আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

আমাদের অগ্রযাত্রায় শক্তি যোগাবে সব সম্প্রদায়ের মানুষ: ফারুক-ই-আজম।

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ৫২৫২ তম জন্মদিন উপলক্ষে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে, শুভ জন্মাষ্টমী ও মহা শোভাযাত্রা উদযাপিত হয়েছে। উৎসব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাবু আর কে দাশ রুপু এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি

ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক এবং শুভ উদ্ধোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন।প্রধান অতিথি উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বক্তব্যের শুরুতে উপস্থিত সকলকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানান। শনিবার সকালে নগরের আন্দরকিল্লা মোড়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য শোভযাত্রা।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেন, আজ থেকে যে কয়দিন জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে, আমি একান্তভাবে কামনা করি চট্টগ্রামের সব সম্প্রদায়ের মানুষ সম্মিলিতভাবে সম্পৃক্ত থেকে আমাদের আগামীর অগ্রযাত্রাকে শক্তি এবং সাহস যোগাবে। আশা করছি আগামী দিনের যে নির্বাচিত সরকার আসবে তারা আপনাদেরই সরকার হবে। আপনাদের দাবি পূরণে তারা কাজ করবে।
বিশেষ অতিথি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই- এই কথাটা যেন আমরা ধারণ করি, লালন করি এবং নিজের জীবনে সেটা আমরা যেন পালন করি। এই দেশ হিন্দুর, এই দেশ খ্রিস্টানের, এই দেশ বৌদ্ধের, এই দেশ মুসলমানের। আমার যেটুকু অংশ আমার প্রতিটি ভাইয়ের অংশ ঠিক ততটুকু। এই কথাটা যদি আমরা স্মরণ রাখি, তাহলে যে সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখি সেই বাংলাদেশকে অর্জন করতে পারবো।

শোভাযাত্রা উদ্বোধক ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি সবাইকে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্লিন, গ্রীন, হেলদি ও সেইফ সিটি গঠনের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামীর চট্টগ্রাম শহর হবে সকল ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণি-পেশার মানুষের নিরাপদ শহর। আশীর্বাদক ছিলেন পটিয়া পাঁচুরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত।
অনুষ্ঠান শেষে বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন অতিথিরা। এরপর বিভিন্ন যানবাহনে নানা রঙে ও সাজে সজ্জিত ভক্তদের অংশগ্রহণে শুরু হয় জন্মাষ্টমীর র‌্যালি। ঢাক-ঢোলসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের তালে নেচে গেয়ে ভক্তরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি আন্দরকিল্লা মোড় থেকে শুরু হয়ে লালদীঘি মোড়, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জে এম সেন হল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।


জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর.কে দাশ রুপুর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের কার্যকরি সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ। মহাশোভাযাত্রা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাজীব ধর তমাল ও শিমুল মুহুরীর যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন শংকর সেনগুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক ডা. রাজীব বিশ্বাস, দক্ষিণ জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবুল ঘোষ বাবুন, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল বরণ বিশ্বাস, পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি চন্দন দাশ, বিদ্যালাল শীল, অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জী, অর্থ সম্পাদক রতন আচার্য্য, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দাশ, উপ-অর্থ সম্পাদক সুমন ঘোষ বাদশা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কানুরাম দে, উপ-দপ্তর সম্পাদক বাবলু কুমার নাথ প্রমুখ।
দুপুর ২টায় জেএম সেন হলে অনুষ্ঠিত হয় যুবসম্মেলন। বিকাল ৩টায় মাতৃসম্মেলন শেষে বিকাল ৫টায় ধর্মসম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এছাড়া রাত ৮টায় মহানামযজ্ঞের শুভ অধিবাস শেষে ১৭ ও ১৮ আগস্ট চলবে ষোড়শপ্রহরব্যাপী মহানাম সংকীর্ত্তন। প্রতিদিন দুপুর ও রাতে ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে মহাপ্রসাদ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ