আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে সব স্টেকহোল্ডারকে এক প্ল্যাটফর্মে আনতে হলে পোর্ট ইউজারস ফোরাম কার্যকর করা জরুরি

চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবসাবান্ধব করতে হবে:চসিক মেয়র।

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের সিংহভাগ পরিচালিত হয় এই বন্দর ঘিরে। তাই বন্দরকে ঘিরে যারা ব্যবসা করছেন, তাদের যথাযথ সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। তিনি

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাথে আগ্রাবাদ সিএন্ডএফ টাওয়ারস্থ এসোসিয়েশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘আমদানি রপ্তানি সংক্রান্ত সিএন্ডএফ কার্যক্রমে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিরসন’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।সভায় সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোঃ শফিউল আজম খান।

সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ড। দুই হাজার আট শতাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট ও তাদের আট হাজারের বেশি কর্মচারী আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সাথে সরাসরি যুক্ত থেকে নিরলসভাবে কাজ করে রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সিএন্ডএফ এজেন্টদের বিরূদ্ধে যেসব কালো আইন করা হয়েছে তা বাতিলে মেয়রের সহযোগিতা চান। তিনি মেয়রের কাছে সিএন্ডএফ এজেন্টদের ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের জন্য এসোসিয়েশন কার্যালয়ে একটি সিটি কর্পোরেশন বুথ স্থাপনের দাবী জানান।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে সব স্টেকহোল্ডারকে এক প্ল্যাটফর্মে আনতে হলে পোর্ট ইউজারস ফোরাম কার্যকর করা জরুরি। এ লক্ষ্যে তিনি মেয়রকে পোর্ট ইউজারস ফোরামের দায়িত্ব গ্রহণের আহবান জানান, যেন মেয়রের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে বন্দর সংক্রান্ত সমস্যা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।

এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী বলেন, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নগরের নালা-নর্দমা ও খালসমূহ পরিষ্কারে ত্বরিত পদক্ষেপের ফলে এ বছর নগরবাসী জলাবদ্ধতার কষ্ট থেকে রেহাই পেয়েছে। এজন্য তিনি মেয়রকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা

জানান। তিনি আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত সিএন্ডএফ কার্যক্রমে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাসমূহ তুলে ধরে বন্দরের চারগুন হারে স্টোররেন্ট কমানো, অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সার্ভার সমস্যা, বাজেটে বিভিন্ন এইচ.এস.কোড পরিবর্তনে শুল্কায়ন সমস্যা, স্টীভিডোরদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিক সরবরাহে অনিয়ম ও বকশিস দাবী, বন্দর গেইট এলাকায় যানজট নিরসন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেল সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে বাংলাদেশের উন্নয়ন।

মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন বলেন, এ শহরকে ক্লিন, গ্রীন, হেলদি ও সেইফ সিটিতে রূপান্তরের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মনোরেল, ওয়ান সিটি টু টাউন, ইকো সিটি, পর্যটন জোন, ৪১টি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, আবর্জনাকে সম্পদে রূপান্তর, স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিস্কার-পরিচ্ছনতা
বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ নানা উন্নয়নমুখী

পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বন্দর গেইট এলাকায় যানজট নিরসনে পুলিশের এডিসি ট্রাফিক ও ডিসি পোর্টকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহবান জানান। বন্দরের অস্বাভাবিক স্টোররেন্ট কমাতে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নে সিএন্ডএফ এজেন্টদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে এসোসিয়েশন কার্যালয়ে সিটি কর্পোরেশনের বুথ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন।

তিনি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওজন স্কেল সমস্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বন্দরকে ব্যবসাবান্ধব করার জন্য যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন, তা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার মো. রুহুল আমিন, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, বিজিএমইএ পরিচালক এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, বাফা’র সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল আলম সুজন। উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের জয়েন্ট কমিশনার মোঃ মারুফুর রহমান ও চপল চাকমা, বিজিএমইএ এর পরিচালক এনামুল আজিজ চৌধুরী, উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর) মোঃ আমিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব আলহাজ্ব মোরশেদুল আলম কাদেরী, বিসিএসআইআর এর সায়েন্টিক অফিসার সম্রাট মোহাইমিনুল ইসলাম ও মোঃ রিফাত হোসেন সহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এসোসিয়েশনের উপদেষ্টামন্ডলী ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সিএন্ডএফ কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অংশ নিয়েছে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী চট্টগ্রামে এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতায়

বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ’ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)’র উদ্যোগে ১১তম বারের মতো “এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা-২০২৫” এনআইটি’র অডিটোরিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কারীগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্কভিউ হসপিটাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এটি. এম. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন এনআইটি’র চেয়ারম্যান আহসান হাবিব।

প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২৬৪টি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প প্রর্দশিত হয়। এতে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বলেন, আজকের এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি বিজয়ীর খোঁজ নয়, বরং এটি আমাদের সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সকলেই নতুন কিছু শিখেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় উদ্ভাবন নিয়ে আসার অনুপ্রাণিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে, আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পই আলাদা এবং একেকটি নতুন চিন্তার প্রতিফলন। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শুধু একটি ইভেন্ট নয়; এটি হলো কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির সবচাইতে কার্যকর মঞ্চ।

ড. এটি. এম. রেজাউল করিম বলেন,দক্ষতা একজন মানুষকে কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং তাকে স্বনির্ভর করতে সাহায্য করবে। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কার্যকরী সমস্যা সমাধানের রুপরেখা তৈরী করে। অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন বলেন, এই প্রতিযোগিতায় উত্থাপিত সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধানগুলো কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাই দেশকে ‘আধুনিক বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মূল চালিকাশক্তি।


ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বলেন, উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির খেলনা নয়, উদ্ভাবন হল মানুষের জীবনকে সহজ ও অর্থপূর্ণ করার হাতিয়ার। আজকের এই ছোট ছোট ধারণাগুলোই আগামী দিনের বড় বড় শিল্প ও সামাজিক পরিবর্তনের বীজ বপন করছে।প্রতিযোগীতায় মোট ২৬৪ টি প্রজেক্ট অংশ নেয়। প্রজেক্ট সমুহকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিভিন্ন মানদন্ডে বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য মূল্যায়ন দলে ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মাঈনুল হক মিয়াজী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এইচ.এম

. এ আর মারুফ,চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান মো. দিদারুল আলম মজুমদার। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর সিভিল ডিপার্টমেন্ট প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মো জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী মেহেদী, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস, মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী নুরুননবী।

বিচারক প্যানেল প্রজেক্ট সমুহ মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন। মূল্যায়নে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে টপ টেন নির্ধারণ করে পুরস্কার হিসেবে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অর্জন কারীর মধ্যে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ইমার্জিং প্রজেক্ট হিসেবে চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদেরও ৫ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সমাপনী পর্বে সকল অংশগ্রহণকারীকে সনদ বিতরণ করা হয়।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে লাগেজে মিলল ৯০ লাখ টাকার সিগারেট

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মালিকানাহীন ছয়টি লাগেজ থেকে ৮০০ কার্টন মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের এরাইভাল হলের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড কর্নারের পাশ থেকে এসব লাগেজ উদ্ধার করা হয়। জব্দ হওয়া সিগারেট প্রতি কার্টন ১১ হাজার ২৫০ টাকা মূল্য ধরে মোট ৯০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, লাগেজগুলোর সঙ্গে কোনো যাত্রীর নাম, ট্যাগ বা মালিকানার কাগজপত্র ছিল না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও কেউ লাগেজের দাবি না করায় সেগুলোকে কাস্টমস আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে লাগেজ খুলে ৮০০ কার্টন সিগারেট পাওয়া যায় এবং তা জব্দ করা হয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, লাগেজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মালিকবিহীন অবস্থায় ছিল। কেউ দায়িত্ব না নেওয়ায় সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে চোরাচালান ঠেকাতে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ