ইব্রাহিম পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ রাতে নগরীর বন্দর থানার কলসি দিঘীর পাড় এলাকায় একটি ভবনে তালাবদ্ধ বাসা থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে ওই নারীর নাম-পরিচয় কিছুই পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, তাকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের হয়। ডিবি খুন হওয়া নারীর পরিচয় উদঘাটন ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কাজ শুরু করে। এরপর শুক্রবার রাতে ঢাকার পোস্তগোলা থেকে ইব্রাহিম হাওলাদার (২৪) নামে এক যুবককে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে ডিবি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ