
বঙ্গোপসাগরের অব্যাহত ভাঙনে চরম অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে দেশের অতীব সম্ভাবনাময় কুতুবদিয়া দ্বীপ। এককালের ৫৮ বর্গ মাইলের এ কুতুবদিয়া ভাঙতে-ভাঙতে বর্তমানে ২০ বর্গ মাইলে চলে এসেছে। তাই জরুরী ভিত্তিতে একটি মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে দু’লক্ষাধিক জনবসতির দ্বীপ-কুতুবদিয়াকে রক্ষা করতে হবে। না হয় অচিরেই সমুদ্রগর্ভে বিলীণ হয়ে যেতে পারে সাগরঘেরা দ্বীপ-কুতুবদিয়া। পাশাপাশি চরম হুমকির মূখে পড়তে পারে চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের পেকুয়া ও মহেশখালীসহ এতদঞ্চলে সরকারের বিশেষ অর্থনৈতিক জোন। এ দৈন্যদশা থেকে কুতুবদিয়াবাসীকে উদ্ধার করতে ‘অস্তিত্বের সংকটে কুতুবদিয়া দ্বীপ ও রাষ্ট্রের করণীয়’ বিষয়ে দ্বীপের সম্মিলিত সংবেদনশীল নাগরিক সমাজের আয়োজনে গত ১০ আগস্ট রাজধানী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি হলে অনুষ্ঠিত এক সফল গোলটেবিল আলোচনায় এতদঞ্চলের সার্বজনিন জোরালো দাবীটি জাতির বিবেক সাংবাদিকগণের সামনে তুলে ধরেন। এতে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন দ্বীপের জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবীদ, সাংবাদিক, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, পেশাজীবি, ঢাকায় অধ্যয়ণরত বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের সুপারনিউমারারী প্রফেসর ড.কামাল হোসাইন। কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আ.ন.ম.শহীদ উদ্দীন ছোটন ও উপকুলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী আকবর খাঁনের যৌথ সঞ্চলনায় অনুষ্টিত অলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কুতুবদিয়া-মহেশখালী সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ড.এ.এইচ.এম.হামিদুর রহমান আযাদ, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মঞ্জুরুল আনোয়ার, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বিশিষ্ট এনজিও ব্যক্তিত্ব রেজাউল করিম চৌধূরী, এলজিআরডির নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর সাদিক, চট্টগ্রামস্থ কুতুবদিয়া সমিতির সেক্রেটারী মুজিবুল হক ছিদ্দিকী বাচ্চু, কুতুবদিয়া বিজনিস ফোরামের চেয়ারম্যান ইসমাইল খাঁন, কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল আহমদ, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ.স.ম.শাহরিয়ার চৌধূরী, কুতুব শরীফ দরবারের যুগ্ম পরিচালক শাহজাদা আবদুল করিম আল-কুতুবী, দক্ষিণ ধূরুং ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন আল-আযাদ,বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আকতার কামাল, হিলফুল ফুজুল কুতুবদিয়া সংগঠনের সভাপতি শেখ আখতারুল হক আল কুতুবী, কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম.এম.হাছান কুতুবী, কক্সবাজারস্থ কুতুবদিয়া সমিতির সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির সিকদার, দ্বীপশিখার সভাপতি ঢাকা প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র মিজানুর রহমান, কুতুবদিয়ার ছাত্র প্রতিনিধি কাজী তাহমিদ, চট্টগ্রামস্থ কুতুবদিয়া ছাত্র পরিষদের আহবায়ক নওশাদ আলভী, সংবাদকর্মী নজরুল ইসলাম, মো: মনিরুল ইসলাম, আবুল কাশেম, মহি উদ্দিন, হাছান মাহমুদ সুজনসহ আরও অনেকে।

আলোচনায় উঠে আসে বিচ্ছিন্নভাবে ক্ষুদ্র বরাদ্দে কুতুবদিয়া রক্ষা করা যাবেনা। কুতুবদিয়া তথা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের মূল ভূ-খন্ড রক্ষায় মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিক ডিজাইনে সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, দ্বীপের চারপাশে সবুজ বেষ্ঠনী গড়ে তুলতে পারলেই প্রাকৃতিক দূর্যোগ তথা সাইক্লোণ, জলোচ্ছ্বাস, ও সমুদ্রপৃষ্ট উচ্চতা বৃদ্ধির মত বিপর্যয় হতে কুতুবদিয়াকে রক্ষা করা যেতে পারে। তাই অনতি বিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে কুতুবদিয়া দ্বীপটি সমুদ্রগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীণ হয়ে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য বর্তমানে কুতুবদিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় বেড়িবাঁধে ভয়ঙ্কর ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে জোয়ারের পানিতে একাকার হয়ে বহু বসতঘর, অন্যান্য স্থাপনাসহ ব্যাপক ফসলহানির ঘটনা ঘটলেও কোন প্রদক্ষেপ নেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক মহল এবং সরকারের। এমতাবস্থায় অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দ্বীপের সর্বস্তরের বিশিষ্টজনদেরকে অবগত করে এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করেন কুতুবদিয়া প্রেসক্লাবের মানবিক সভাপতি, বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুতুবদিয়ায় শিক্ষা বিস্তারের অন্যতম আলোক বর্তিকা প্রয়াত মাস্টার তালেব উল্লাহর সুযোগ্য সন্তান আ.ন.ম.শহীদ উদ্দীন ছোটন ও উপকুলীয় উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আকবর খাঁন


















