
ডিপ্লোমা সনদবিহীন অদক্ষ জনবল দিয়ে ব্লাড স্লাইড তৈরি, সনদবিহীন এক্স-রে টেকনোলজিস্ট দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া গেছে চট্টগ্রামের নামকরা শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। এসব অনিয়ম ধরা পড়ল সিভিল সার্জনের পরিদর্শনে। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে শেভরনের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ইস্যুকৃত চিঠিতে তা উঠে আসে তাদের নানা অনিয়মের চিত্র। সোমবার (২৭ অক্টোবর) এই চিঠি ইস্যু করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর জেলা সিভিল সার্জন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন শেভরন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে ৫টি অনিময় ধরা পড়ে। আগামীকাল ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বিষয়গুলোর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে।

শেভরনের অনিয়মগুলো হলো ডিপ্লোমা সনদবিহীন অদক্ষ জনবল দিয়ে ব্লাড স্লাইড তৈরি, এক্স-রে বিভাগেও সনদবিহীন টেকনোলজিস্ট দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা, অনলাইন রিপোর্ট করার স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাধি না থাকা।
এ ছাড়া শেভরন পরিদর্শক টিমকে ভ্যাকসিন সেন্টার পরিচালনার উপযুক্ত দলিলাদি দেখাতে পারেনি। শেভরনের রক্ত রিপোর্ট প্রস্তুতিতে অসংগতি পেয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সেই টিম। শেভরনের অনিয়ম এই প্রথম নয়, নিয়মিত তাদের অনিয়মে সাজার মুখোমুখি হতে হয়। মৃত চিকিৎসকের নামে রিপোর্ট প্রদানের রেকর্ড কেবল এই শেভরনেরই আছে।

২০১৫ সালে মারা যাওয়া হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রেজাউল করিমের নামে রিপোর্ট প্রদান করত শেভরন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৬ আগস্ট রোকেয়া বেগম নামে এক রোগীকে ইকোকার্ডিওগ্রাফির রিপোর্ট দেওয়ার পর সেটি প্রকাশ্যে আসে।
নানা অনিয়মের কারণে গত ১৮ অক্টোবর ২০২৩ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার আওতাধীন শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
১ অক্টোবর ২০২৪ সর্বশেষ শেভরনেরই বিশেষায়িত হাসপাতালের ২য় ও ৬ষ্ঠ তলায় থাকা দুটি ফার্মেসিতে পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ। মেসার্স শেভরন ফার্মেসিতে অতিরিক্ত মূল্যে ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ করা হয়। ক্রেতাদের ধোকা দিতে মেয়াদোত্তীর্ণ এসব ওষুধ মেয়াদ আছে এমন ওষুধের সঙ্গে একই বক্সে রাখায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়ে রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রমাণ পেয়েছিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের দল। এ অপরাধে প্রতিষ্ঠানটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

















