আজঃ বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর, ২০২৫

নেপালের ভয়ংকর তুষারপ্রবণ অন্নপূর্ণা-১ জয় করে নিজভূমে বাবর আলী।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলী নেপালের ভয়ংকর তুষারপ্রবণ ও খাড়া অন্নপূর্ণা-১ জয় করে ইতিহাসে নিজের নাম লেখালেন। দীর্ঘ ও দুরূহ অভিযান শেষে ১৫ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশে ফেরেন। বুধবার এ উপলক্ষে বাবরের ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’এর আয়োজনে নগরের আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম মিলনায়তনে আয়োজিত হয় এক সাংবাদ সম্মেলন ও জাতীয় পতাকা প্রত্যর্পণ অনুষ্ঠান।

গতবছর এভারেস্ট ও লোৎসে জয় করেছিলেন তিনি। আর এবার সেই পর্বত, যা উচ্চতায় দশম হলেও কৌশলগত দিক থেকে দুনিয়ার অন্যতম ভয়ঙ্কর। খাড়া ঢাল, ক্ষণিকেই বদলে যাওয়া আবহাওয়া, আর আচমকা তুষারধস—এই সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে পৌঁছেছেন চূড়ায়।
সাংবাদ সম্মেলন বাবর জানান, পৃথিবীতে আট হাজার মিটার বা তার বেশি উচ্চতার মোট ১৪টি পর্বত রয়েছে। আমি চাই একে একে সবগুলো জয় করতে। এই লক্ষ্যেই গত বছর এভারেস্ট ও লোৎসে এবং এবার অন্নপূর্ণা-১ জয় করেছি। যদিও অন্নপূর্ণা দশম সর্বোচ্চ, তবে

টেকনিক্যালি এটি বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পর্বতগুলোর একটি। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ চ্যালেঞ্জ ছিল ক্যাম্প-২ থেকে ক্যাম্প-৩ পর্যন্ত অংশে। পাথর খসে পড়া ও তুষারধসের আশঙ্কা সবসময় ছিল। সামিট পুশের দিন একটানা প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা উপরের দিকে ওঠার পর চূড়ায় পৌঁছাই, এরপর ফিরে আসতে সময় লাগে আরও ৯ ঘণ্টা, মোট সাড়ে ২৬ ঘণ্টার এই যাত্রা ছিল শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম পরীক্ষা।

অভিযানের ব্যবস্থাপক ও ক্লাবের সভাপতি ফরহান জামান বলেন, বাবরের ধারাবাহিক সফলতা প্রমাণ করে, উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তিনি বিশ্বের মাত্র ৭১ জন পর্বতারোহীর তালিকায় নাম লেখাতে পারেন, যারা সব ১৪টি আট-হাজারি পর্বত জয় করেছেন।
ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স’র উপদেষ্টা শিহাব উদ্দীন বলেন, আধুনিক বিশ্বে দেশকে ব্র্যান্ডিং করার শক্তিশালী মাধ্যম হলো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। পর্বতারোহণের মতো চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জ জয় করে বাবর দেখাচ্ছেন, আমরা আর শুধু ভেতো বাঙালি নই—আমরাও পারি পর্বতের মতো অটল হয়ে দাঁড়াতে।

সাংবাদ সম্মেলন বক্তব্য রাখেন, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ নুর ফয়সাল এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম-এর পরিচালক ব্রুনো লাক্রাম্প।
জানা গেছে, বাবরের এই অভিযানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার্স লি., ভিজ্যুয়াল ইকো স্টাইলওয়্যার লি., এডিএফ এগ্রো, ফ্লাইট এক্সপার্ট, এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এবং ব্লুজে।

সাংবাদ সম্মেলন শেষে বাবর আলী ক্লাবের কর্মকর্তাদের হাতে জাতীয় পতাকা প্রত্যর্পণ করেন, যেটি নিয়ে তিনি একে একে জয় করেছেন এভারেস্ট, লোৎসে এবং সর্বশেষ অন্নপূর্ণা-১। তাঁর লক্ষ্য বাকি ১১টি আট-হাজারি পর্বতের চূড়ায়ও উড়ুক এই লাল-সবুজ পতাকা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

নেত্রকোনা গাঁজাসহ ২ মাদক কারবারি গ্রেফতার

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ১২ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।এরআগে গতকাল মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে পৌরশহরে চেকপোস্ট বসিয়ে তলাশি করার সময় ওই দুইজনকে গাঁজাসহ গ্রেফতার করা হয়।মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতাররা হলেন— হবিগঞ্জ জেলার মাদবপুর এলাকার অন্তু সাঁওতাল (২৫) ও মো. আব্দুল করিম (১৮)।পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে পৌরশহরের স্টেশনরোড এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহজনক যানবাহন তল্লাশি করছিলেন এসআই মো. রবিউল আওয়ালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। এসময় যাত্রীবেশে থাকা ওই দুই যুবকের ব্যাগ তল্লাশি করে ১২ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। পরে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।

মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। আজ সকালে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ছবি যুক্ত,
মোঃ নূর উদ্দিন মন্ডল দুলাল
নেত্রকোনা।
১২ নভেম্বর ২৫
০১৭১১০০১৭১৯

পূর্বধলায় গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু।

নেত্রকোণার পূর্বধলায় গাছের ডালের প্রায় ১৪-১৫ ফুট উঁচুতে ঝুলন্ত অবস্থায় লিটন মিয়া (২২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পূর্বধলা থানা পুলিশ। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার খলিশাউড় ইউনিয়নের হাঁপানিয়া মধ্যপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।মৃত লিটন মিয়া ওই গ্রামের মো. খাদেমুল ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে প্রতিবেশী মো. সেলিম মিয়া দেখতে পান, লিটন মিয়া একটি আমগাছে পুরনো নাইলনের রশি দিয়ে গাছের ডালের প্রায় ১৪-১৫ ফুট উঁচুতে ঝুলে আছেন। তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন, মৃতের পরিবারের সদস্যরা ও স্বজনরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে লিটনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।খবর পেয়ে পূর্বধলা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন-চার বছর আগে পাইলিংয়ের কাজে অংশ নেওয়ার সময় লিটন পিঠে আঘাত পান। এরপর থেকে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মানসিকভাবেও ভেঙে যান। পরিবারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে হতাশার কথাও বলতেন বলে জানা গেছে।

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নূরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ