আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

অবশেষে বৃহত্তর চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট স্থগিত ‘ইকোনমিক লাইফ’ নীতিমালার কারণে প্রায় ৭০ হাজার গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চার দফা দাবিতে আগামী ২০ জুলাই বৃহত্তর চট্টগ্রামে গণ ও পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা থাকলেও ‘বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশন’ আপাতত স্থগিত রেখেছে। সংগঠনের নেতারা জানান, সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য ২০ জুলাই পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় বৈঠকে ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে পরিবহন খাতের চলমান সমস্যাসহ ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন এবং ‘ইকোনমিক লাইফ’ নীতিমালা পুনর্বিবেচনার দাবি নিয়ে আলোচনা হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের কদমতলীতে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ‘বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশন’ এর এক জরুরি সভায় এই কথা জানানো হয়েছে। যদি ওই বৈঠকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের দাবিগুলোতে সন্তোষজনক সমাধান এলে পরবর্তী কর্মসূচি স্থগিত থাকবে। অন্যথায় ফের ধর্মঘটের ঘোষণা আসতে পারে।

তারা বলেন, কেন্দ্রীয় বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত আসে, সেটির ওপর আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি নির্ভর করবে। আপাতত বৃহত্তর চট্টগ্রামে ২০ জুলাইয়ের ধর্মঘট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার গাড়ি ‘ইকোনমিক লাইফ’ নীতিমালার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে।

২০১৮ সালে সংসদে পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন শুরু থেকেই সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো অগ্রগতি হয়নি। সংসদে আমাদের দুইজন প্রতিনিধি থাকলেও তারা বিষয়টি যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি বলেন, বর্তমানে পরিবহন খাতের ওপর এক ধরনের বৈরী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যেমন যাবজ্জীবন সাজার বিধান রয়েছে, মালিকদের বিরুদ্ধেও একই রকম শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এ ধরনের আইন কার্যকর থাকলে পরিবহন খাত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে আন্দোলনের বিষয়টি আলোচনা করেছি। আগামী ২০ জুলাই ঢাকায় মালিক-শ্রমিকদের যৌথ ফোরাম বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক ফেডারেশন ও বাস-ট্রাক অনার্স অ্যাসোসিয়েশন-একটি বৈঠক ডেকেছে। সেখানেই দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

কফিল উদ্দিন আহমেদ আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের দাবি কেন্দ্রীয়ভাবে উত্থাপন করা হবে। আমরা জাতীয় পর্যায়ে বিষয়টি সরকারকে জানাব এবং ইতিবাচক সমাধানের জন্য কাজ করব।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের আহ্বায়ক মোরশেদুল আলম কাদেরী, সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির সোহেল, একরামুল করিম, খোরশেদ আলম, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, ফারুক খান, নুরুল ইসলাম, সৈয়দ হোসেন, মো. শাহজাহান, মো. হাবীব,

মোবারক হোসেন, আলাউদ্দীন, মো. জাফর, আজিজুল হক, মো. মিজান, মো. মুছা, মো. অলি আহমদ, রবিউল মাওলা, আজিম খান, কামাল উদ্দিন, মুছা বাবুল, আনোয়ারা, তুহিন প্রমুখ।এর আগে, ১৫ জুলাই চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও ইকোনমিক লাইফ নীতিমালা

 

 

পুনর্বিবেচনাসহ চার দফা দাবিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ২০ জুলাই ২৪ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ