আজঃ বুধবার ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

ওসমান হাদীকে হত্যা ও সংবাদমাধ্যমে হামলার প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ

রেজাউল ইসলাম মাসুদ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

শরীফ ওসমান হাদি হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচার এবং সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের উপর সন্ত্রাসী হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে পৌর শহরের চৌরাস্তা এলাকায় ঠাকুরগাঁও নাগরিকবৃন্দ এর ব্যানারে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময়ে বক্তব্য রাখেন জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান হক রিজু, সমাজকর্মী মাহবুব আলম রুবেল, লেখক ও কলামিস্ট মাসুদ আহমেদ সূবর্ণ, সাংবাদিক মজিবর রহমান খান, ফজলে ইমাম বুলবুল, জয় মহন্ত অলক, তানভীর হাসান তানু, সোহেল রানা, ছাত্র প্রতিনিধি যাযেদিসহ অন্যান্যরা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী তারেক রহমান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করেছে। সে যুদ্ধের কনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা শিশু তারেক রহমান। বাবা তৎকালীন সেনা ব্যারেক থেকে দেশের প্রতি অঘাড় প্রেমে “বিদ্রোহ” ঘোষণার মাধ্যমের স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে মেজর জিয়াউর রহমান যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিে যাদ্ধা মেজর জিয়ার স্বপরিবার কারাবন্দী ছিল। সে হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামের শিশু বন্দী তারেক রহমানকে নিয়েই আমার অভিজ্ঞতায় ও দর্শনে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।

তারেক রহমান এর সাথে আমার প্রথম স্বাক্ষাত ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরবর্তীতে চট্টগ্রামে এনেসল ম্যানশন মাঠে। বর্তমান কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী, মেয়র ও রাষ্ট্রদূত মীর মোঃ নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ইফতার মাহফিলের আলোচনা সভায়। আমি সে সময় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর রাজনীতি শেষ করে হাটহাজারী থানা জাসাসের সভাপতির দায়িত্বে এবং হাটহাজারী থানা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সাংগঠনিক সচিব এর দায়িত্ব পালন করছিলাম। ইফতার মাহফিলে আজকের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আলোচনা সভায় ১৭ মিনিট অত্যন্ত বিনয়ী বক্তব্য রেখেছেন যা অনেকাংশে আবেগঘন ছিল। দোয়া ও মুনাজাত শেষে মাগরিবের আযান হল। আমি খুব নিকটেই ছিলাম। আগত প্রচুর নেতাকর্মীরা বসে-দাঁড়িয়ে আছেন। আমি লক্ষ্য করলাম তারেক রহমান ইফতার রত অবস্থায় নিজে ২টি খেজুর ও পানি পান করেই আগত নেতাকর্মীদের ইফতারের খবর নিতে নিজ আসন ছেড়ে সকলের মাঝে ঢুকে পড়ে।

উনার পাশে নেতৃবৃন্দ বিষয়টা প্রথমে কেউ খেয়ালই করলেন না। “ভোরের সূর্য উদয় হলে বুঝা যায় দিন কেমন যাবে” এ কথাটিই আসলেই যথার্থ। এটাই দেশপ্রেমিক ও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি একজন আদর্শ নেতার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। ১৯৯৬-২০০১ সালের বিএনপির রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো সাংগঠনিক কর্মকান্ড তিনি সুচিন্তিতভাবে রপ্ত করেছেন। তাই তো সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ২০০১ সালের বিএনপির ভূমিধস বিজয় কেউ ঠেকাতে পারে নি। মূলত: এ ভূমিধস বিজয়ই আজকের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র পর্যায়ক্রমে শুরু হতে থাকে। এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের দলের মধ্যেও অন্য দলের ও দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র তৈরী করে ফেলেছেন। যার ফলে ১/১১ সৃষ্টি হয়েছে। ২০০৭-২০০৮ সালের এ অবৈধ সরকারের রোষানলে শহীদ জিয়াউর রহমান এর পরিবারকে শেষ করার মিশন শুরু হয়েছিল।

যার জন্য আমাদের দলের চেয়ারপার্সন জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করা হয়। বাদ পড়েনি রাজনীতির সাথে সক্রিয় না থাকা আরাফাত রহমান কোকো পর্যন্তও। তৎকালীন ১/১১ সরকারের আমলে সবচেয়ে নির্যাতনের স্বীকার তারেক রহমান। যে নির্যাতন করা হয়েছে তা আজীবনের জন্য পঙ্গুঁ করে দিয়েছিলেন। “রাখে আল্লাহ মারে কে”- আমাদের রব বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক জনগণের জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত “ দেশের কল্যাণে ১৯ দফা কর্মসূচী এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ এর কাজ আরো যুগ-উপযোগী করার লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকল গণতন্ত্রকামী দল, দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের পরামর্শের ভিত্তিতে “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য ২০২৩ সালেই বিএনপি’র পক্ষে ঘোষণা করেছেন।

যা একটি স্বাধীন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, কৃষি-শিক্ষা বিপ্লব, স্বাস্থ্যসেবা ও শিল্প উন্নয়ন সহ বিভিন্ন বিষয়ের উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে। এবার আসা যাক ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিপ্লব পর্যন্ত। তারেক রহমানের প্রতি পতিত সরকারের আক্রমণমূলক কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। ১/১১ সংস্কারের সাজানো সকল মামলায় সাজা দিয়ে তারেক রহমান কে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে।

দেশের সকল গণমাধ্যমে তাঁর সংবাদ প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। পতিত সরকার ও বিদেশী অপশক্তি গুলো ধরে নিয়েছিল বিএনপিকে শেষ করলেই তারাই দেশের মালিক এবং তারাই ক্ষমতাই। বাংলাদেশে জনগণ ঐতিহাসিক ভাবেই গণতন্ত্রপ্রিয় এবং প্রকৃত স্বাধীনতাই বিশ্বাসী। তাই সকল অশুভ শক্তিকে, বুলেটকে ভয় না করেই ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সর্বস্তরের জনগণ ঐতিহাসিক অধ্যায়ে সূচিত হয়েছে “জুলাই বিপ্লব”। সূদুঢ় প্রবাস থেকে বাংলাদেশের আন্দোলন রত জনগণকে তারেক রহমান রাত দিন সাহস যুগিয়েছেন। দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্থান ভিত্তিক আন্দোলনের পরিকল্পনা। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্বশীলদের সজাগ দৃষ্টি রেখে আন্দোলন তীব্র করার এবং আন্দোলনরত অপরাপর বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীসহ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার নির্দেশনাই জুলাই-বিপ্লব সফল হয়েছিল।

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী দশদিনেই দেশের জনগণের জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যে বার্তা “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক কঠিন নির্বাচন হবে” -এ উক্তিটিই তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয়কে অনেকাংশে সামনে নিয়ে আসছে। দলের নেতাকর্মীদেরকে সর্তক করেছেন ও সাহসিকতার সাথে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৫ বছরেও জনগণ এখনও হতাশায় নিমজ্জিত। অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে আসবেন ঘোষণা দেয়ার পূর্ব মুহুর্তেই দেশে ভয়-ভীতি সৃষ্টির লক্ষ্যে জুলাই যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের সমন্বয়ক ওসমান হাদিকে হামলা করলো এবং পরে শহীদ হল। এটিও ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষ থেকে একটি বার্তা।
এ বার্তাটাই আমাদের দলের এবং অপরাপর সকল গণতান্ত্রিক দলের কর্মকান্ডে প্রতিফলন ঘটাতে হবে এবং সকলকেই সর্তক থাকতে হবে। ১৭ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আগামী দিনের বিএনপির কর্ণধার শহীদ জিয়া ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য সন্তান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সমগ্র দেশের জন্য আনন্দের এবং এই আনন্দ দেশপ্রেমিক জনগণের। তারেক রহমান শুধু দলের সম্পদ নয়, তারেক রহমান সমগ্র বাংলাদেশের সম্পদে পরিণত হয়েছে। যার জন্যই ষড়যন্ত্র আরো তীব্র হচ্ছে।

বিএনপি ১৯৭১ মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের সিপাহী বিপ্লব, ১৯৯০ সালের গণ আন্দোলন এবং ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে বাংলাদেশে রাজনীতি করেছে, করছে এবং করবে। শহীদ জিয়ার বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে আপোষহীন নেত্রী হিসেবে দেশের প্রথম জনপ্রিয় মহিলা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বপালন এই ধারাবাহিকতায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আধুনিক রাষ্ট্র বির্নিমাণে আগামী দিনে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক, বাক-স্বাধীনতা, গণ-মাধ্যমের স্বাধীনতা, বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি, সুনির্দিষ্ট প্রকৃত শিক্ষানীতি, উন্নত চিকিৎসা সেবা। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত, সকল ধর্মের বর্ণের সহ অবস্থান নিশ্চিত সহ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী তারেক রহমান। এটাই স্বাধীনতার ৫৫ বছরে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর আশা ও প্রত্যাশ্যা।

জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে: মেয়র ডা. শাহাদাত।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষকে পুনর্বাসনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা) এবং ইংরেজি পত্রিকা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের যৌথ উদ্যোগে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত পরিবার ও শিশুরা’ (‘Climate Action Induced families and children engaged in hazardous jobs’) শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকটির আয়োজন করা হয়।

সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে চট্টগ্রামে আসছেন। তাদের শিশুরা আসছেন। নগরীর বিভিন্ন ফুটপাতে দেখছি ওইসব পরিবারদের। এই শিশু একসময় অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই সমস্যার মূলে যেতে হবে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উন্নত দেশগুলোতে থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাচ্ছে না কেন— এর দিকে নজর দিতে হবে। হয়তো আমরা সঠিকভাবে অ্যাডভোকেসি করতে পারছি না, আর যদি অ্যাডভোকেসি করে অর্থায়ণ আনা হয়, তাহলে সেটি নিয়ে দুর্নীতি হচ্ছে।

মেয়র বলেন, “চট্টগ্রামে বাস্তুচ্যূত হয়ে আসা মানুষদের মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ আছেন। যেখানে তারা দুর্যোগের শিকার হয়েছেন, সেখানেই তাদের পুনর্বাসন করতে হবে। তাহলে শহরের লোড কমবে। চট্টগ্রাম নগরীতে ৬০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। আরো ১০ লাখ মানুষের লোড নেওয়া ক্ষমতা এই শহরের নেই।”

নগর সরকার বাস্তবায়ন ছাড়া পরিকল্পিত নগরায়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নগরীর দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো একেকটি একেক মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তারা সিটি করপোরেশনের কথা শুনতে বাধ্য নয়। সমন্বিত কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা ছাড়া পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এজন্য আমি দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিন থেকে নগর সরকারের কথা বলে আসছি। লন্ডন, টরেন্টোসহ বিশ্বের অনেক শহর নগর সরকার ব্যবস্থা আছে।
ইপসার প্রধান নির্বাহী প্রধান নির্বাহী মো. আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সামছুদ্দিন ইলিয়াসের সঞ্চালনায় গোল টেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মো. শামসুদ্দোহা, চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমএম নুরুল আবসার,

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আল-আমীন, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জুলিয়া পারভীন, জেলা শিশু কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ওমর কায়সার, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, ব্র্যাক চট্টগ্রামের ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম, উন্নয়ন সংস্থা ঘাসফুলের প্রতিনিধি সাদিয়া রহমান, এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের প্রতিনিধি নোমান উল্লাহ বাহার, ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রতিনিধি রিপা চাকমা, ক্লাইমেট অ্যাকটিভিস্ট খাদিজা আক্তার মাহিমা প্রমুখ।

গোল টেবিল বৈঠক কি-নোট উপস্থাপন করেন ইপসার হেড অব অ্যাডভোকেসি মুহাম্মদ আলী শাহীন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শীর্ষ ১০টি দেশের একটি। বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনের কারণে প্রতিবছর প্রায় ৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এসব পরিবার শহরমুখী হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অনানুষ্ঠানিক কাজে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে, যেখানে শিশু শ্রম ভয়াবহভাবে বাড়ছে। জলবায়ু-বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী ঘরবাড়ি, জমি ও ফসল হারাচ্ছে; কৃষিভিত্তিক আয় ভেঙে পড়ছে; সামাজিক বন্ধন নষ্ট হচ্ছে এবং মানসিক চাপ বাড়ছে। বাস্তুচ্যুত পরিবারের ৭৫ শতাংশের আয় অভিবাসনের পর ৫০ শতাংশের বেশি কমে গেছে।

চট্টগ্রামে ৬০ শতাংশের বেশি জলবায়ু অভিবাসী অনানুষ্ঠানিক বস্তিতে বসবাস করছে, যেখানে মৌলিক সেবার ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশে মোট শিশু (৫–১৭ বছর) প্রায় ৪ কোটি। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ লাখ শিশু শ্রমে নিয়োজিত এবং ১০–১২ লাখ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত। গত এক দশকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রমিক বেড়েছে প্রায় ২ লাখ। উপকূলীয় বস্তিতে ১০–১৭ বছর বয়সী ১৮ শতাংশ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত। ড্রাই ফিশ সেক্টরে মোট শ্রমিকের প্রায় ২০ শতাংশ শিশু (এর ৭৪ শতাংশ মেয়ে) এবং মেটাল ফ্যাক্টরি সেক্টরে অধিকাংশ শিশু শ্রমিক ছেলে (প্রায় ৮০ শতাংশ)। এসব শিশুর ৭৫ শতাংশ স্কুলের বাইরে, যা জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি ও জীবিকা হারানোর সরাসরি পরিণতি এবং দেশের ভবিষ্যতের জন্য বড় হুমকি।

জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মো. শামসুদ্দোহা বলেন, ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান অ্যাকশন এবং পরবর্তীতে ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যানে সেকেন্ডারি ও টার্সিয়ারি লেভেল যুক্ত ছিল না। ওই প্ল্যানে নারী, শিশু, ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকে আমলে নেওয়া হয়নি। পরিকল্পনাগুলো মানুষকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয়নি। সবসময় অবকাঠামো, প্রকিউরমেন্ট, উন্নয়ন ছিল পরিকল্পনাগুলো কেন্দ্রবিন্দুতে। এগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে মানুষ রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের শিশু যখন তার বিকাশ নষ্ট করছেন, তখন সেটি ইন্টার জেনারেশন লসে পরিণত হয়। পরবর্তী প্রজন্মের বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের এক্সটেন্ডেড ইমপ্যাক্ট অ্যাড্রেস করতে হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য স্যাটেলাইট সিটি করতে হবে। যেন শহরের আশপাশের উপশহর থেকে এসে কাজ করে আবার ফিরে যেতে পারে। তাহলে শহরের ওপর চাপ কমবে। শিশু কেন্দ্রিীয় ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন প্ল্যান হাতে নিতে হবে। শুধু জিডিপি বা অর্থনৈতিক উন্নয়নকে নয় মানুষের জীবনমানকে প্রাধান্য দিতে হবে।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মাহবুবুল হাসান বলেন, আমরা সারাদেশে হিসেব না করে শুধু চট্টগ্রামকে নিয়ে প্ল্যান করতে চাই। চট্টগ্রামে অনেকগুলো শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলো কোটি কোটি টাকা সিএসআর ফান্ড রয়েছে। যদি এই ফান্ডগুলোকে নিয়ে যতোপযুক্ত ব্যবহার করতে পারি, তাহলে এই সমস্যা অনেক দূর কমে আসবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো, আল-আমীন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের পরিবর্তনের ফলে ড্রপ আউট শিশুদের আবারও ফিরিয়ে আনত হবে। ছেলে মেয়েদের সচেতনতা তৈরি করতে হবে। আর ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে শিশু বের করতে আনতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ