এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইনের সুযোগ নিয়ে বিগত পনেরো বছরে একের পর এক বিতর্কিত চুক্তি করে জনগণের অর্থের বিপুল অপচয় ও হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। এই নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে অযৌক্তিক সুবিধা ও মুনাফা প্রদানের জন্য দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে এবং ক্যাপাসিটি চার্জের নামে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দায়মুক্তি আইন বহাল থাকায় এসব চুক্তির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা বা দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। যা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুশাসনের বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইনের আওতায় সম্পাদিত সব বিনিয়োগ ও ক্রয় চুক্তি বাতিল এবং জ্বালানি অপরাধীদের বিচার এবং এখাতের লুটকারীদের থেকে আদায়কৃত ক্ষতিপূরণের অর্থে ‘ঊহবৎমু চৎরপব ঝঃধনরষরুবফ ঋঁহফ’ গঠিনের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমার আসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব)।

শনিবার সকালে চট্টগ্রামের জামালখাণ প্রেসক্লাব চত্ত্বরে ক্যাব চট্টগ্রাম ও যুব ক্যাব চট্টগ্রামের আয়োজনে এ মানববন্ধনে বিভিন্ন বক্তারা উপরোক্ত দাবি জানান।
ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটি ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত মানববন্ধনে যুব ক্যাব চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী রাইসুল ইসলাম ও ক্যাব বিভাগীয় সংগঠক রাসেল উদ্দীনের সঞ্চালানায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন পলিসি ইনফ্লুয়েন্স গ্রুপ চট্টগ্রামের সভাপতি কলামিস্ট মুসা খান, ক্যাব চট্টগ্রাম মহাগর সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সাধারন সম্পাদক শাহাদত হোসেন, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, সবুজের যাত্রার নির্বাহী পরিচালক সায়েরা বেগম, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মোঃ জানে আলম, ক্যাব পশ্চিম ষোল শহর ওয়ার্ড সভাপতি এবিএম হুমায়ুন কবির, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান, যুব ক্যাব সদস্য সিদরাতুল মুনতাহা, করিমুল ইসলাম, কয়েছ হক, মোঃ সাইমন ইসলাম, সাংবাদিক মুজিব উল্লাহ, মনির আহমদ ফাউন্ডেশনের মনির আহমদ ফাউন্ডেশনের একিউএম মোসলেহ উদ্দীন প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার বিদ্যুত ও জ্বালানী খাতে শৃংখলা বিধান, নানা অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিলসহ নানা উদ্যোগ নিলেও বিগত সরকারের আমলে জারিকৃত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন’ নামে দায়মুক্তির আইনের মাধ্যমে গত দেড় দশকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুণ্ঠন সংঘটিত হয়েছে তা বাতিল করে নাই। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়াই একতরফা চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। যার কারণে প্রতিবছর বিদ্যুত ও জ্বালানী খাতে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। শিল্প ও কলকারখানায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। যা মরার ওপর খারার ঘা হিসাবে আর্বিভুত হয়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সাধারণ ভোক্তার ওপর।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা চারগুণ বাড়লেও ব্যয় ১১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদন না করেও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ভাড়াভিত্তিক অর্থ প্রদান, এলএনজি আমদানিতে অতিমূল্যায়ন এবং অস্বচ্ছ বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে একটি শক্তিশালী জ্বালানি সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়েছে। এসব অপরাধ রাষ্ট্রীয় নীতির আড়ালে সংঘটিত হওয়ায় বিচার থেকে দায়ীদের রক্ষা করা হয়েছে।
মানববন্ধনে অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দায়মুক্তি আইনের আওতায় সম্পাদিত সব চুক্তি বাতিল, জ্বালানি অপরাধীদের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ, দোষীদের বিচার নিশ্চিতকরণ এবং ভবিষ্যতে জনস্বার্থভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক জ্বালানি নীতি প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।
বক্তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, ২০২৪- ২৫ অর্থবছরে বিদ্যুত খাতে ভর্তুকি ৪০ হাজার কোটি টাকা এবং গ্যাস খাতে প্রস্তাবিত ভর্তুকি ৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এই ভর্তুকির সুবিধায় সাধারণ ভোক্তা নয়—বরং অলিগার্ক ও স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী লাভবান হচ্ছে। বাংলাদেশের জ্বালানি খাত আজ ভয়াবহ দুর্নীতি, অদক্ষতা ও একচেটিয়াত্বে নিমজ্জিত। জনগণ তাদের সাংবিধানিক জ্বালানি অধিকার থেকে বঞ্চিত।








