আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

আগের মেয়র, সিডিএর চেয়ারম্যান জলাবদ্ধতার সৃষ্টির জন্য দায়ী : উপদেষ্টা ফাওজুল

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সেতু, সড়ক ও পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যা কিছু করা দরকার সবকিছু আমরা করব। যে বা যারা কাজ করতে আগ্রহী সবাইকে আমরা কাজ করার সুযোগ দিয়েছি। এখন নাগরিকদের পালা, খালকে পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব তাদের। একদিকে খাল খনন করার পর আরেক দিকে ময়লা ফেলা হলে কাজের কাজ কিছু হবে না।

উপদেষ্টা নগরবাসীর কাছে জলাবদ্ধতা নিরসনের সহযোগিতা কামনা করেন। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর নিজস্ব অর্থায়নে বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, আগে যারা নগর পিতা, সিডিএর চেয়ারম্যান ছিলেন তারাই এই জলাবদ্ধতা সৃষ্টির জন্য দায়ী। আমি চট্টগ্রামে প্রাইমারি, হাই স্কুল ও চট্টগ্রাম কলেজে পড়েছি। কিন্তু আমি কখনো এ রকম জলাবদ্ধতা দেখিনি।
খাল দখল করে বাড়ি, অফিস, মার্কেট করে ফেলা হয়েছিল উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর এসব ভেঙে এখন আবার খালে পরিণত করার কাজ করছি। সবাইকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই।

উপদেষ্টা বলেন, খননের পর সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, খাল পরিষ্কারের পর আবারও ময়লা ফেলা হচ্ছে। সেটা করলে খাল পরিষ্কার করে লাভ নেই। আমরা ১০ হাজারের মতো ডাস্টবিন দিয়েছি। এখন থেকে সেগুলোতে ময়লা ফেলবেন। আমরা বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি ময়লা বিনে না ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। বিনগুলোকে নিজেদের যত্ন করতে হবে। বিন হারিয়ে গেলে যার এলাকা থেকে হারিয়ে যাবে তাকে জরিমানা দিতে হবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে আমরা নগরকে গ্রিন, হেলদি সিটি করার কাজ করছি। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। তাহলেই আমরা শহরকে সুন্দর রাখতে পারব। বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করায় আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
চট্টগ্রাম মহানগর আমির শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ২৪ দিনের মাথায় উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের কার্যক্রম পরিদর্শনে আসায় আমাদের নেতাকর্মীরা উৎসাহিত হয়েছেন। এটা তিন হাজার ফিট, আমরা প্রায় ১৮শ’ ফিট কাজ শেষ করেছি। বাকি অংশটুকু আমরা ঈদুল আজহার আগে শেষ করতে পারব, ইনশাল্লাহ।
এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এখন যেভাবে সহযোগিতা করছেন আগামীদিনেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সেভাবে সহযোগিতা করবেন।

জামায়াতে ইসলামীর নগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, সিডিএর বোর্ড সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ, প্রকৌশলী মোমিনুল হক, নগর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি খায়রুল বাশার ও মোহাম্মদ উল্লাহ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন নগর সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান, জামায়াত নেতা ডা. আবু নাছের, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোছাইন, বাকলিয়া থানা আমির সুলতান আহমদ, পাঁচলাইশ থানা আমির ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর হাসান রুমী, বাকলিয়া থানা নায়েবে আমির আবুল মনসুর, চকবাজার থানা নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, সেক্রেটারি সা’দুর রশিদ চৌধুরী, বাকলিয়া থানা সেক্রেটারি নুর আহমদ প্রমুখ। এর আগে বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ