আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ট্রেনের রাস্তায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিশাল খামার বাড়ি

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:

ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকা ফেনী বিলোনিয়া রেলপথের ফেনী অংশের বেশিরভাগ জায়গা এখন অবৈধ দখলে। জেলার ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নে রেলপথটির প্রায় ২০০ মিটার দখল করে৷ বিশাল খামারবাড়ি করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার। তার যুক্তি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি খালি জায়গায় আবাদ করার জন্য বলেছেন, তাই তিনি রেললাইনের জায়গায় আবাদ করেছেন।

 

জানা যায়, আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি ১৯২৭ সালে ২৫টি গ্রামের ২৭৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে ফেনী থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ স্থাপন করে। ১৯২৯ সালে ফেনী থেকে বিলোনিয়া হয়ে আসাম পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ফেনী থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত একটি ট্রেন চলাচল করত। পরবর্তী সময় যাত্রী স্বল্পতার কারণে ১৯৯৭ সালের ১৭ আগস্ট ওই রুটে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে রেলপথটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
সরেজমিন দেখা যায়, রেললাইনের লোহার পাত, স্লীপার খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। মুন্সীরহাট, মোহাম্মদপুর, গাইনবাড়ি, বন্দুয়াসহ বহু জায়গায় রেললাইনের চিহ্নও অবশিষ্ট নেই। রেললাইন এখন পরিণত হয়েছে সড়কপথে। দখল হয়ে গেছে রেলওয়ের শত শত কোটি টাকার জমি। দখল করা জমিতে তৈরি হয়েছে দোকান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির এবং বিভিন্ন ক্লাব। প্রায় দুবছর আগে আনন্দপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামে রেললাইনের ওপর বালু সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে তিনটি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার। দুটি ঘরে দুই জাতের শতাধিক গরু ও অন্য ঘরে একটি ঘোড়াসহ গরুর খাবার রাখা হয়েছে। এ ছাড়া রেললাইনের দুই পাশে রয়েছে বিশাল মৎস্য প্রকল্প। রয়েছে কবুতর, টার্কি-মুরগিসহ দেশি হাঁস-মুরগির খামার। চেয়ারম্যানের এই খামারবাড়ির জন্য বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ২০০ মিটার রেললাইন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি খালি জায়গায় আবাদ করার জন্য বলেছেন, এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমি রেললাইনের জায়গায় আবাদ করেছি। এটা ছাড়াও রেললাইনের পাশে আমার আরও জায়গা রয়েছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ যদি চায় তাহলে আমি ছেড়ে দিতে বাধ্য থাকব। রেললাইনের জায়গা শুধু আমি নয়, ফেনী থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত অনেক জায়গায় দখল হয়ে গেছে। আমি অল্প কিছু করেছি, তাতে এমন সমস্যা কী?
ফেনী রেলওয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। রেলওয়ের সার্ভেয়ার বিভাগ এগুলো দেখাশোনা করে। তবে কেউ অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ