আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সকল গৌরবময় অর্জনে শ্রমিক-জনতার অবদান রয়েছে: শাহজাহান চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশের সব গৌরবময় অর্জনে শ্রমিক-জনতার বিশাল অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শ্রমিকরাই সম্মুখযুদ্ধ করেছে।জীবন দিয়েছে। বুকের রক্ত দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছে।চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আমার ভাই উমর ফারুকসহ দুই শতাধিক শ্রমিক শাহাদতবরণ করেছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে শ্রমিক সমাবেশ ও র‌্যালিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান উপদেষ্টা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জীবন, রক্ত ও ঘামের দাঁড়িয়ে আছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। অতএব, শ্রমিকদের নাগরিক অধিকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পূরণ করতে হবে। শ্রমিকদের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং শ্রমিকসন্তানদের শিক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হতে হবে শ্রমিকবান্ধব। শ্রমিকদের যথাযথ অধিকার প্রদানের মাধ্যমেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। আর শ্রমিকবান্ধব ও ইনসাফভিত্তিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে শ্রমিকজনতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নগর সভাপতি এসএম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশ ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমীন।

শাহজাহান চৌধুরী আরো বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমার ভাই শ্রমিকনেতা উমর ফারুক হত্যার প্রধান আসামি হিসেবে ফ্যাসিবাদের জননী হাসিনার বিচার করতে হবে। কারণ, জুলাইয়ের সব হত্যাকাণ্ড ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে। জুলাই গণহত্যায় জড়িত চট্টগ্রামের ফ্যাসিবাদের ধারকদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা শ্রমিক-মালিক ভেদাভেদে বিশ্বাসী নই। আমরা শ্রমিক-মালিক সংঘাত চাই না।

কিন্তু তাই বলে শ্রমিকদের শোষণ করা হবে, সেটা আমরা হতে দেবো না। শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস প্রতি বছর আমাদের ডাক দিয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রতি বছর ব্যাপকভাবে এই দিনটি পালন করা হলেও শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের কোনো অগ্রগতি ঘটে না। বিশ্বের নানাপ্রান্তে শ্রমিকরা আজও নিষ্পেষিত-নির্যাতিত হচ্ছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকরা অবাধে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার থেকে বঞ্চিত। স্বৈরাচার সরকারের সময় শ্রম অধিদপ্তরের কর্তারা নানা ঠুনকো অজুহাত ও নানাবিধ শর্তের বেড়াজালে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি। বিশেষত চট্টগ্রামে সে সময়ে যারা শ্রম অধিদপ্তরে নিয়োজিত ছিল, তারা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।

আজকে দেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। মানুষ মুক্তভাবে নিশ্বাস নিচ্ছে। বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। এই সময়ে এসে শ্রমিকরা যেন তাদের অধিকার আদায়ের সংগঠন অবাধভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সেজন্য চট্টগ্রাম শ্রম অধিদপ্তরের কর্তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি বলেন, জুলাই ৩৬ ও চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের দেশ গড়ার এক ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। হাজারো শহীদ ও অসংখ্য তরুণ, শ্রমিক-জনতার আত্মত্যাগ কোনোভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশ গড়ার ও শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রমিক-জনতাকে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে এস এম লুৎফর বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের প্রেরণার দিন। শ্রমিকদের রক্তাক্ত ইতিহাসের এই দিনে আমাদের একটাই শপথ, আমরা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে এগিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। যেখানেই শ্রমিকরা নির্যাতিত হবে, সেখানেই শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন তার প্রতিকার করতে হাজির হয়ে যাবে। শ্রমিকজনতাকে সাথে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে ফেডারেশন ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে, ইনশাআল্লাহ।

বক্তব্য রাখেন, জামায়াত মনোনীত চট্টগ্রাম ১০ আসনের প্রার্থী অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম ৯ আসনের প্রার্থী ডা. এ.কে.এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম ১১ আসনের প্রার্থী মুহাম্মদ সফিউল আলম, চট্টগ্রাম ৮ আসনের প্রার্থী ডা. আবু নাছের, নগর ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মকবুল আহমদ ভূঁইয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শিহাব উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুল ইসলাম, কোতোয়ালী থানার উপদেষ্টা মোস্তাক আহমদ ও নগর ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।উপস্থিত ছিলেন নগর ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ এম আসাদ, প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম ও রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মজুমদার প্রমুখ।

সমাবেশের পর শ্রমিক-জনতার র‌্যালি পুরাতন রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে নিউমার্কেট, কোতোয়ালী মোড়, লালদীঘি ও বকশিবিট হয়ে আন্দরকিল্লা চত্বরে শেষ হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান জামায়াতে যোগ দিলেন

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জামায়াতে যোগ দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান। শনিবার ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।

জামায়াত আমিরের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি সংগঠনের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ