আজঃ শুক্রবার ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

চট্টগ্রামে শিশু আপহরনের প্রধানসহ গ্রেপ্তার তিনজন

এম মনির চৌধুরী রানা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর এলাকা বাসিন্দা মহিউদ্দিন। কাজ করতেন নগরীর চকবাজারের একটি ফটোকপির দোকানে। এরমধ্যে জড়িয়ে পড়েন অনলাইন জুয়া খেলায়। জুয়া খেলে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। টাকার অভাবে অপহরণের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ এলাকা থেকে আফরান নুর আবির (৮) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে অপহরণ করে। কিন্তু মুক্তিপণ আদায়ে পুলিশের পাতানো ফাঁদে পড়ে ধরা পড়ল অপরহরণকারী চক্র। গত ২৫ মার্চ (সোমবার) দুপুরে অপহৃত হয় মতে, বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মো. আফরান নুর আবির (৮)। আবির ওই এলাকার নুরুল আজিমের ছেলে। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সবার ছোট। অপহৃত আবিরের বাবা নুরুল আজিম বলেন, ২০১২ সালের দিকে নগরীর চকবাজারে ফটোকপির দোকানে পরিচয় হয় বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের মহিউদ্দিনের সঙ্গে। সেই সূত্রে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। অনেক টাকা ধার দিয়েছিলাম। ২০২২ সালে দেখা করে টাকা ধার চেয়েছিল। কিন্তু দিতে পারিনি। কিন্তু সেই মহিউদ্দিন এমন ঘটনা ঘটাবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।
বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবিরের বাবা থানায় জিডি করলেও কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। একদিন পর (২৬ মার্চ মঙ্গলবার) ভোরে আবিরের পিতার মোবাইলের ইমুতে এক ব্যক্তি টেক্সট (বার্তা) পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। সেই সূত্র ধরে আবিরের ছবি নিয়ে নিশ্চিত হই। তারপর টাকার অঙ্ক নিয়ে দর কষাকষি চলে। চার লাখ টাকায় রাজি হয় অপহরণকারীরা।রওসি বলেন, ‘তাদের দাবি মতো পর্যায়ক্রমে চার লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে পাঠানো হয়। এরপর ২৬ মার্চ দুপুরে আবিরকে নগরীর চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকার একটি মাদ্রাসার সামনে সিএনজি ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দেয়। আবিরকে অক্ষত উদ্ধার করে অপহরণকারীদের ধরার অভিযান শুরু হয়। পুরো বিষয়টি মনিটরিং ও নির্দেশনা দেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু স্যার। পুলিশ সূত্র জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জেলা ডিবি ও বাঁশখালী থানা পুলিশের সহায়তায় অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি ট্যাক্সিসহ চালক নুরুল আলমকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে, যশোর জেলার শার্শা থানা পুলিশ মুক্তিপণের টাকা গ্রহণের সময় ইকবাল হোসেন (২৭) এবং মূল পরিকল্পনাকারী মহিউদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বোয়ালখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. খায়রুল ইসলাম খান বলেন, ‘অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী মহিউদ্দিন অনলাইনে জুয়া খেলে। জুয়া খেলে টাকা পয়সা সব হারিয়ে ফেলে। আবিরের পিতার কাছে সম্প্রতি টাকা ধার চেয়েছিল মহিউদ্দিন। মূলত টাকার জন্য আবিরকে অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন স্বামীসহ দুজনের ফাঁসির আদেশ।

চট্টগ্রামে খুনের মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন একটি আদালত। একই রায়ে আদালত প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের মামলায় এসব আদেশ দেন। দণ্ডিত দুজন হলেন, মো. ফরহাদ (৩২) ও সেলিম মনির (৩৭)। তাদের দুজনেরই বাড়ি ভোলা জেলায়।

অন্যদিকে, একই আদেশে লাশ গুম করার অভিযোগে প্রত্যেক আসামিকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত স্বামী ফরহাদ ও তার মামা সেলিম মনিরকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। একই রায়ে আদালত প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। অন্যদিকে, লাশ গুম করার অভিযোগে প্রত্যেক আসামিকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডসহ অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। তিনি আরও জানান, রায়ের সময় দুই আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, খুনের শিকার জেসমিন বেগমের সঙ্গে আসামি মো. ফরহাদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তারা ছয় লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন। জেসমিন ও ফরহাদ দুজনেরই আগে সংসার ছিল। আগের স্বামী ভরণ-পোষণ না দেওয়ায় জেসমিন তার দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নগরীর চান্দগাঁও এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। চান্দগাঁও এলাকার মার্ক ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় তিনি সিনিয়র অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন। অন্যদিকে, জেসমিনের স্বামী ফরহাদ ছিলেন দিনমজুর। ভোলায় তার স্ত্রী থাকলেও সেটা গোপন রেখে তিনি জেসমিনকে বিয়ে করেছিলেন। তবে তারা আলাদা থাকতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকবার ঝগড়াও হয়েছিল। পরে ফরহাদ তার মামা সেলিম মনিরের সঙ্গে জেসমিনকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।

২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ফরহাদ জেসমিনের মোবাইলে কল দিয়ে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় দেখা করতে বলেন। পরে সেখান থেকে তারা একে খান এলাকার গ্যাসলাইন পাহাড়ে যান। সেখানেই মামা সেলিম মনিরের সহায়তায় জেসমিনকে গলা টিপে খুন করেন ফরহাদ। এরপর পাহাড়ের ঝোপের মধ্যে লাশ ফেলে তারা চলে যান। ২ অক্টোবর পুলিশ জেসমিনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জেসমিনের ছোট ভাই বাদী হয়ে আকবরশাহ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে নারায়নগঞ্জ থেকে ফরহাদ ও চটগ্রাম থেকে সেলিম মনিরকে গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১৭ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন।

মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ব্যবসায়ী আটক।

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় মাদ্রাসা পড়ূয়া চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক মুদি দোকানির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পরপরই অভিযুক্ত মুদি দোকানি মোজাম্মেল হোসেনকে (৫৫) নামের এক মুদি দোকানিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের দক্ষিণ চৈতানগর গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে।

একই দিন দুপুরের দিকে আটক মোজাম্মলে হোসেনকে জেলা আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারি সকালে ভুক্তভোগী ছাত্রী মাদ্রাসায় পরীক্ষার ফি দেওয়ার জন্য তার বাবার কাছ থেকে ১৩০ টাকা নেয়। মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে মোজাম্মেল হোসেনের দোকান থেকে ১০টাকার দামের একটি কলম কিনেন। মনের ভুলে বাকী টাকা দোকানে ফেলে রেখে চলে যায় ভুক্তভোগী। কিছুক্ষণ পর ফেলে আসা টাকা আনতে পুনরায় মোজাম্মেলের দোকানে যায়। এসময় মোজাম্মেল বলেন দোকানে টাকা নেই। বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা আনতে। পরে সে মোজাম্মেলের বাড়িতে টাকা আনতে যায়। এসময় মোজাম্মেলের সাথে ভুক্তভোগী পিছু নেয়।

প্রবেশ করতেই মোজাম্মেল ঘরের দরজা বন্ধ করে হাত-মুখ বেঁধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে ১৭ ও ১৯ জানুয়ারি চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে পুনরায় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন মোজাম্মেল। আর এ ঘটনাটি কাউকে বললে ওই ছাত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলেও ভয় দেখান মোজাম্মেল। এরপর থেকে ওই ছাত্রী মাদ্রাসায় যেতে রাজি হচ্ছিলনা। কেন সে মাদ্রাসায় যেতে চায়না এর কারণ তার মা জানতে চাইলে কয়েকদিন পর বিষয়টি সে তার মার কাছে খুলে বলে। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন পর আজ (মঙ্গলবার) ভুক্তভোগরি বাবা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন জানান, মাদরাসার শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মোজাম্মেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পরপরই মোজাম্মেল হোসেনকে আটক করে দুপুরে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী ছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ