আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চবিতে লুটের অস্ত্র উদ্ধারে আল্টিমেটাম সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা প্রশাসনের

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

স্থানীয় গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপত্তা দপ্তর থেকে অস্ত্র লুট হাওয়ার ঘটনায় আরও একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের করে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপত্তা প্রধান বাদী হয়ে ৯৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। এ মামলায় ৮০০ থেকে ১০০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপত্তা দপ্তর থেকে লুট হওয়া দেশীয় অস্ত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে জব্দকৃত দেশীয় অস্ত্র নিরাপত্তা দপ্তরে সংরক্ষিত ছিল, যা গত ৩১ আগস্ট জোবরা গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের সময় নিরাপত্তা দপ্তর থেকে চুরি হয়। চুরিকৃত দেশীয় অস্ত্রসমূহ যাদের কাছে আছে তাদেরকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিরাপত্তা দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অন্যদিকে, সংঘর্ষের পর মঙ্গলবারও ১৪৪ ধারা জারি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের এলাকায়। ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকায় ক্যাম্পাসে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় কম।
এদিকে চবি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সাম্প্রতিক সংঘর্ষ-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় একটি মডেল থানা স্থাপনের প্রস্তাব-সহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় চবি উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য, সকল অনুষদের ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন জানান, বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের সকল চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করবে।

এ জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় একটি মডেল থানা স্থাপনের বিষয়ে সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হবে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় রেলক্রসিং এলাকায় একটি পুলিশ বক্স স্থাপনের উদ্যোগও নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আজকের মধ্যে সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এ ঘটনা পর্যালোচনার জন্য আগামীকাল (২ সেপ্টেম্বর) একটি জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে। পাশাপাশি জোবরা এলাকার বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে আরেকটি কমিটি গঠন করা হবে।
উপ-উপাচার্য জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত স্ট্রাইকিং ফোর্স প্রত্যাহার করা হবে না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপত্তা হটলাইন চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় হোসেনপুরে বিএনপি নেতার খাবার বিতরণ।

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায়-কিশোরগঞ্জের-হোসেনপুরে পাঁচশত অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠ পৌর বিএনপির সভাপতি একে. এম. শফিকুল হক শফিকের উদ্যোগে নতুন বাজার মোড়ে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম সেলিম, পৌর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক কমিশনার মাসুম বাবুল, পৌর ২ নং ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল খালেক, পৌর ৪নং ওয়ার্ড সভাপতি স্বপন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই, পৌর ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি আবুল কাশেম, উপজেলা জাসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল মোল্লা, জেলা জাসাস সদস্য স্বপন মিয়া, পৌর সদস্য সচিব রিমন মিয়া, যুগ্ম আহবায়ক পৌর রুমান মিয়া,

পৌর বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম, বিএনপি নেতা জজ মিয়াসহ পৌর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা।এ সময় পাঁচ শতাধিক মানুষের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেয়া হয়। এ কর্মসূচিতে অবস্থিত অসহায় মানুষরা খাবার পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ