আজঃ শনিবার ৮ নভেম্বর, ২০২৫

প্রশাসন নজরদারি প্রয়োজন চট্টগ্রামে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের বেশী দাম, পাইকারীতে কম

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

: বন্দর নগরী চট্টগ্রামে খুচরা বাজারে বেশি দামেই বিক্রি করা হচ্ছে পেঁয়াজ। আড়ত আর খুচরা বাজারের মধ্যে ব্যবধান প্রায় ২০ টাকার মত। এর এক মাস আগে হঠাৎ করে দেশের বাজারে বাড়তে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। এই সময়ে প্রতি কেজিতে প্রায় ৩০টাকা পর্যন্ত বাড়ে নিত্যপণ্যটির দাম। বেড়ে যাওয়া সেই পেঁয়াজের দাম দুই সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে পড়তির দিকে। কিন্তু সেটির সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। খুচরা বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।
খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদাররা বলেছেন, আড়তে দাম কমার খবর ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছায় না। এই সুযোগটা নেন দোকানিরা। প্রশাসন নজরদারি বাড়ালে দাম কমার প্রকৃত সুফল পাবেন ভোক্তারা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরায় কমছে না দাম। আড়তদাররা বলছেন, পাইকারিবাজার থেকে খুচরা পর্যায়ের দোকানে যাওয়া পর্যন্ত গাড়িভাড়া-নষ্ট হওয়া পেঁয়াজ বাদ দেওয়ার পর লাভসহ প্রতি কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা সম্ভব। অর্থাৎ ৭০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে পেঁয়াজের দাম। কিন্তুবহদ্দারহাট ও দুই নম্বর গেটের কর্ণফুলী কমপ্লেক্সসহ কয়েখটি বাজারে দেখা যায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।
দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারিবাজার খাতুনগঞ্জে দেখা যায়, সারি সারি পেঁয়াজ নিয়ে আসা ট্রাক। আড়তগুলোতেও বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজ। স্বাভাবিকভাবে সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কমছে। ১০দিন আগেও এখানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে মানভেদে ৭০ থেকে ৭২টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। গতকাল সপ্তাহের শুরুর দিন সেই দাম আরও কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।
দুই কারণে পেঁয়াজের দাম কমছে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের অন্যতম বড় পেঁয়াজ বিক্রির প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাজী স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. জাবেদ ইকবাল। তিনি বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এছাড়া সরবরাহ অনুযায়ী পাইকারি ক্রেতাও নেই। এ কারণে পেঁয়াজের দাম পড়তির দিকে আছে।
বহদ্দারহাটের মুদি দোকানি সাহাব উদ্দিন বলেন, আড়তে ৬৫ টাকা পেঁয়াজ হলেও সেটা খুচরা বাজার পর্যন্ত আসতে আসতে অনেক খরচ বেড়ে যায়। গাড়ি ভাড়া আর শ্রমিকের খরচ তো আছেই। এছাড়া অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। আবার খোসা ফেলার পর ওজনও কমে যায়। সেজন্য আড়তের চেয়ে খুচরায় দাম কিছুটা বেশি।
এদিকে রাস্তায় রাস্তায় বিক্রি করা ভ্যানগাড়িগুলোতে দাম কিছুটা কম রয়েছে। সেখানে মানভেদে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নিত্যদিনের রান্নার প্রয়োজনীয় এই মসলাটি। দোকানের ভাড়া-কর্মচারীর বেতনসহ আনুষঙ্গিক খরচ না থাকায় পেঁয়াজ দোকানের চেয়ে কম দামে দিতে পারছেন বলে জানিয়েছেন বহদ্দারহাটে ভ্যানে করে নিয়মিত পেঁয়াজ বিক্রি করা জাহাঙ্গীর আলম।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত “প্রজেক্ট অধরা” মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা — আমাদের দেহ, আমাদের যত্ন।

হাল্ট প্রাইজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করছে “প্রজেক্ট অধরা”— একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও সম্প্রদায়মুখী উদ্যোগ, যা নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত লজ্জা, কুসংস্কার ও ভুল ধারণা দূর করতে কাজ করে। এই উদ্যোগ এস ডি জি ৩ (সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল) এবং ৪ (গুণগত শিক্ষা)-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় ৪ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে ফতেয়াবাদ শৈলবালা সিটি কর্পোরেশন হাই স্কুলে যেখানে অংশগ্রহণ করেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট অতিথিরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাল্ট প্রাইজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২৫/২৬ সনের ক্যাম্পাস ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ অনিক, চিফ অফ স্টাফ কাজী মুহাইমিনুল ইসলাম মুনাজ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট কারিন সাফফানা। পাশাপাশি এই প্রকল্পটির নেতৃত্ব দেন তানজিফ হাসান‌, নিশাত তাহসিন চৌধুরী এবং কমিউনিটি এনগেজমেন্ট টিমের সকল সদস্য। তাঁরা সবাই একত্রে মাসিক সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক জ্ঞান প্রদান এবং ভ্রান্ত ধারণা দূর করার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বসহকারে উল্লেখ করেন।

কর্মশালার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাচ্ছন্দ্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে মাসিক সম্পর্কে স্পষ্ট, সহানুভূতিশীল এবং আত্মবিশ্বাসী আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়। সেশনে আলোচনা করা হয় মাসিক কীভাবে শুরু হয়, কীভাবে রক্তপ্রবাহ ঘটে, মাসিক চলাকালীন কীভাবে নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত এবং এই সময়ে কোন স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলি অনুসরণ করা জরুরি। আয়োজকরা উল্লেখ করেন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুটোই এ সময় সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং যথাযথ যত্ন নেওয়া অপরিহার্য।

সেশনের শেষে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও উৎসাহ বৃদ্ধি করতে একটি কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যা আলোচিত বিষয়গুলোকে আরও সুস্পষ্টভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। অংশগ্রহণকারীদের মাঝে নিজস্বভাবে প্রস্তুত করা উপহার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে, যা তাদের শেখার আগ্রহ ও সম্পৃক্ততাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও, অংশগ্রহণকারী ছাত্রী, শিক্ষক এবং প্রধান শিক্ষিকার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় তাঁদের মতামত, অভিজ্ঞতা এবং কর্মশালা-পরবর্তী উপলব্ধি জানতে। অনুষ্ঠানে বার্তা দেওয়া হয় যে নারীর মাসিক স্বাস্থ্য কোনো লজ্জার বিষয় নয়, এটি তাদের শরীর ও জীবনের একটি প্রাকৃতিক চক্র। এই বিষয়টি লুকিয়ে নয়, বোঝা ও যত্ন নেওয়া উচিত — কারণ
আমাদের দেহ, আমাদের যত্ন — প্রতিটি চক্রই গুরুত্বপূর্ণ।
এর পাশাপাশি আরও নতুন তথ্য ও আপডেট জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হাল্ট প্রাইজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটি অনুসরণ করুন।

চট্টগ্রামে প্রবাসীর ১৯ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট, আসামি গ্রেফতার

চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ডাকাতি মামলার পলাতক আসামি মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭। চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সাদ্দাম হোসেন ভোলার লালমোহন থানার দুলা মিয়া এলাকার মো. ফারুকের ছেলে।

র‌্যাব-৭’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান, গত ২১ জুলাই সাড়ে ৮টায় দুবাই প্রবাসী মোহাম্মদ সামসুদ্দিন চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে এ কে খান বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার পথে লিংক রোড় এলাকায় ডাকাতদল নগদ টাকাসহ ১৯ লাখ ৮২ হাজার ২০০ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি ৩/৪ জনকে আসামি করে হালিশহর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে চান্দগাঁও থানাধীন নুরুজ্জামান নাজির বাড়ি এলাকা থেকে এ মামলার আসামি সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ