আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে ঘাটে অভিযানে ২৫০০ কেজি মা ইলিশ জব্দ, লাখ টাকা জরিমানা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মহানগরের একটি ঘাটে অভিযান চালিয়ে সাগর থেকে আসা চারটি ফিশিং বোট থেকে প্রায় ২ হাজার ৫শ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। চার বোটের ৪ জনকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রোববার সকালে নগরের ইপিজেড থানাধীন আকমল আলী মৎস্যজীবী ঘাটে নৌ পুলিশ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, কোস্টগার্ড ও চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে।

জানা গেছে, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে ২২ দিনের ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহন ও মজুতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলাকালে নিষিদ্ধ সময়ে সাগর থেকে ইলিশ ধরার তথ্য পেয়ে আকমল আলী ঘাট এলাকায় অভিযান চালানো হয়।এসময় সাগর থেকে ফেরত আসা চারটি ফিশিং বোটে থাকা ২ হাজার ৫শ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়। ৪ জনকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে জব্দ করা মাছগুলো স্থানীয় এতিমখানায়, মাদরাসা ও সমাজসেবামূলক সংগঠনে বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

গাবতলীর তোজাম্মেল হত্যা : বগুড়ায় দশ আসামির তিনজন ফাঁসি, তিনজনের যাবজ্জীবন

বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় ২০১৭ সালে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোজাম্মেল হোসেন হত্যা মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। ১০ আসামির তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড (ফাঁসি), তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজন খালাস পেয়েছেন। রায়ে দণ্ডিত ছয় আসামির প্রত্যেকের একলাখ টাকা করে অর্থদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুজন আসামি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় শিশু আদালতে তাদের বিচার চলছে।

হত্যা মামলার সাত বছর পর মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে রায় দেন বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাহজাহান কবির। রায় ঘোষণার সময় একজন আসামি বাদে সবাই অনুপস্থিত ছিলেন।

পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি- বাবুল প্রামাণিক ওরফে আবুল কালাম আজাদ, মনিরুজ্জামান মিশু, মো. মানিক। যাবজ্জীবন দণ্ডিত তিন আসামি- দেলোয়ার হোসেন দুলু, মাজেদুর রহমান পিন্টু এবং আশিক হাসান। মামলার আসামি শান্ত শাকিদারকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত তিন আসামির গলায় ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর করা হবে না। প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য হাইকোর্ট বিভাগে রায়ের নথিপত্র জমা দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। এছাড়া জরিমানা পরিশোধ না করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির প্রত্যেককে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর গাবতলী উপজেলার দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বটিয়াভাঙ্গা দক্ষিণপাড়া এলাকায় তোজাম্মেল হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একটি জমি কেনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে নৃশংস হত্যার ঘটনা ঘটে, জানিয়েছিল পুলিশ। নিহত তোজাম্মেল দূর্গাহাটা গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদের পরাজিত প্রার্থী ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ জানান, হত্যাকান্ডের পরের দিন নিহতের ভাই মমিন মোল্লা বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিদের অধিকাংশই পলাতক থাকায় বাদীর পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

ভাঙ্গুড়ায় সার কালোবাজারে বিক্রি: ডিলারকে জরিমানা, ১৫ বস্তা সার জব্দ।

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারি সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে বিসিআইসি ডিলার সেলিম হোসেন কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার দিয়ার পাড়া গ্রামে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি বরাদ্দের সার গোপনে চাটমোহরে পাচারের চেষ্টা করছিলেন ওই ডিলার। ভ্যানযোগে সার পরিবহনের সময় স্থানীয় জনতা বিষয়টি টের পেয়ে গাড়ি আট কে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সার সহ গাড়িটি আটক করে।

অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন,“সার (ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০০৬-এর ১২(৩) ধারা অনুযায়ী ডিলার কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জব্দ কৃত ৬ বস্তা ডিএপি, ৭ বস্তা ইউরিয়া ও ২ বস্তা পটাশ সার কৃষি অফিসের হেফাজতে রাখা হয়েছে।”

অভিযানের সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শারমিন জাহান, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ডিলার সেলিম হোসেন নিয়মিতই সরকারি সার চাহিদার তুলনায় কম দেন এবং বিক্রয় করেন।

উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি আখিরুজ্জামান মাসুম বলেন, যখন কৃষকরা সার সংকটে ভুগছেন, তখনই কিছু অসাধু ডিলার মুনাফার আশায় সার পাচার করছে। এর আগেও অভিযোগ করা হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ শারমিন জাহান বলেন, “মানুষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন। তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এখানে আমার কোনো গাফিলতি নেই। সরকারি সার সরবরাহ ও বিতরণ কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটর করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে ডিলারদের কার্যক্রম তদারকির জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া আছে। কোথাও অনিয়ম ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ঘটনাটিও তদন্ত করা হবে। যদি যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে সার কালোবাজারে বিক্রি করে থাকে, তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ