আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

নেত্রকোণায় ব্রি ধান৯২ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৮ এর নমুনা শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

মোঃ নুর উদ্দিন মন্ডল দুলাল নেত্রকোনা।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নেত্রকোণায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয় নেত্রকোণার আয়োজনে ও এলএসটিডি প্রকল্পের অর্থায়নে ব্রি কতৃক উদ্ভাবিত ধানের উফশী জাত ব্রি ধান৯২ ও ব্রি হাইব্রিড ধান৮ এর নমুনা শস্য কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার ( ০৭ মে ) দুপুরে জেলার পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের দেওটুকোণ গ্রামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নেত্রকোণা জেলার উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ নূরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে ও ব্রি, নেত্রকোণা আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: খালিদ হাসান সৌরভ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এলএসটিডি প্রকল্পের পরিচালক ড. মোঃ মোফাজ্জল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূর্বধলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: জোবায়ের হোসেন, ব্রি নেত্রকোণার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান মো: খালিদ হাসান তারেক। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে ময়মনসিংহ স্যাটেলাইট স্টেশন এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান নিমফিয়া পারভীন, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হুর-ই-ফেরদৌসী তাজিন সহ কৃষি সম্প্রসারণ ও ব্রি নেত্রকোণা’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুধী সমাজ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ স্থানীয় শতাধিক কৃষক-কৃষাণীগণ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রি নেত্রকোণা সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, নেত্রকোণা আঞ্চলিক কার্যালয়ের তত্বাবধানে ব্রি’র অন্যান্য উফশী ধানের জাতের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন কৃষকের মাঝে গবেষণা ট্রায়ালের জন্য উফশী ও ব্রি উদ্ভাবিত হাইব্রিড ধানের স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় জাত সমূহের চাষ হয়েছে। এ বছর ধানের রোগবালাই ও পোকামাকড় কম থাকায় আশানুরূপ ফলনও হয়েছে।
স্হানীয় কৃষক মো: নূর উদ্দিন মন্ডল দুলাল জানান, তিনি এবার এক একর জমিতে ব্রি ধান৯২ চাষ করেছেন । অন্য ধানের তুলনায় অনেক বেশী ফলন হয়েছে। ব্রি নেত্রকোণার কর্মকর্তাগণ সকল ধরনের পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে তাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি ধান ও চাল বিক্রির পাশাপাশি বীজ সংরক্ষণ করবেন। অন্যান্য কৃষকদেরও তিনি এ ধানের জাত চাষ করার আহ্বান জানান।
আরেক কৃষক মোঃ আমিনুল ইসলাম মন্ডল জানান, তার ব্রি হাইব্রিড ধান৮ এর বাম্পার ফলন হয়েছে। হাইব্রিড সত্ত্বেও চাল চিকন হওয়ায় এর আলাদা কদর রয়েছে। শতাংশ প্রতি এক মণের বেশি ফলন হওয়ায় তার কাছে অন্যান্য কৃষক আগ্রহী হয়ে ভবিষ্যতে এ জাত চাষ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এর আগে কৃষক নূর উদ্দিন ও আমিনুলে’র জমিতে নমুনা শস্য কর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পরে তা মাড়াই করা হয়। সেখানে ব্রি ধান৯২ এর প্রদর্শনীকৃত জমিতে শতাংশ প্রতি প্রায় ১ মণ ও হাইব্রিড ধান৮ এর প্রদর্শনীকৃত জমিতে ১ মণের বেশি ফলন পাওয়া যায়। তারা সহ উপস্হিত কৃষকগণ এ ফলন দেখে আগামীতে উফশী এ জাতসমূহ চাষে আগ্রহী হন এবং ব্রি’র কর্মকর্তাগণকে ধন্যবাদ জানান।
ব্রি নেত্রকোণার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং প্রধান খালিদ হাসান তারেক জানান, বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় ব্যপক পরিসরে উফশী জাতসমূহ চাষাবাদ প্রযোজন। আর এ জাতসমূহ কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ব্রি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ব্রি, নেত্রকোণা আঞ্চলিক কার্যালয় এ অঞ্চলের কৃষকদের জন্য কিছু গবেষণা ট্রায়াল স্থাপন করেছে যাতে কৃষকরা ধানের নতুন জাতসমূহের বৈশিষ্ট্য ও ফলন সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করেন।
পূর্বধলা উপজেলা কৃষি অফিসার মো: জোবায়ের হোসেন ধানে উচ্চ ফলন পেতে সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কৃষকদের ধারণা প্রদান করেন ও কৃষকদের ধানের চারা লাইন ও লঘুতে রোপণ করার পরামর্শ প্রদান করেন।
প্রধান অতিথি ড. মোফাজ্জল হোসেন তার বক্তব্যে রোগ ও পোকামাকড় চিহ্নিতকরণ, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা, নতুন জাতসমূহ ও এর উৎপাদনশীলতা সহ স্থানীয় পর্যায়ে ধানের বিভিন্ন জাতের উপযোগীতার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ও উপস্থিত কৃষক কৃষাণীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ নূরুজ্জামান সুষম সার প্রয়োগ কি, এর প্রয়োগ মাত্রা, লাভ ও ফলনে প্রভাবের বিস্তারিত আলোচনা করেন পাশাপাশি উফশী ধানের নতুন জাতসমূহ যাতে সকল কৃষকের দোড়গোরায় পৌঁছে দেয়া যায় সে লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ব হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এবং উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ