আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর রেলসহ সড়ক সেতুর নির্মাণকাজ আগামী মাসে শুরু।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের কালুরঘাটে বহুল প্রত্যাশিত কর্ণফুলী নদীর ওপর রেলসহ সড়ক সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে পারে আগামী মে মাসে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে পারেন। তবে পুরোপুরি নির্মাণকাজ শুরুর জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আরও অন্তত দেড় বছর।

ছয় মাস আগে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু পরামর্শক নিয়োগেই পার হয়ে যাচ্ছে এক বছরেরও বেশিসময়। এর পর আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে নির্মাণকাজ শুরু করতে ২০২৬ সালের শেষ কিংবা ২০২৭ সালের শুরু নাগাদ লাগবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

অন্তবর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক জানিয়েছেন, আগামী ১৪ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আসবেন। একইদিন কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত আছে। বুধবার (২ এপ্রিল) চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ওমর ফারুকের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।

অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর তাদের দ্বিতীয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল-কাম-রোড সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা বাস্তবায়ন করবে রেল কর্তৃপক্ষ।

একনেকে অনুমোদনের পর প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছিলেন, এক বছরের মধ্যে পরামর্শক নিয়োগসহ আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২৬ সালের শুরুর দিকে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ সেই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। কিন্তু পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও একবছর বেশি সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন তারা।

এর মধ্যে কালুরঘাট সেতু নির্মাণে একজন পূর্ণকালীন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতদিন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফা অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিচ্ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরীকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সূত্রমতে, ফেব্রুয়ারিতে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পর পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইওআই (এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) আহ্বান করা হয়েছে। ১৭ মার্চ ছিল আগ্রহীদের কাছ থেকে প্রস্তাব গ্রহণের শেষ সময়। ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর দেওয়া প্রস্তাব যাচাইবাছাই শুরু হবে।

কালুরঘাট সেতুর প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রস্তাব চেয়ে ইওআই কল করা হয়েছে। যারা প্রস্তাব দেবেন, তাদের কোয়ালিটি যাচাইবাছাই করতে হবে। ঈদের ছুটির পর এটা আমরা শুরু করব। এটা একেবারে প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় আছে। চূড়ান্তভাবে কনসালট্যান্ট নিয়োগ দিতে আমাদের চলতি বছর পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপর ডিটেইল ডিজাইন হবে। এরপর আমরা টেন্ডার কল করব। এটা করতে আরও এক বছরের মতো লাগবে। কন্ট্রাক্টর নিয়োগ হওয়ার পর কাজ শুরু হবে।

তিনি বলেন, আশা করছি ২০২৬ সালের শেষদিকে অথবা বড়জোড় ২০২৭ সালের শুরুর দিকে আমরা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করতে পারব। প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের শেষদিকে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করে রেল ও সড়কযান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হবে।

সূত্রমতে, সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে সহজ শর্তে ৮১ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার ঋণ পাচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৯ হাজার ৫৩৪ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা হিসেবে)। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে ৭২ কোটি ৪৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএফ) তহবিল থেকে ৯ কোটি ১ লাখ ৮০ হাজার ডলার ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

ইডিসিএফ’র আওতায় ঋণচুক্তির সুদের হার ০.০১ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাড়ে ১৫ বছর, তবে গ্রেস পিরিয়ডসহ সাড়ে ৪০ বছর। ইডিপিএফ তহবিলের আওতায় ঋণচুক্তির সুদের হার ১ শতাংশ ও ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ৭ বছর, গ্রেস পিরিয়ডসহ মেয়াদ ৩০ বছর। সুদের হার ও শর্তাবলী উভয় ঋণের ক্ষেত্রেই নমনীয়। দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণের পর বাকি টাকা সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

গত বছরের ২৭ জুন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়েছিল। তখন রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, জুলাইয়ে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হবে। কিন্তু ছাত্র-জনতার প্রবল গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখবে কি না, তা নিয়ে নানামুখী আলোচনা তৈরি হয়। তবে শেষপর্যন্ত অন্তবর্তী সরকার প্রকল্পটি দ্রুততার সঙ্গে একনেকে অনুমোদন দেয়।

সূত্রমতে, পরামর্শক নিয়োগ, ডিটেইল ডিজাইন ও দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়ার মধ্যেই ভূমি অধিগ্রহণের কাজ এগিয়ে রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সেতুর জন্য মোট ১৪০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে ষাট শতাংশ রেলওয়ের মালিকানাধীন ও সরকারি খাসজমি। বাকি চল্লিশ শতাংশের মতো ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমি।
কালুরঘাট সেতুর প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী, কর্ণফুলী নদীর ওপর বিদ্যমান রেলসেতুর ৭০ মিটার উজানে নতুন সেতু নির্মিত হবে। সেতুর দুই পাশে দুই লেন করে চার লেনের সেতু তৈরি করা হবে। এক পাশে চলবে ট্রেন, অন্যপাশে বাস-ট্রাকসহ সাধারণ যানবাহন। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার। পানি থেকে সেতুর উচ্চতা ১২ দশমিক ২ মিটার। ভায়াডাক্টসহ সেতুর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৬ কিলোমিটার।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন ২০ জোড়া ট্রেন এবং দিনে প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। এর মাধ্যমে আনুমানিক ১০ মিলিয়ন মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। সাড়ে তিন দশকেরও বেশিসময় ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কোটি মানুষ কালুরঘাট সেতুর অপেক্ষায় আছে। অন্তবর্তী সরকার দ্রুততার সঙ্গে একনেকে অনুমোদন দেয়ায় বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়।
বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক মুস্তফা নঈম বলেন, আমরা চাই সকল প্রক্রিয়া সুচারুরূপে সম্পন্ন করে দ্রুততার সঙ্গে কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হোক।

একনেকে দ্রুত অনুমোদন দিয়ে অন্তর্র্বতী সরকার চট্টগ্রামের প্রতি তাদের আন্তরিকতার প্রমাণ দিয়েছে। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে সেটার আরও অগ্রগতি হবে। সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা চাই, সেতুটির নির্মাণকাজ প্রত্যাশিত সময়ে সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক। আমাদের অনুরোধ, আর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা কিংবা কালক্ষেপণ যেন না হয়। সেজন্য সরকারের বিশেষ নজর প্রত্যাশা করছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ